সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলে পানি সংকট 

সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলে পানি সংকট 

মোঃ আলাউদ্দীন।।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলে পানি সংকট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।সীতাকুন্ড উপজেলা  জাহাজভাঙ্গা ও ইস্পাত শিল্পের জন্য খ্যাত। বাংলাদেশের অন্যতম একটি শিল্পাঞ্চল হিসেবে এটি পরিচিত। দেশের অন্যতম এই শিল্পাঞ্চলে ছোট-বড় তিন শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ লাখ-কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলে সম্প্রতি দেখা দিয়েছে পানি সংকট।

পানি সংকটের কারন হিসাবে দেখা হচ্ছে  শিল্প কলখারকানায় গভির নলকুপ স্হাপনের  জন্য সীতাকুণ্ডে বসবাসকারী মানুষের অগভির নলকুপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। দায়ী করা হচ্ছে এখানকার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে। কেননা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করছে ভূগর্ভস্থ পানি। যে কারণে সীতাকুন্ডে পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে পানির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন। পাশাপাশি রয়েছে বিশুদ্ধ পানিরও সংকট। এ অবস্থায় সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলের পানি সংকটের সমাধানের দীর্ঘদিনের দাবি ব্যবসায়ীদের। এ সংকট সমাধানে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম চিটাগাং চেম্বারের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে গেছেন।

জানা যায়, সীতাকুন্ডে ইস্পাত কারখানা প্রায় ৫০টি, সিমেন্ট কারখানা চারটি, ঢেউটিন তৈরির কারখানা তিনটি, তৈরি পোশাক কারখানা দুটি, কাচ তৈরির কারখানা একটি, পাটকল ৯টি ও চারটি সুতার কারখানা আছে। তা ছাড়া শতাধিক জাহাজভাঙা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে এখানে বিএসআরএম, কেএসআরএম, জিপিএইচ, ইস্পাত,  এসএআরএম, পিএইচপি, আবুল খায়ের গ্রুপ, কেডিএস, টিকে গ্রুপ, এসএএসএম, মোস্তফা গ্রুপ, মোস্তফা হাকিম, গোল্ডেন ইস্পাত,মাষ্টার স্টিল, ইউনিটেক্স, বসুন্ধরাসহ আরও বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে সীতাকুন্ডে। এ অঞ্চলের আছে ইস্পাত, সিমেন্ট, টেক্সটাইলসহ উৎপাদন খাতের বড়-ছোট মিলে ৩০০ অধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। আছে এক লাখের অধিক কর্মসংস্থান। এ অবস্থায় পানি সংকট সমাধান না হলে শিল্প গ্রুপগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হবে। এর প্রভাব পড়তে অর্থনীতিতে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলে পানি সংকট রয়েছে। এর সঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার একটি প্রজেক্টের সমন্বয় করা হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের মত হলো শিল্প উৎপাদনে খাল-বিল ও ভ‚গর্ভস্থ পানি ব্যবহার না করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার রিজার্ভার তৈরি করে ব্যবহার করলে সীতাকুন্ডে পানি সংকট দূর হতে পারে।

চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুন্ড আসনের সাংসদ দিদারুল আলম বলেন, ‘সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলের ব্যবহার ছাড়াও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। পানি সংকট সমাধানে আমরা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছি। এ প্রজেক্টের কাজ মিরসরাইয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এই প্রকল্পে চট্টগ্রাম ওয়াসাও সংযুক্ত থাকবে।আর ওয়াসার লাইন সীতাকুন্ডের মিল কারখানা ও বাসাবাড়িতে ও সংযোক্ত হবে ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশিষ্ট শিল্পপতি বিএসবিএ অন্যতম নীতি নির্ধারক মাষ্টার আবুল কাশেম  বলেন বাংলাদেশ অন্যতম শিল্পএলাকা  সীতাকুণ্ড বড় বড় শিল্প কারখানা গুলো গভির নলকুব বসানোর কারনে এলাকার বাসিন্দারা তিব্র পানি সংকটে পরেছে,এখানে সীতাকুণ্ডের অধিবাসী প্রায় পাঁচ লাখ হলে ও  শত শত শিল্প প্রতিষ্ঠানএখানে চাকুরী ও ব্যবসার কারনে আরো ৫/৭ লাখ মানুষ সীতাকুণ্ডে বসবাস করে অনতিবিলম্বে ওয়াসার লাইন সীতাকুণ্ডের সর্বশেষ অংশ পর্যন্ত  স্হাপন না করলে আগামী শুষ্ক মৌসুমে সীতাকুণ্ড পানির সংকট আরো তিব্র আকার ধারন করবে।

নাগরিক পরিষদ সীতাকুণ্ডের সদস্য সচিব লায়ন মো. গিয়াসউদ্দিন বলেন সীতাকুণ্ডে তিনশতাধিক  মিল কারখানা প্রচুর পানির প্রয়োজন হয় মিল কারখানা কতৃপক্ষ  পানির জন্য বিশাল বিশাল ডীপ টিউবওয়েল বসিয়ে ভূগর্ভে পানি উত্তলন করাই পানির স্তর নিছে নেমে যাওয়ার কারনে এলাকায় সাধারন নলকুবে পানি পাওয়া যাচেছ না, ,এই পানি সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে  ইতিমধ্যে ওয়াসার সংযোগ লাইন ভাটিয়ারী বিএমএ পর্যন্ত বির্দমান আছে সে লাইনকে পুরো সীতাকুন্ড পর্যন্ত বর্ধত করতে হবে,এছাড়া ও মিল-কারখানা গুলো পাহাড় থেকে নেমে আসা ছড়া গুলোর মূখে বাঁধ নির্মাণ করে লেক,জলাসয় বা  রিজার্ভার সৃষ্টি, করে সারা বছর শিল্প কারখানায় ব্যবহার করতে হবে। সীতাকুন্ড কে মরুভূমিতে পরিগনিত করতে না চাহিলে এখনি পানি সংকটের সমাধান করতে হবে।