মানুষের ঢল আনসারীর জানাজায় , লকডাউন উপেক্ষিত - পুলিশ নীরব

মানুষের ঢল আনসারীর জানাজায় , লকডাউন উপেক্ষিত - পুলিশ নীরব

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

লাখো মানুষের ঢল নেমেছে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচক মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় । চলমান লকডাউন উপেক্ষা করে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছে তার ভক্ত-অনুরক্তরা। স্থানীয় প্রশাসন কোনওভাবেই ঠেকাতে পারেনি মানুষের এই জনসমাগম। এতো মানুষের একসঙ্গে জানাজায় অংশ নেওয়া ঠেকাতে না পারার বিষয়ে তাদের ‘কিছু করার ছিলো না’ বলে জানিয়েছে।

শনিবার সকালে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদরাসা প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে জানাজা মাদরাসা মাঠ ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে যায়। একদিকে বিশ্বরোড মোড় হয়ে সরাইলের মোড় পর্যন্ত অন্যদিকে আশুগঞ্জের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকে লোকজন। এ ছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত কিছু পুলিশ ছিল একপ্রকার নীরব দর্শক।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, এটা থেকে বুঝা যায় যে আমাদের মাঝে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ দিয়ে এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মোটেও সম্ভব না।

সরাইল থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু লাখে মানুষ সমাগমের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও ঢাকা থেকে লোকজন আসে। আমরা চিন্তাও করতে পারিনি যে এত লোক হবে। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিল না। তবে বলার পর উপস্থিত লোকজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়ান বলে দাবি করেন ওসি।

কিন্তু জানাজায় অংশ নেওয়াদের কাছ থেকে জানা যায়, সেখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কোনো বালাই ছিলো না। একসঙ্গে এতো মানুষের জায়গা দেওয়াই কঠিণ হয়ে পড়েছে যেখানে , সেখানে সামাজিক দুরত্ব রক্ষার কী করে হয়, এমন প্রশ্নও তুলেছেন জানাজায় অংশ নেওয়া কেউ কেউ।

শুক্রবার বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন যুবায়ের আহমেদ আনসারী (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

যুবায়ের আহমেদ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির এবং বেড়তলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। এ ছাড়া তিনি একাধিক মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ইসলামী আলোচক হিসেবে তাঁর খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।