সাতকানিয়ার রূপনগরে সুস্থ হয়ে একসঙ্গে বাড়ি ফিরলেন ৭ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
সাতকানিয়া উপজেলার একই পরিবারের সাত সদস্য করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বুধবার (৬ মে) তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। পরিবারটি সাতকানিয়া মাদার্শা ইউনিয়নের রূপনগর গ্রামের বাসিন্দা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওই রাতেই মাইক্রোবাসযোগে তারা গ্রামে পৌঁছান।
করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরা এই ৭ জনই সাতকানিয়ার প্রথম করোনা রোগী সিরাজুল ইসলামের মেয়ে জামাইয়ের পরিবারের সদস্য। পর পর ৩ দিন করোনার কোন উপসর্গ দেখা না গেলে সুস্থ ঘোষণা করার নতুন নিয়মে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সিরাজুল ইসলামের মেয়ে জামাই ফরিদুল আলম প্রথমে করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর একে একে করোনায় আক্রান্ত হন তার পরিবারের আরও ৬ সদস্য। ফরিদুল নিজেও চিকিৎসাধীন ছিলেন জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। গত ৩০ এপ্রিল পরিবারের ৬ সদস্যকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে তিনি করোনা জয় করে ফেরেন। এর ৬ দিনের মাথায় বাকিরাও ফিরলেন।
ফরিদুল আলম বলেন, ‘পরিবারের ৭ জন একসাথে করোনায় আক্রান্ত হয়ে খুব ভয়ে ছিলাম। কিন্তু আমাদের ৭ জনের কারো কোন অসুখ ছিল না। শুরুতেও ছিল না, হাসপাতালে থাকাকালীনও ছিল না। তবে আমার মাকে নিয়ে একটু ভয় ছিল। দেড় বছর আগে উনার হার্টের অপারেশন করানো হয়েছিল। এখন সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এটা খুব আনন্দ দিচ্ছে।’
এদিকে করোনা মুক্ত হয়ে গ্রামে ফেরার পর স্থানীয়রা তাদের সাদরে বরণ করে নিয়েছেন জানিয়ে ফরিদুল আলম বলেন, ‘আশেপাশের অনেকেই দেখতে এসেছেন। খোঁজ খবর নিয়েছেন। আমদের পরিবারের সবাই সুস্থ হওয়ায় তারা খুবই আনন্দিত। সবার আন্তরিকতাপূর্ণ আচরণ আমাদের আনন্দ দিচ্ছে।’
করোনা জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা এই ৬ জন হলেন— ফরিদুল আলমের মা, স্ত্রী, ১৪ ও ১৬ বছরের দুই ছেলে, বড় ভাই ও ভাবী।
উপজেলার পশ্চিম ঢেমশার ইছামতি আলীনগর এলাকার সিরাজুল ইসলাম করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষা করা হলে তার করোনা ধরা পড়ে। তবে এর আগে তার দাফনে বেশ বড় ধরনের লোকসমাগম হয়। এর প্রেক্ষিতে সাতকানিয়ার ৪০০ পরিবারের প্রায় ৪ হাজার মানুষকে তখন লকডাউন করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।
গত ২৬ এপ্রিল এই ৬ জন করোনা আক্রান্ত হন। এর আগে ২০ এপ্রিল করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন এই পরিবারের আরেক সদস্য ফরিদুল আলম। এছাড়াও সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে আরও ৫ জন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন। তবে এই ১২ জনের মধ্যে ১১ জনই ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।