সরিষার আবাদ বেড়েছে মীরসরাইয়ে, মাঠজুড়ে যেন ‘হলুদ চাদর’

সরিষার আবাদ বেড়েছে মীরসরাইয়ে, মাঠজুড়ে যেন ‘হলুদ চাদর’

মাহবুব পলাশ, মীরসরাই ।।

উত্তরাঞ্চলের মতো শীত এলেই মীরসরাইয়ে ও হলুদ চাদরে আবৃত হচ্ছে কোন কোন গ্রামের তেপান্তর। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে সরিষা আবাদ। সঠিক উদ্যোগ, প্রচারণা এবং কৃষি বিভাগের তৎপরতায় প্রত্যাশার তুলনায় আশানুরূপ বৃদ্ধি পাচ্ছে সরিষা আবাদ। অথচ মীরসরাইতে প্রাকৃতিক প্রাচুর্যে সমৃদ্ধ উপযোগী সরিষা ফলনের ব্যাপক মাঠ রয়েছে। উপকূল থেকে পাহাড়ি ঢালুসহ মধ্যবর্তী বিস্তীর্ণ জনপদে সহজ ফলন নিয়মের প্রচারণা পেলেই পতিত জমিগুলো ভরে উঠতে পারে হলুদের উৎসবে। ইতোমধ্যে অনেক গ্রামে সবুজ, বেগুনী, সাদা, সোনালী নানা মৌসুমী ফলনের পাশাপাশি হলুদের হাসি যেন অন্য সকল সুন্দরকে হার মানিয়ে মাঠজুড়ে হলুদ আলোর হাসি হয়ে উঠেছে।
উপজেলার সোনাপাহাড়, ইছাখালী, হিঙ্গুলী, করেরহাট, ধূম, দুর্গাপুর, ইছাখালী,আমবাড়িয়া গ্রামের পাহাড়ি এলাকা সংলগ্ন অনেক জমিতেই এখন বেড়েছে সরিষার চাষ। পৌষ এর শেষ সময় এবং মাঘ মাসের শুরুতে মাঠে ঘাটে তেপান্তরে সরিষা ফোটার ধুম পড়েছে। এখানকার মাঠগুলো এখনো মাঠ জুড়ে সরিষা আবাদ না হলেও যেই মাঠেই সরিষা ফুটেছে, সেই মাঠই যেন সরিষার হাসিতে কৃষকদের ও হাসি লেগে থাকে। হলুদের চাদরে ঘাড় সোনালী আভায় গোটা প্রান্তর হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত আলোকময়। সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার সোনাপাহাড় ও হিঙ্গুলী গ্রামের সরিষা ক্ষেত সোনালী আলোতে ঝলমল করছে। সোনাপাহাড়ে গত বছর দেখা যায় কয়েকটি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পায়নি সরিষা চাষ। আমবাড়িয়া গ্রামের কয়েকটি ফসলের মাঠে গত বছর ও মশুর, হেলোইন, বাউলা, মটরশুটি ও ধনেপাতার পাশাপাশি একই ক্ষেতে কিছু সরিষাও চাষ করতে দেখা গেছে। এবার আর তা চোখে পড়ছে না। কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দেশে এখন ১৫ জাতের সরিষার ফলন হচ্ছে। তবে মীরসরাই উপজেলায় বারি-১৪/১৫ এবং টরি ৭ জাতের সরিষা বেশি হয়ে থাকে। মীরসরাইতে চাষ হওয়া সরিষা হেক্টরে ১ হাজার ৬শ’ কেজি থেকে ২ হাজার কেজি উৎপাদন হবে। এ সরিষা আবাদ সমপ্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। প্রতি কেজি সরিষা থেকে ৫০০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। এ সরিষা আবাদের মাত্র ৯০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে কাটা যায়। তারপর ক্ষেতে ইরি-বোর আবাদ করা যায়। বারি সরিষা আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বিশাল মুনাফা করতে পারবে।
৮নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের সরিষা চাষী রেজাউল করিম জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এই বছর ও সরিষা আবাদ করেছি। আশা করছি অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর অধিক ফলন ঘরে তুলবো। মীরসরাইয়ের উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা জানান, মীরসরাই সরিষা আবাদের জন্য অধিক উপযোগী। উপজেলায় গত বছরের তুলনায় সরিষা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর ৩৫ হেক্টর আবাদ হলেও বর্তমানে ৪০ হেক্টর আবাদ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অগ্রগতিতে মীরসরাইতে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।