জঙ্গল সলিমপুর থেকে অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং, যে কোনদিন উচ্ছেদ

জঙ্গল সলিমপুর থেকে অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং, যে কোনদিন উচ্ছেদ
জঙ্গল সলিমপুর থেকে অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং, যে কোনদিন উচ্ছেদ

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি।।

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর থেকে অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। আজ ( ৩০ আগস্ট) জংগল সলিমপুরের সরকারি খাস জমি উদ্ধারের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জালালাবাদ মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানে বি.এস ৭২৯ দাগে ৯.৭০ একর, শ্রেণি-পাহাড় এবং বি.এস ৭৭১ দাগে ২.৯৪ একর, শ্রেণি-পাহাড় ভূমি সরেজিমন পরিমাপ ও পরিচিহ্নিত করে উক্ত দাগাদির ভূমিতে লাল পতাকা টাঁঙ্গানো হয়।

জালালাবাদ মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত বি.এস ৭২৯ দাগে ৯.৭০ একর, শ্রেণি-পাহাড় এবং বি.এস ৭৭১ দাগে ২.৯৪ একর, শ্রেণি-পাহাড় ভূমি জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম এর নামে বি.এস জরিপ চূড়ান্ত প্রচার আছে।

উক্ত খাস খতিয়ানের ভূমিতে অবৈধভাবে বসবাসকারীরা জেলা প্রশাসন কর্তৃক ৩১ আগস্ট তারিখের মধ্যে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে সকলকে (অবৈধভাবে বসবাসকারীগণ) অবহিত করা হয়।

জংগল সলিমপুরের সরকারি খাস জমিতে অবৈধভাবে বসবাসকারীগণ ৩১ আগস্ট তারিখের মধ্যে সরে না গেলে পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক তাদেরকে উক্ত ভূমি হতে উচ্ছেদ করা হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানা যায়, জঙ্গল সলিমপুর আগামী আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে একটি উপশহরে রূপ নিবে। সে জন্য এ এলাকায় থাকা অবৈধ দখলদারদের সরাতে হবে। ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০ পরিবার স্বউদ্যোগে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। আরো অনেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাছাড়া সরকার ৩১ আগস্ট পর্যন্ত যে সময় দিয়েছে তা আর ক'দিনের মধ্যে শেষ হচ্ছে । সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে বড় ধরণের উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন এ সব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সরকারের নেয়া মহা পরিকল্পনা ঘিরে আমরা এগুচ্ছি। এ এলাকার অন্যতম অপরাধী ইয়াছিনসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে অনেকগুলো। পরিবেশের ক্ষতি, রাস্তা কেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, পাহাড় কাটা, নতুন করে বসতি স্থাপনা, এ সব কারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো করা হয়েছে। সম্প্রতি দুইবার জঙ্গল সলিমপুরের বসতিরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের নামে জনজীবন অতিষ্ট করেছে উল্লেখ করে ইউএনও বলেন, রাস্তায় নেমে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, প্রশাসনের কাজে বাধা দিয়েছে, রাস্তা দখল করেছে। এ সবের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা করা হয়েছে। এ সব মামলা এখন পুলিশ তদন্ত করছে। যে-ই জড়িত থাকুক, প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। পাহাড় কাটায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। জমি বেচাকেনার সাথে জড়িত সমবায় সমিতিগুলোর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। স্বেচ্ছায় জঙ্গল সলিমপুর ছাড়তে ৩০ আগস্ট সময় বেধে দেয়া হয়েছে। আগামী মাসের শুরুর দিকে বড় অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ এলাকায় অবৈধ বসতি থাকবে না। তিনি বলেন, মহা পরিকল্পনায় অনেকগুলো প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম নাইট সাফারি পার্ক। এ পার্ক ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হবে। আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যেই এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খোঁজা হচ্ছে। সংগ্রহ করা হচ্ছে পশু পাখি।

উল্লেখ্য, জঙ্গল সলিমপুর প্রকল্পে থাকছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি স্পোর্টস ভিলেজ, জনসাধারণের চিকিৎসার জন্য হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল, একটি সাফারি পার্ক, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, একটি নান্দনিক মসজিদ, উচ্চ শক্তির বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র, পাহাড় ব্যাবস্থাপনা কমিটির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ছিন্নমূলদের পুনর্বাসন প্রকল্প ।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;