মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা

মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা
মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা

কক্সবাজার প্রতিনিধি ।।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে র‌্যাব।

তারা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার, বাহারছড়া ক্যাম্পের বরখাস্তকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, টেকনাফ থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছাড়াও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএনের তিন সদস্য। বাকি তিনজন স্থানীয়, একজনের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজার র‌্যাব ১৫-এর উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারার আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।

তিনি বলেন, “এ মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ জন আসামি ছাড়াও আরও একজনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে।”

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য তিনি কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। ওই কাজেই তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ।

কক্সবাজারের পুলিশ সে সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।

পুলিশ সেদিন ঘটনাস্থল থেকেই সিফাতকে গ্রেপ্তার করে। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শিপ্রাকে।

দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। ওই ঘটনায় টেকনাফের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত ও ওসি প্রদীপসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এবং পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী কারাগারে রয়েছে।

সিনহা হত্যার ঘটনায় চারটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে তিনটি মামলার বাদী ছিল পুলিশ। ঘটনার পরপরই ওই মামলা করেছিল পুলিশ। পুলিশের মামলায় আসামির তালিকায় সিনহাও ছিলেন। পরে সিনহার বোন আদালতে একটি মামলা করেন। সব মিলিয়ে সিনহার মৃত্যুর ঘটনায় মোট চার মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব।

সিনহার বোনের করা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, এসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য- এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাদের একাধিক দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

পুলিশের ১০ সদস্যের বাইরে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। তারা পুলিশের করা মামলায় সাক্ষী ছিলেন। ওই তিনজন হলেন- নুরুল আমিন, আয়াছ উদ্দিন ও নিজাম উদ্দিন। তারা তিনজনই অনেক দিন ধরে টেকনাফে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

এই ১৪ জনের বাইরে টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবকে চার্জশিটে আসামি করা হয়েছে।