শিকারির ফাঁদে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের মায়াবী হরিণ

শিকারির ফাঁদে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের মায়াবী হরিণ
শিকারির ফাঁদে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের মায়াবী হরিণ

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।। 

শিকারির ফাঁদে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের মায়াবী হরিণ।কিছুতেই থামছে না যেন এ হরিণ শিকার। বন বিভাগের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ ও হরিণ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও দুষ্কৃতিকারীদের হাত থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে মায়াবী হরিণ। দিন দিন কমেছে হরিণের আনাগোনা। আগের মতো আর হরিণ চোখে পড়ছে না বলে জানান এলাকাবসী।

সীতাকুণ্ড সৈয়দপুর ইউনিয়নের উপকূল এলাকায় অত্যাধিক হারে এই মায়াবী হরিণ শিকার হচ্ছে । তাদের কবলে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে এই মায়াবী হরিণ । 

সৈয়দপুৱের পশ্চিম বাকখালী এলাকায় স্থানীয়রা জানান, এক সময় অসংখ্য হরিন দেখা যেতো। বন ছেড়ে তারা লোকালায়ে ঘুড়ে বেড়াতো। তবে এখন চোখে পড়েনা। ইউনিয়নের বগাচতুর, মহানগর, পশ্চিম বাকখালী, সৈয়দপুর, অন্তরখালিসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিনব কায়দায় নানা রকম ফাঁদ ক্ষেতে প্রতিনিয়ত চলছে হরিণ নিধন।

তাঁরা জানান, এলাকার কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র মিলে দল বেঁধে বেরিয়ে পড়ে হরিণ শিকারে। হরিণ শিকার অনেকটা পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছে তারা। একটি হরিণ সর্বোচ্চ নব্বই থেকে শত কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এক থেকে দের হার হাজার টাকা এই মাংস বিক্রয় করা হয় সীতাকুণ্ড বিভিন্ন জায়গায়। রথি-মহারথিদের খাবার টেবিলে পর্যন্ত পৌঁছে যায় এ মাংস।

সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সালাউদ্দীন জানান, হরিণ শিকারে দৃষ্কৃতিকারীরা বিশেষ এক ধরণের তার ব্যবহার করে থাকে, যা সিএনজির ব্রেকে ব্যবহৃত হয়। এই তার বা নাইলন সুতার ফাঁদ পেতে নিয়মিত শিকার করছে হরিণ। মাঝে মাঝে এই ফাদে পড়ে গরু- ছাগলও।

সীতাকুণ্ডের ম্যানগ্রোভ বন অধ্যুষিত দুই ইউনিয়নে প্রচুর কেওড়া গাছ। যেখানে হরিণের নিরাপদ অভায়রাণ্য হয়ে উঠেছিলো । তবে বর্তমানে তা নষ্ট হয়ে এখন হরিণ বিলুপ্ত হওয়ার পথে।

গত ১২ এপ্রিল সৈয়দপুৱ ইউনিয়নের পশ্চিম বাকখালী এলাকায় ৩ জনকে হরিন শিকারের সময় হাতে-নাতে ধরে বন- বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে এলাকাবসী। এই ঘটনায় উপজেলা বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দীন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষন ও নিরাপত্তা আইনের মামলা করেন। এই আইনে জেল খাটছেন চোরাই শিকারিরা। আটকৃত শিকারিরা হলেন স্থানীয় মৃত আবুল খায়েরের ছেলে বাঁচা মিয়া (২৮), মৃত আনিসুল হকের ছেলে মহরম আলী (৪০), মো: রফিকের ছেলে নয়ন মিয়া (২৫)। এ তবে এই চক্রের বেশ কিছু সক্রিয় সদস্য রয়েছে, যাদের এখনো সনাক্ত করা যায়নি। তাছাড়া বন্ধ হয়নি হরিণ শিকারও ।

সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নে বিশাল ম্যানগ্রোভ বনের তুলনায় বন বিভাগের লোকবল পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন বন বিভাগের কর্মচারীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন,  বিশাল এলাকায়  দিন -রাত পাহারা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে  স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে । অনেক সময়  দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঝুঁকির মুখে হয় । তবে দায়িত্ব পালনে আমাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। 

জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা কামাল হেসেন  বলেন, হরিণ শিকারের সাথে  জড়িত এলাকার চোরাই শিকারি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র। বিভিন্ন কৌশলে হরিণ শিকার করে তারা নীজ এলাকায় চলে য়ায়। হরিণ শিকার রোধে বন বিভাগ সবসময় তৎপর। কিছুদিন আগেও ৩ জন কে আটক করে  তাদের বিরুদ্ধে  আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;