সীতাকুণ্ডের অকেজো ৮ স্লুইসগেট , সংস্কারের প্রয়োজনীয় অর্থ নেই 

সীতাকুণ্ডের অকেজো ৮ স্লুইসগেট , সংস্কারের প্রয়োজনীয় অর্থ নেই 
সীতাকুণ্ডের অকেজো ৮ স্লুইসগেট , সংস্কারের প্রয়োজনীয় অর্থ নেই

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।। 

দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া সীতাকুণ্ডের ৮ স্লুইসগেট কৃষকের কোনো কাজে আসছে না। যার ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার শঙ্কায় আতঙ্কিত কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড, সৈয়দপুর ও বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা নিরসনে নির্মিত স্লুইসগেটগুলো দীর্ঘদিন অকেজো রয়েছে। এতে গত বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে অধিকাংশ ধানখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলনও কম হয়েছে। স্লুইসগেটগুলো সংস্কার না করা হলে ভবিষ্যতে ফসলের আরও ক্ষতি হবে।

মুরাদপুর ইউনিয়নের আবদুল্লাহ বলেন, গত বছর জলাবদ্ধতায় তাঁর বীজতলার সব চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এতে বাধ্য হয়ে তিনি চড়া ধামে বীজ কিনে দ্বিতীয়বারের মতো ধানের চারা রোপণ করেন।

তিনি বলেন, বর্ষার আগে যদি স্লুইসগেটগুলো সংস্কার করা না হয়, তাহলে বৃষ্টি ও বন্যায় ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া গত বছর আমনখেত পানিতে ডুবে থাকায় ধানের ভালো ফলন হয়নি। এ বছর স্লুইসগেটগুলো সংস্কারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে অনেক কৃষক পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হবে।

এলাকার কৃষকেরা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৮০ সালের শেষ দিকে চাষাবাদের প্রয়োজনে এসব স্লুইসগেট স্থাপন করেছিল। সেই সময় এলাকার খালগুলো প্রতিবছর খনন করা হতো। ১৯৯০ সালের শেষের দিক পর্যন্ত এসব স্লুইসগেট রক্ষণাবেক্ষণে পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্ব পালন করত। তবে পরবর্তী সময় এসব নিয়োজিত জনবল প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর থেকে স্লুইসগেটগুলো পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে ।

জানা গেছে, সাগরের জোয়ারের পানি যাতে স্লুইসগেট অতিক্রম করে খাল দিয়ে লোকালয়ে আসতে না পারে, সে জন্য প্রত্যেকটি খালের মুখে জোয়ার নিয়ন্ত্রক স্থাপন করা কথা ছিল। তবে কোনোটিতে এসব স্থাপন করা হয়নি। প্রায় প্রতিটি স্লুইসগেট এখন লোহা চোরদের টার্গেট। যে যেভাবে পারছে লোহার পাত খুলে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অকেজো এসব স্লুইসগেটের নিচের অংশে মাটিসহ বিভিন্ন আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন স্লুইসগেটগুলো অকেজো রয়েছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন কৃষকেরা। স্লুইসগেটগুলো সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড উদাসীন মনোভাব দেখাচ্ছে। এ কারণে প্রতিবছর এ ভোগান্তি বাড়ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, স্লুইসগেটগুলো সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী এস এম তারেক বলেন, সীতাকুণ্ডের ৮টি স্লুইসগেট সংস্কারের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন, তা আমাদের নেই। তবে অকেজো এসব স্লুইসগেট সংস্কার এবং নতুন স্লুইসগেট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে আমরা অকেজো হয়ে পড়া স্লুইসগেটগুলো সংস্কার করব।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;