সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে উচ্ছেদ অভিযান, গুড়িয়ে দেওয়া হলো শতাধিক স্থাপনা

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে উচ্ছেদ অভিযান, গুড়িয়ে দেওয়া হলো শতাধিক স্থাপনা
সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে উচ্ছেদ অভিযান, গুড়িয়ে দেওয়া হলো শতাধিক স্থাপনা

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।  

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর আলীনগরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (২ আগষ্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে আলীনগরে পাহাড় কেটে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা হয়।

এসময় বুলডোজার দিয়ে বিপুল সংখ্যক ঘর বাড়ী, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়। অভিযানে পুলিশ , র‍্যাব আনসারসহ হাজারো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে আলীনগরে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ইয়াসিনের নির্মিত সেই বিশেষ টর্চার সেল, অফিস এবং ঘর গুড়িয়ে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এছাড়া পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ১৭৫টি স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে দখলে থাকা প্রায় ৭শ’ একর পাহাড়ি জমি উদ্ধার করে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আজকের উচ্ছেদ অভিযানে জঙ্গল সলিমপুর আলীনগরে ১৭৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় এবং ৭শ’ একর পাহাড়ি জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় সরকারি জমিতে ইয়াসিনের নির্মিত অফিস, ঘর এবং তার বিশেষ ‘টর্চার সেল’ (ইয়াসিনের বিরুদ্ধে কথা বলা ব্যক্তিদের নির্মম অত্যাচার করা হতো) গুড়িয়ে দেয়া হয়। একইসঙ্গে উদ্ধারকৃত জায়গায় বিভাগীয় পাহাড় ব্যবস্থাপনা অফিস, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, স্পোর্টস ভিলেজ, সাফারি ও ইকোপার্ক এবং র‌্যাব ও পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনার সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।

অভিযানে জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল এ) মাসুদ কামাল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মো. শাহাদাত হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সীতাকুণ্ড মো. আশরাফুল আলম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু এমং মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সীতাকুণ্ড সার্কেল আশরাফুল করিম, অফিসার্স ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদসহ পুলিশের ৭০ এবং র‌্যাব ও আনসার বাহিনীর ৬০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, সরকার এখানে একটি মহাপরিকল্পনা করেছে। যেটুকু পাহাড় কাটা হয়েছে তার পরিবেশ প্রতিবেশকে ঠিক রেখে অবশিষ্ট অংশটুকুতে যে পাহাড় এবং টিলা রয়েছে তা আমরা সংরক্ষণ করবো। যে জায়গাটুকুর গাছ কেটে সবুজায়ন ধ্বংস করা হয়েছে সেখানে আমরা ২ লাখের মতো বনজ, ফলজ ও ওষুধি গাছের চারা রোপন করবো। তথ্যমন্ত্রী নিজেই এসে এসব চারা রোপনে অংশ নেবেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা এ ৩ হাজার ১শ’ একর জমিতে চট্টগ্রামবাসীর জন্য সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। সে মহাপরিকল্পনার অধিকাংশ জুড়ে থাকবে ইকোপার্ক, রিসোর্ট, সাফারি পার্ক ইত্যাদি। এখানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া এখানে স্পোর্ট ভিলেজ, আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন হাসপাতাল, সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনা, তথ্য ভবন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হবে। যাতে করে যে টিলা ও পাহাড়টুকু কাটা হয়েছে তা বাদে অবশিষ্ট অংশটুকু আমরা সংরক্ষণ করতে পারে। এখানে যেসব স্থাপনা হবে সবকিছুই পরিবেশ, প্রতিবেশ ঠিক রেখেই বাস্তবায়ন করা হবে।

এদিকে, উচ্ছেদ অভিযান শেষে ফেরার পথে আলীনগরের তিনটি পয়েন্টে মানবপ্রাচীর তৈরি করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দখলদাররা আটকে রাখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;