যারা কৃত্রিম উপায়ে সংকট তৈরি খাদ্য গুদামজাত করে তাদের শাস্তি ভয়াবহ

ইসলাম ডেস্ক ।।

যারা কৃত্রিম উপায়ে সংকট তৈরি খাদ্য গুদামজাত করে তাদের শাস্তি ভয়াবহ
যারা কৃত্রিম উপায়ে সংকট তৈরি খাদ্য গুদামজাত করে তাদের শাস্তি ভয়াবহ
নিত্যপণ্যের দাম যখন-তখন বেড়ে যায়। এতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ওঠা অবস্থা। কারণ মানুষের আয়-উপার্জন তো বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এভাবে বাড়ে না। পণ্যের দাম বাড়তেই পারে। তবে তার পেছনে সঠিক কারণ থাকতে হয়; যেটা আমাদের দেশে নেই। প্রায় সব নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে আমাদের দেশে। তারপরও দাম বাড়ছে। অভিযোগ উঠেছে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে।
 
যারা এমনটা করছেন, তাদের সিংহভাগই মুসলমান। মুসলমান হয়ে তারা মুসলমানদের কষ্ট দিচ্ছেন। জুলুম করছেন। তাদের এ সীমা লঙ্ঘন আল্লাহর পছন্দ নয়। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ‘যে ব্যক্তি সীমা লঙ্ঘন করে জুলুম করতে চায়, আমি তাকে বেদনাদায়ক শাস্তি দেব।’ এক অর্থে তারা অভিশপ্ত। দরিদ্রতা তাদের পিছু ছাড়বে না।
 
হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি খাদ্য গুদামজাত করে কৃত্রিম উপায়ে সংকট তৈরি করে, আল্লাহ তাকে দুরারোগ্য ব্যাধি ও দারিদ্র্য দিয়ে শাস্তি দেবেন।’ (ইবনে মাজাহ : ২/৭২৯)
 
রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘সৎ ব্যবসায়ী রিজিকপ্রাপ্ত হয়, আর পণ্য মজুদকারী অভিশপ্ত হয়।’ (ইবনে মাজাহ : ২/৪২৮)। অন্য এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর জন্য) ৪০ দিন পর্যন্ত কোনো জিনিস গুদামজাত করে রাখবে, তার এত গুনাহ হবে যে, সমুদয় সম্পদ দান করে দিলেও তার গুনাহ মাফের জন্য যথেষ্ট হবে না।’ (মেশকাত : ২৭৭২)। অন্য এক হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিন খাদ্য মজুদ রাখল, সে আল্লাহ থেকে নিঃসম্পর্ক হয়ে গেল। আল্লাহও তার থেকে নিঃসম্পর্ক হয়ে যান।’ (মুসনাদে আহমদ : ৮/৪৮১)। নবী করিম (সা.) এমন চরম সতর্কবাণী সত্ত্বেও অনেকের বোধদয় হয় না! অবলীলায় গড়ে তুলছেন পণ্য মজুদের রমরমা ব্যবসা। বান্দা যদি এভাবে আল্লাহ থেকে নিঃসম্পর্ক হয়েই যায়, তাহলে তার থাকলটা কী? সে কি সব হারিয়ে ফেলল না?
 
পণ্য মজুদ করে যারা দাম বৃদ্ধি করছেন, তারা মূলত ইসলাম থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। দুনিয়ার প্রাচুর্যের নেশায় হেন কাজ নেই যা তারা করতে পারেন না। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন করে রেখেছে। এমনকি তোমরা কবরে পৌঁছে যাওয়া পর্যন্ত।’ (সুরা তাকাসুর : ১-২)
 

ইবাদত কবুল হওয়ার শর্ত হালাল রিজিক। যারা পণ্য মজুদের মাধ্যমে হারাম পথের অর্জিত সম্পদ কুক্ষিগত করছে, তারা ইবাদত-বন্দেগি যতটুকু করছেন, হারাম উপার্জনের কারণে তা কি বিফলে যাচ্ছে না? ব্যবসা করতে নিষেধ নেই। তবে তা সীমার মধ্যে হতে হবে। সততার সঙ্গে হতে হবে। অন্যথায় পরকালে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন ব্যবসায়ীরা মহা অপরাধী হিসেবে উত্থিত হবে। তবে যারা আল্লাহকে ভয় করবে, নেকভাবে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যবসা করবে তারা ব্যতীত।’ (তিরমিজি : ১২১০)। তাই যাদের কারণে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি হয় তারা সত্বর সুপথে ফিরবেন এটাই আল্লাহর কাছে প্রার্থনা।