রাহুলের স্টুডিওতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট গান শুনলেন, গান গাইলেন

রাহুলের স্টুডিওতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট গান শুনলেন, গান গাইলেন
রাহুলের স্টুডিওতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট গান শুনলেন, গান গাইলেন

বিনোদন ডেস্ক ।।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দুদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন । রাষ্ট্রীয় এ সফরে তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এর ফাঁকে তিনি গেলেন ঢাকার ধানমন্ডিতে সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও বাদ্যযন্ত্রী রাহুল আনন্দের বাসায়। প্রাণ ও প্রকৃতির শিল্পী ‘জলের গান’ এর স্রষ্টা রাহুল আনন্দ তাকে শুনিয়েছেন গান। পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন তার হাতে তৈরি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে। রাহুলের স্টুডিওতে বসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট গান শুনেছেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রসঙ্গে জেনেছেন। সেই সঙ্গে উপহার দিয়েছেন ও পেয়েছেন।

রবিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে রাহুল আনন্দের বাসায় হাজির হন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট বাংলার লোক-ঐতিহ্যের আবহে ডুবে ছিলেন। তবে তার থাকার কথা ছিলো মাত্র ৪০ মিনিট। কিন্তু গানে গল্পে এতটাই মজে যান যে কখন ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট হয়ে গেছে নিজেও টের পাননি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের জন্য বাসার ফটকের সামনের অংশ ফুল দিয়ে সাজিয়েছেন রাহুল আনন্দ ও তার স্ত্রী শর্মিলা শুক্লা। এতে ছিল গোলাপ ও গাদা। ফুলের সাজসজ্জা দেখে বিমোহিত হয়েছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এছাড়া বাড়তি কোনো সাজ সজ্জা ছিলো না বাড়িজুড়ে।

বাড়ির পথ মাড়িয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সোজা চলে যান রাহুন আনন্দর স্টুডিওতে। যেখানে সাজানো রয়েছে নানা ধরণের বাদ্যযন্ত্র। সেখানে বসেই রাহুন গান শোনান প্রেডিসেন্টকে। প্রথমে ফকির লালন সাঁইয়ের ‘আর কি বসবো এমন সাধুর সাধবাজারে/না জানি কোন সময় কোন দশা ঘটে আমারে’ গেয়ে শোনান রাহুল আনন্দ। এরপর তিনি পরিবেশন করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলায় গান গাই’।

রাহুল আনন্দ প্রেসিডেন্টকে একতারা উপহার দেন। প্রেসিডেন্ট তাকে উপহার দেন কলম। প্রেসিডেন্ট উপহার পাওয়া একতারা দিয়ে মরমী শিল্পী আব্দুল আলীমের ‘নাইয়ারে নায়ের বাদাম তুইলা’ গানটি গাওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে গাইতে সহযোগিতা করেন রাহুল। তারপর দুই জন একসঙ্গে একতারা বাজাতে থাকেন। এসময় রাহুল বলেন, ‘এই পরিবেশনাকে বলতে পারেন বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের দুই সংগীতশিল্পীর সম্মিলন! প্রেসিডেন্ট হলেও আপনি দারুণ সংগীতশিল্পী। আশা করি, এই উপহার (একতারা) আপনার কাছে বাংলাদেশকে মনে করিয়ে দেবে। এটি প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা। এটাই আমার স্টাইল।’

একফাঁকে রাহুল আনন্দর ছেলে তোতার সঙ্গে সময় কাটান প্রেসিডেন্ট। তাকে অটোগ্রাফ দেন এবং ছবি তোলেন।

উল্লেখ্য, যেকোনো দেশে সফরকালে স্থানীয় সংস্কৃতি উপভোগ করেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের তত্ত্বাবধানে রাহুল আনন্দের স্টুডিও পরিদর্শন করলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ঢাকার পরিচালক ফ্রাঁসোয়া গ্রোজ্যঁ। তবে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নিজেও একজন শিল্পী। পিয়ানো বাজানোতে তার দক্ষতা রয়েছে।

১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা সফরে এসেছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। আজ (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ধানমন্ডি লেকে হেঁটেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজই তার ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে বলে জানা যায়।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;