আতিকের ‘সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা’ গড়তে ত্রিমুখী ইশতেহার

আতিকের ‘সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা’ গড়তে ত্রিমুখী ইশতেহার
আতিকের ‘সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা’ গড়তে ত্রিমুখী ইশতেহার

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

আওয়ামী লীগ মনোনীত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ‘সুস্থ ঢাকা, সচল ঢাকা, আধুনিক ঢাকা’ গড়ার প্রত্যয়ে ত্রিমুখী ইশতেহার ঘোষণা করে বলেছেন, আজ সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সততা-নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে, সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে পারবো। চার’শ বছরের পুরনো শহর ঢাকা, যার বাঁকে বাঁকে ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংগ্রাম আর বিনির্মাণের গল্প। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বিকশিত হয়েছে। বিশ্বের জনবহুল শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ঘনবসতিপূর্ণ এ শহরের মানুষের যাপিত-জীবনে নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও এ শহর আমাদের কাছে বড় আবেগের,বড় ভালোবাসার।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে গুলশানের লেক শোর হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, আমার প্রধান লক্ষ্য আনিস ভাইয়ের কাজগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমি নির্বাচিত হলে কাউন্সিলরদের প্রত্যেক বছর সম্পদের হিসাব দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।

সবাইকে মুজিব বর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে, এ জাতিকে স্বাধীন সার্বভৌম সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’

লিখিত বক্তব্যে আতিক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত ভঙ্গুর দেশের দায়িত্ব নিয়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলার কাঠামো দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। শুরু হয়েছিল দেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রা। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাব মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আমাদের প্রগতিশীলতা, উন্নয়ন-অগ্রগতি-সবকিছুকেই স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনকাল সীমাহীন দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কারণে, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি শুধু স্থবিরই হয়নি, অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবারও বাংলাদেশের মানুষ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।’

অতিকুল ইসলাম বলেন, ১১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজ আলোয় উদ্ভাসিত। উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূর প্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) পূরণে এক রোল মডেল। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় অংশ নিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আমি সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০২০ – এ অংশ নিচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘‘আপনারা জানেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ উদযাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। এরইমধ্যে এ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় সমাদৃত। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। সেই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এই মহোৎসব দু’টির অপেক্ষায় গোটা বাঙালি জাতি।’’

মেয়র প্রার্থী আতিক বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিগত ১০/১১ বছরে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে এগিয়ে বর্তমানে এসে উপস্থিত হয়ছে। সেই অগ্রযাত্রার দিশারী আমাদের প্রিয় শহর ঢাকা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে বহু কাজ করেছে। আরও বহু কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘একটি শহরের প্রাণ হচ্ছে শহরের পাড়া ও মহল্লাগুলো। সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে গেলে প্রতিটি এলাকা, পাড়া ও মহল্লাকে আলাদাভাবে নজর দিতে হবে। প্রতিটি এলাকাভিত্তিক সমস্যা শনাক্ত করে সেগুলোর স্থায়ী সমাধানের মধ্য দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করাটা অত্যন্ত জরুরি। এই এলাকাভিত্তিক পরিবর্তনই নগরীর সামগ্রিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যার ফলে এই নগরীতে বসবাস করা মানুষগুলো সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আমার প্রধান লক্ষ্য, এই নগরীকে কেবল বসবাস উপাযাগী নয়, বরং নগরবাসীর জীবনমানেরও উন্নতি সাধন করা।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২০১৯ সালের উপ-নির্বাচনে দেওয়া ইশতেহারের অধিকাংশ কাজই শুরু হয়েছে, উল্লেখ করে আতিক বলেন, ‘আমার গত ৯ মাসের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে আগামীর ঢাকা গড়ার লক্ষ্য অর্জনে পেশ করেছি আমার ত্রিমুখী ইশতেহার। চলুন, এক নজরে দেখে নেই একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ে তুলতে আমার পরিকল্পনা।’