এম পি ইঞ্জি: এনামুল হকের দ্বিতীয় বিয়ে, রাজশাহীজুড়ে আলোচনার ঝড়!

এম পি ইঞ্জি: এনামুল হকের দ্বিতীয় বিয়ে, রাজশাহীজুড়ে আলোচনার ঝড়!
এম পি ইঞ্জি: এনামুল হকের দ্বিতীয় বিয়ে, রাজশাহীজুড়ে আলোচনার ঝড়!

রাজশাহী প্রতিনিধি ।।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের দ্বিতীয় বিয়ে বিষয় নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় চলছে রাজশাহীজুড়ে।

‘এমপি সাহেবের রক্ষিতা বা প্রেমিকা নই দ্বিতীয় বউ আমি’ এমন স্ট্যাটাসে দুদিন যাবৎ সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও রাজশাহীর পাড়া মহল্লা।

নিজেকে এমপির দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আয়েশা আক্তার লিজা নামের এক নারীর ফেসবুক স্ট্যাটাস দিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ রাজশাহীতে শুরু হয় তোলপাড়।

গত শুক্রবার (৩০ মে) থেকে বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। লিজাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করেছেনও রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হক।

জানা যায়, আয়েশা আক্তার লিজা রাজশাহী নগরীর তেরখাদিয়া এলাকার চাঁদ মিয়ার মেয়ে।

আয়েশা আক্তার লিজার ভাষ্য, এনামুল হকের বাগমারার বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই তাদের বিয়ে হয় আট বছর আগে। ২০১৮ সালের ১১ মে তাদের নতুন করে ঢাকার সরকারি বাসায় আবারো বিয়ে করেন। ওই বিষয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে। বিয়ের বিষয়েটি গোপন থাকলেও তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করে আসছিলেন। এমপি তাকে দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি গর্ভধারণ করেন। কিন্তু এমপি গর্ভপাত করান।

লিজার অভিযোগ, কয়েকদিন আগে এমপি তার হোয়াটস অ্যাপে একটি বার্তা পাঠান। তাতে দেখা গেছে, তিনিই এমপিকে তালাক দিয়েছেন। ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে এমপি তাকে এখন তালাক দিতে চাইছেন। তবে তিনি তার পাঠানো তালাকনামা এখনো হাতে পাননি। টাকা ও ক্ষমতার জোরে ‍ভূয়া কাগজ তৈরি করে এমপি ধোঁকা দিতে চাচ্ছেন।
 
তিনি আরো বলেন, প্রবাসীর সাথে বিয়ে হয়েছিলো তার। কিন্তু তিন মাসের বিয়ের মাথায় এমপি এনামুল হক ওই প্রবাসীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। তিনি তো সংসার করছিলেন। এখন সন্তান নিতে চাওয়ায় এমপি বেঁকে বসেছেন।

যার কারণে ভূয়া তালাকনামা তৈরি করে তালাক দিচ্ছেন। আমি এসব হয়রানিমূলক ভূয়া কাগজের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আদালতে মামলা করবো। জননেত্রী শেখ হাসিনা, মমতাময়ী মায়ের কাছে এই বিচার দিবো।
ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিষয়ে তিনি বলেন, বাধ্য হয়েই ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। আর এরপর থেকেই অনবরত প্রাণনাশের হুমকি আসছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও আসছে।

এনিয়ে তিনি নগরীর রাজপাড়া থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন শুক্রবার। কিন্তু পুলিশ তার অভিযোগ নেয়নি। তবে ওই নারী অভিযোগ দিতে থানায় আসেননি বলে জানিয়েছেন নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)
শাহাদাত হোসেন খান।

তিনি জানিয়েছেন, তিন দিন আগে ওই নারী তাকে ফোন করছিলেন। ওই সময় তিনি বলেন, আপনারা তো এমপির বিরুদ্ধে মামলা নেবেন না। তিনি জানিয়েছেন, কেন মামলা নিবো না?

আপনি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতেই পারেন। পরে ওই নারী আর অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেননি।

এদিকে, বিয়ের কাবিননামার কপিও গণমাধ্যমকর্মীদের সরবরাহ করেছেন লিজা। তাতে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকার শ্যামলী রিংরোর্ডের একটি কাজি অফিসে তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়। দেন মোহরের দশ লাখ এক টাকার পুরোটাই পরিশোধ করেন এমপি এনামুল হক।

আয়েশা আক্তার লিজাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করেছেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। তিনি বলেন, আট বছর আগে থেকেই তাদের সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু বছর  দুয়েক আগে তাদের বিয়ে হয়। তবে গত ২৪ এপ্রিল আইন মেনেই লিজাকে তালাক দিয়েছেন বলে জানান এমপি এনামুল।

তিনি জানান, তাকে দেনমোহরের ১০ লাখ টাকা নগদ দেয়া হয়েছে। তার কোনো অভিযোগ থাকার কথা নয়। অভিযোগ থাকলে তিনি আদালতে যেতে পারেন। কারো ইন্ধনে তিনি এই কান্ড ঘটিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, টানা তিন মেয়াদে রাজশাহী-৪ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এক মেয়ে ও দুই ছেলের জনক এনামুল হক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এনা গ্রুপের কর্ণধারও। এটিও লিজার দ্বিতীয় বিয়ে ছিলো। আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে এমপি এনামুল হককে বিয়ে করেন তিনি।