সন্দ্বীপে সেচের পানির অভাবে পুড়ছে ফসল, সংকটের মুখে কৃষিকাজ

সন্দ্বীপে সেচের পানির অভাবে পুড়ছে ফসল, সংকটের মুখে কৃষিকাজ
সন্দ্বীপে সেচের পানির অভাবে পুড়ছে ফসল, সংকটের মুখে কৃষিকাজ

বিশেষ প্রতিবেদক  ।।

সন্দ্বীপের চারপাশে রয়েছে ফসলের বিস্তীর্ণ মাঠ। বিশেষ করে মগধরা, বাউরিয়া, গাছুয়া, মাইটভাঙ্গা, কালাপানিয়া, দীর্ঘাপাড় ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের ভিতরে ও বাইরে চাষাবাদ হয় বিশাল এলাকা জুড়ে। তবে সেচের অভাবে এসব জমিতে বছরের ছয়মাসই আশানুরূপ ফসল ফলাতে পারছেন না কৃষকেরা। কেবল বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিকে কাজে লাগিয়ে যতটুকু পারা যায় ধান চাষ করেন স্থানীয় কৃষকেরা। এরপর শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধা না থাকায় পানির অভাবে মৌসুমি সবজি–ফল চাষে ক্ষতির সম্মুখীন হন তারা। যেসব বীজ বপন করা হয় একটা সময় পানির অভাবে হয় চারা মরে যায়, নাহয় আশানুরূপ সাফল্য পাওয়া যায় না। ফলে তারা বিরাট আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন।

সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা এলাকার কৃষক হাসান মাসুম জানান, আমি নিজ জমি ও সাথে অন্যদের জমি বর্গা নিয়েছি চাষাবাদের জন্য। তবে সেচের অভাবে বছরের অর্ধেক সময় আশানুরূপ চাষাবাদ করতে পারি না। এতে করে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় আমাকে।

তিনি বলেন, প্রতি ১শ ৬০ শতকে বর্গা নেয়া জমিগুলোর জন্য দিতে হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এর সাথে রয়েছে শ্রমিকের উচ্চ পারিশ্রমিক। পর্যাপ্ত চাষাবাদ না হওয়ায় লাভ হওয়া তো দূরের কথা, আসল টাকাই উঠে আসে না অনেক সময়। প্রায় একই রকম কথা বলেন স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও। এছাড়া স্থানীয় কৃষি অফিসের বিরুদ্ধে রয়েছে বীজ, প্রণোদনা ও কৃষি অফিসের কর্তাদের সাক্ষাৎ না পাওয়াসহ নানান অভিযোগ।

সন্দ্বীপ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. মেজবাহুল করীম কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আসলে সন্দ্বীপে পর্যাপ্ত সেচ সুবিধার অভাব রয়েছে। তবে এ বিষয়টা দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি)। আমরা সন্দ্বীপের সেচ ব্যবস্থার সমস্যার কথা বিএডিসিকে জানিয়েছি। তবে এ সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের পক্ষ থেকে এখনো দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি ।

তিনি জানান, সন্দ্বীপে ছয়টি খালকে সিলেক্ট করা হয় সংস্কার করে পানি ধরে রাখার জন্য। যদিও এ কাজ এখনো আলোর মুখ দেখেনি, সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে পরিকল্পনাতেই। সন্দ্বীপের সেচ ব্যবস্থা নিয়ে বিএডিসির উদাসীনতার কথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে কালাপানিয়া ইউনিয়নে সেচ ব্যবস্থার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেটি চালু হলে স্থানীয় কৃষকেরা পানির সুবিধা পাবেন বলে জানান তিনি।

কৃষকদের বীজসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, পাঁচ হাজার কৃষকের মধ্যে সবাইকে তো দেয়া সম্ভব না। তাছাড়া কৃষি অফিস কোনো বীজ সরবরাহ করে না। প্রকল্পের আওতায় বীজ সার এসব প্রণোদনা দিয়ে থাকে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;