সীতাকুণ্ডে প্রতিবন্ধী ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র

সীতাকুণ্ডে প্রতিবন্ধী ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র
সীতাকুণ্ডে প্রতিবন্ধী ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র

বিশেষ প্রতিবেদক।।

সীতাকুণ্ডে প্রতিবন্ধী ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন প্রতারকচক্র। মােবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আসা প্রতিবন্ধীদের ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে এই প্রতারক চক্রটি । গত কয়েকদিনে চক্রটি কৌশলে অসংখ্য ভাতাভােগীর টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে সমাজসেবা অফিসারের কাছে অভিযােগ দায়ের করেছেন ৭ জন। ফলে প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সমাজসেবী অফিসার।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডে প্রতিবন্ধী ভাতা ভােগীর সংখ্যা ৩৬২৫ জন। প্রতিমাসে মােবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জনপ্রতি ২৫৫০ টাকা ভাতা পান এসব ভাতা ভােগী। প্রতি মাসের মতাে এ মাসেও এসব ভাতা ভােগীদের ভাতা আসে গত সােমবার। কিন্তু এ সময় থেকেই সমস্যা সৃষ্টি হয়।

ভুক্তভােগীরা জানান, এবার ভাতা আসার পর থেকে প্রতিবন্ধীদের কাছে মােবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির নাম করে ফোন করতে থাকে একটি দুষ্ট চক্র। সরল বিশ্বাসে প্রতারক চক্রের নির্দেশনা মেনে বিভিন্ন তথ্য দেবার সময় অজ্ঞতাবশত নিজেদের পাসওয়ার্ড দিয়ে দেন প্রতিবন্ধীরা। আর এই সুযােগে তার একাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। এভাবে গত সােমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সময়ে অসংখ্য ভাতা ভােগীর টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

এসব ভুক্তভােগীদের একজন কুমিরার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী রাম দাস  জানান, গত সােমবার তার একাউন্টে ভাতার ২৫৫০ টাকা আসে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মােবাইল ব্যাংকিংয়ের লােক পরিচয়ে একজন তাকে ফোন করে বলেন- যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য ভাতার টাকাগুলাে তােলা যাবে না। কিছু নিয়ম ফলাে করলে টাকাটা তােলা যাবে। এই কথা বলে তিনি ফোনে কিছু নিয়ম ফলাে করতে বলে সরল বিশ্বাসে রমা দাস সেসব পালন করার পরই দেখেন একাউন্ট থেকে তার টাকাগুলাে হাওয়া হয়ে গেছে। একইভাবে আরাে অনেক প্রতিবন্ধী প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

বড় কুমিরা এলাকার বাসিন্দা সংবাদকর্মী মাে. জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার এলাকার প্রতিবন্ধী ভাতা ভােগীদের ৮০ শতাংশের ভাতার টাকা একই কায়দায় হাতিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার লুৎফুন্নেছা বেগম বলেন, প্রতারক চক্র মােবাইল কোম্পানির লােক পরিচয় দিয়ে কৌশলে ভাতার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ঠিক কত প্রতিবন্ধীর ভাতা হাতিয়ে নিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেননি বলে জানান তিনি ।

এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে অনেকে অভিযােগ করলেও ৭ জন ভাতা ভােগী সুনির্দিষ্ট নম্বরসহ অভিযােগ দায়ের করায় আমি সেসব নম্বর উল্লেখ করে ব্যবস্থা নেবার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযােগ দিয়েছি।

এছাড়া আমরা সবাইকে সচেতন করার জন্য সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে প্রতারকদের বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। এছাড়া মাইকিং করার কথাও আমরা ভাবছি।

লিখিত অভিযােগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তােফায়েল আহমেদ বলেন, ইতােমধ্যে প্রতারক চক্রটি ধরতে কাজ শুরু করেছেন। নােয়াখালী, মাগুরা, গাইবান্ধাসহ বিভিন্নস্থানে এ সিন্ডিকেটগুলোর অবস্থান রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এরা একটি নম্বর দিয়ে টাকা নেয়নি। মােবাইল নম্বর, আইপি নম্বর থেকে ফোন করে প্রতারণা করেছে। তিনি বিষয়টি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জানিয়েছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। 

খালেদ / পোস্টকার্ড;