নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কাজ না দিয়ে নতুন ঠিকাদারকে সুযোগ দেওয়ার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কাজ না দিয়ে নতুন ঠিকাদারকে সুযোগ দেওয়ার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কাজ না দিয়ে নতুন ঠিকাদারকে সুযোগ দেওয়ার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কাজ না দিয়ে নতুন ঠিকাদারদের কাজে সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনটা এমন যে, বড় বড় ঠিকাদার ছাড়া নতুন, ছোট ঠিকাদাররা সুযোগ বেশি পায় না। এটাকে একটু সহজ করেন, যাতে করে আরও কেউ ঢুকতে পারে এবং প্রতিযোগিতা হয়। তিনি বলেন, সবাই যেন উন্নয়ন কাজে অংশ নিতে পারে, তবে মান ঠিক রেখে। কাজ জানে না এমন কাউকে কাজ দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে প্রয়োজন হলে বিধি-বিধান আরও যাচাই-বাছাই করার জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল মনসুর ফয়জুল্লাহকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকালে একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের ১৯তম একনেক সভার সভাপতিত্ব করার সময় এ নির্দেশ দেন। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার পর মন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন সহজ করার কাজ চলছে। এটা হয়ে গেলে নতুন নতুন প্রতিযোগিতা হবে এবং নতুন ঠিকাদাররা ঢোকার সুযোগ পাবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, খুব আগ্রহ নিয়ে প্রায়ই প্রকল্প পাস করা হয়, দালানকোঠা নির্মাণ করা হয়। এগুলো হওয়ার পর পরবর্তীতে যেসব কাজ থেকে জনগণ সরাসরি এসবের সুবিধা ভোগ করবে, তখন আর আগ্রহ দেখা যায় না সংশ্লিষ্টদের। তাই যে আগ্রহ নিয়ে প্রকল্প পাস ও দালানকোঠা নির্মাণ করা হয়, একই আগ্রহ নিয়ে পরবর্তী কাজও করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে এমএ মান্নান বলেন, আগ্রহ নিয়ে প্রায়ই প্রকল্প পাস করা হয়, দালানকোঠা নির্মাণ করা হয়। তারপর আর বাকি কাজ হয় না। হয় জনবল নাই, নয় যন্ত্রবল নাই। যে আগ্রহ নিয়ে আপনারা প্রকল্পের কাজ শেষ করেন, একই আগ্রহ নিয়ে আপনারা (সংশ্লিষ্টরা) দয়া করে বাকি কাজগুলো করবেন। যাতে জনগণ যে সেবা পাওয়ার কথা, সেখান থেকে সেটা তারা পায়।
নিজের বক্তব্য তুলে ধরে এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ। এটার সঙ্গে আমি শতভাগ একমত। আমার নিজ এলাকায় এ রকম কিছু স্থাপনা আছে। তড়িঘড়ি করে স্থাপনা কাজ শেষ করা হয়েছে, তারপর আর কাজ হয় না।
নতুন সড়কের চেয়ে মেরামতের দিকে জোর দিতে হবে
নতুন সড়ক নির্মাণের চেয়ে সড়ক মেরামত, মান-উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন থেকে সাবধানতার সঙ্গে সড়ক করতে হবে। কারণ, প্রচুর সড়ক হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, নতুন সড়ক করার আগে আমাদের চিন্তা করতে হবে। যেসব সড়ক আমাদের আছে, বিশেষ করে আন্তঃজেলা সড়ক, এগুলোকে আমরা বিশ^মানের না হলেও আঞ্চলিক মানের করতে চাই। চার লেন করতে চাই, পুরু করতে চাই, যাতে সামান্য বৃষ্টিতে না ভেঙে যায়। এ জন্য এখন থেকে আমাদের মনোযোগ থাকবে সড়কের উন্নয়ন ও মেইনটেন্যান্সের দিকে। নতুন সড়ক নেব না, তা বলছি না। খুব সাবধানতার সঙ্গে নেওয়া হবে। আর বর্তমানগুলোকে আমরা উন্নত করব। এটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত।
যত্রতত্র সেতু না করার নির্দেশ
‘যত্রতত্র ব্রিজ কইরেন না, সাবধানে ব্রিজ কইরেন’Ñ প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গ্রাম-গঞ্জে আমরা অসংখ্য সেতু বানাচ্ছি, কিন্তু অহেতুক যেন না বানাই। এতে পানি চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। নদীগুলো এমনি ভরে যাচ্ছে, সেতু নির্মাণ করলে পানি প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়, পলি পড়ে আরও ভরে যায়। আপনারা সাবধানে সেতু বানাবেন, অহেতুক বানাবেন না।’ যেখানে নদ-নদী সোজা-সরল করার প্রয়োজন আছে, তা করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
খুলনা-যশোর সড়ক নিয়ে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী
খুলনা-যশোর সড়ক নির্মাণ নিয়ে একনেক সভায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের কাজটি দ্রæত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, খুলনা-যশোর সড়কটা তার কাছে খুবই বিরক্তিকর একটা সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কের কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বললেন যে, ওবায়দুল কাদেরসহ এটার সঙ্গে যারা যারা আছেন, সবাই এটার কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করেন। মানুষের অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে।