সীতাকুণ্ডে খালের মধ্যে ভবন নির্মাণ, নির্বিকার প্রশাসন 

সীতাকুণ্ডে খালের মধ্যে ভবন নির্মাণ, নির্বিকার প্রশাসন 
সীতাকুণ্ডে খালের মধ্যে ভবন নির্মাণ, নির্বিকার প্রশাসন 

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।

 

প্রতিনিয়ত দেশে পুকুর-জলাশয় ভরাট হচ্ছে। যদিও পুকুর, ডোবা, খাল-বিল-নদী, কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক জলাধার ভরাট করার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে কিন্তু সেটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একে একে ভরাট করে হচ্ছে পুকুর-জলাশয় ইত্যাদী। অবশ্য সীতাকুণ্ডে পুকুর ভরাট নতুন না । আস্তে আস্তে সীতাকুণ্ডের প্রায় পুকুর প্রভাশালীরা গিলে খাচ্ছে। 

ঠিক তেমনি সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকায় ৫শ’ বছরের প্রাচীন প্রবাহমান ‘মদনহাট খাল’ প্রকাশ্যে দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে ভবন।

স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ইতিমধ্যেই খালের মধ্যে ভবনের বেশিরভাগ অংশের নির্মাণ কাজও শেষ করে ফেলেছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা আর শুকনো মৌসুমে পানি সংকটে এখানে চাষাবাদ ব্যাহতসহ নানান প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে এলাকাবাসীর আশংকা। কিন্তু এ বিষয়ে একেবারেই নির্বিকার সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।

সরেজমিনে মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মদনহাট খালের পাশে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, খালের মধ্যেই একটি অংশ দখল করে সেখানে একটি ভবন নির্মাণ চলছে বেশ দ্রুতগতিতে। একসাথে ভবন নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকজন রাজমিস্ত্রি । পরিদর্শনকালে মদনহাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই খালটি ৫শ’ বছরেরও পুরোনো। প্রতিবর্ষায় পাহাড়ি ঢলের বিশাল স্রোত এই মদনহাট খাল দিয়ে বয়ে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ে। আর সে কারণে এলাকার মানুষকে তেমন জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় না। আরএস ছিটভুক্ত খালটি এখন জবর দখল করে খালের মধ্যে ভবন নির্মাণ হচ্ছে প্রকাশ্যে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মুনীর আহমেদ বলেন, মদনহাট খালটি স্থানীয় মানুষের জন্য কত দরকারি তা বলে শেষ করা যাবে না। এটি সরকারি খাল। এই খাল দখলের কোন সুযোগই নেই। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনই পারে এসব বন্ধ করে খালটি দখলমুক্ত করতে।

এদিকে, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা খালটি সরকারি মালিকানাধীন বলে জানালেও খাল ভরাট করে ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, এখানে অনেক আগে থেকে স্ক্র্যাপ জাহাজের ফাইবারের তৈরি স্পীডবোর্ডগুলো রিপেয়ারিং করা হয়। এ ভবনে স্পিডবোর্ড রিপেয়ারিংয়ের কাজ করা হবে। বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে খালের পাশে এ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি আমাদের ব্যক্তিগত নিজস্ব সম্পত্তি। তাই আমরা কাজ করছি। 

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় বলেন, আমি বিষয়টি দেখার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদুল ইসলামকে দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি সরেজমিনে সেখানে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।