সীতাকুণ্ডে ‘খাইট্রা’ ছাড়া যেন চলেনা , কদর আছে আগের মতোই

সীতাকুণ্ডে ‘খাইট্রা’ ছাড়া যেন চলেনা , কদর আছে আগের মতোই
সীতাকুণ্ডে ‘খাইট্রা’ ছাড়া যেন চলেনা , কদর আছে আগের মতোই

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

মুসলমানদের অন্যতম বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানি। আর, এ কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংস প্রক্রিয়াকরণের কয়েকটি খুবই প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাংস কেটে টুকরো করার কাজে ব্যবহৃত কাঠের পাটাতন ‘খাইট্রা’। এর চাহিদা এবারও আগের মতোই আছে।

সীতাকুণ্ডের বাজারে এবার ‘খাইট্রা’র দাম বেশ চড়া। আকার ও ধরন অনুযায়ী প্রতি পিস দেড়শ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ‘খাইট্রা’, হোগলা পাটি এবং পশু খাদ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা । 

সারা বছর কসাইখানায় এর ব্যবহার হলেও, এর বিপুল চাহিদা এসে ধরা দেয় ঈদুল আজহার সময়। এ সময় সারা দেশের আনাচে-কানাচে এই ‘খাইট্টা’র কদর লক্ষ করার মতো বেড়ে যায়। কোরবানির মৌসুমে গ্রাম থেকে শহরের বাড়ি পর্যন্ত এর বিস্তৃতি ঘটে। ঈদের দিন জবাই করা বিপুল পশু প্রক্রিয়া করতে প্রচুর পরিমাণ কাঠের গুঁড়ি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একটি গরু প্রক্রিয়া করতে প্রায় দুই থেকে তিনটি গুঁড়ির প্রয়োজন হয়ে থাকে। যদিও একটি ছাগলের জন্য অবশ্য একটি ‘খাইট্রা’ যথেষ্ট।

সাধারণত এলাকার 'স' মিলগুলোতে গাছের গুঁড়ি করাতে ফেলে ছোট ছোট গোলাকৃতির টুকরো তৈরি করে এটি বানানো হয়। এলাকারভেদে এর বিভিন্ন নাম আছে। কোথাও এটাকে বলে খাইট্টা, কোথাও আবার বলে খটিয়া, খাইটে, গুঁড়ি, শপার, হাইজ্যা ইত্যাদি। গোলাকার বিশেষ এ খাইট্রা তৈরিতে বিশেষ সর্তক থাকতে হয়। কাঠের ব্যবহারও নির্দিষ্ট হতে হয়।

সরেজমিনে সীতাকুণ্ডের আশপাশের কয়েকটি 'স' মিলে বা রাস্তার পাশে গিয়ে দেখা যায় এই গুঁড়ি তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার ফৌজদার হাটের মিহির আলীর সাথে কথা হয় , তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে তারা বিভিন্ন গাছের লগ কিনে তা গোলাকার আকৃতিতে চেরাই (কেটে) করে বিক্রি করে থাকেন। প্রকারভেদে এবার প্রতি পিস দুইশ থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।

উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী মো. ফারহান উদ্দীন বলেন, আকার ও ধরন অনুযায়ী প্রতি পিস কাঠের খাইট্রা দেড়শ থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। ঈদের সময় সব বিক্রি না হলে অবশিষ্টগুলো কি করেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেগুলো টুকরো টুকরো করে জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করে দিই। তাদের লোকসান হয় না। তবে, এবার বাজার ভালো বলে জানান তিনি।

সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ফকিরহাটের ব্যবসায়ী মিনহাজ উদ্দীন জানান, তিনি শুধুমাত্র কোরবানির ঈদেই কাঠের গুঁড়ি বা খাইট্রার ব্যবসা করেন। বিক্রিও ভালো হয়। এবারও ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;