সড়ক পরিবহনে নৈরাজ্য থামেনি চট্টগ্রামে।। ভুয়া নাম্বার ও এএফআর লাগিয়ে রাস্তায় চলে গাড়ি, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

সড়ক পরিবহনে নৈরাজ্য থামেনি চট্টগ্রামে।। ভুয়া নাম্বার ও এএফআর লাগিয়ে রাস্তায় চলে গাড়ি, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

এস. এম. পিন্টু ।। 

চট্টগ্রামে সড়ক পরিবহনে নৈরাজ ঠেকাতে ও চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের নানা উদ্যোগের পরেও একশ্রেণির অতিলোভী পুলিশ কর্মকর্তা ও কথিত পরিবহন শ্রমিক নেতার যোগসাজসে মাসিক কোটায় বীরদর্পে নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় চলতে দেখা যায় নিবন্ধনবিহীন এএফআর লেখা সিএনজি অটো রিক্সা, বিআরটিএ থেকে বাতিল হওয়া ভুয়া নাম্বারের ”প” সিরিজের টেম্পু  ও অন্য জেলার ভুয়া নাম্বার ব্যবহার হওয়া প্রাইভেট সিএনজি। এসব গাড়ি রাস্তায় চলার ফলে মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার ও শনিবার নগরীর  বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, বহদ্দার হাট পুলিশ বক্সের সামনে, মুরাদপুর, অক্সিজেন, ২ নাম্বার গেইট, আমতল, নিউ মার্কেট ও ডিটি রোড এলাকায় যাতায়াত করার সময় এমন দৃশ্য চোখে পরে। 
জানা যায় বোয়ালখালী এলাকার শামীম মিস্ত্রী ও হাটহাজারীর রেজা মিস্ত্রীর গ্যারেজে তৈরি হয় বড়তাকিয়ার মত দেখতে টেম্পু সর্বসাকুল্যে খরচ পরে ৩ লাখ ২০ হাজার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। যেসব গাড়ির বৈধ কোন কাগজপত্র নাই পুরোনো জাপানি হলুদ কালারের ভেসপা টেম্পুর ব্লক হওয়া নাম্বারগুলো ব্যবহার করে কতিপয় শ্রমিক নেতা অসৎ পুলিশের সাথে আতাত করে এসব গাড়ি রাস্তায় চালিয়ে মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে। গাড়ি তৈরির বিষয়টি স্বীকার করে শামীম মিস্ত্রী বলেন আগে বানিয়েছ তবে এখন কেউ বানাতে চাইলে নাম্বার ছাড়া সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ হবে । এর কমে সম্ভব কিনা জানতে চাইলে সাক্ষাতে কথা বললে কিছু কমানো যাবে বলেও জানান। এব্যপারে জানতে রেজা মিস্ত্রী ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সুত্র জানায় নগরীর বিভিন্ন রুটে আলাদা আলাদা শ্রমিক সংগঠন ও নেতা রয়েছে । গ্যারেজ থেকে এসব গাড়ি বানিয়ে ভুয়া নাম্বার লাগিয়ে শ্রমিক নেতাদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রুটে ভর্র্তি করিয়ে মাসিক কোটায় চালানো হয় ফলে পুলিশও তাদের আর কোন ডিস্টার্ব করেনা।  এককালীন ও মাসিক টাকা আদায়ের বিষয়টি শ্রমিক নেতারা অস্বীকার করলেও এসব গাড়ির চলাচলের ফলে রাষ্ট্র যে বিশাল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
বহদ্দারহাট টার্মিনাল হইতে বোয়ালখালী  ২৫০ এবং বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সের সামনে থেকে আমতল পর্যন্ত ১০০ টি টেম্পু চট্টগ্রাম অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং:১৭০৬) এর ব্যানারে মোঃ বোরহান ও তপন বাবুর নেতৃতে চলাচল করলেও সভাপতি বোরহান বলছেন এগুলো কিভাবে চলে তিনি জানেনা। মোঃ হাবিব ও নেজামের নেতৃত্বে বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার হইতে হাজিরপুল পর্যন্ত ৫০ টি টেম্পু চলাচল করে তবে এই বিষয়ে মোঃ হাবিব এখন লাইন ছেড়ে নিজে গাড়ি চালান বলে এই প্রতিবেদকে জানালেও মোঃ নেজাম জানান বলেন এই লাইনের সমস্ত হিসাব নিকাশ হাবিব করে থাকেন কত টাকা উঠে কাকে কত টাকা দিতে হয় সবই হাবিব জানে আমিতো ছোট পদে আছি। আর এই সিরিজের গাড়িতো শুধু আমরাই চালাইনা নিউ মার্কেট, হালিশহর,মুরাদপুর, ২ নাম্বার গেইট, অক্সিজেন, বহদ্দারহাট টার্মিনাল ও পুলিশ বক্সের সামনে থেকেও চলে।  মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন ১৫০, ২ নাম্বার গেইট হইতে অক্সিজেন ১৫০ টির মতো টেম্পু চট্টগ্রাম জেলা অটো টেম্পু অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের  (রেজিঃ নং-১৪৮৭) ব্যানারে মো. মহিমের নেতৃত্বে চলে একইভাবে  নিউমার্কেট থেকে ডিটি রোড হয়ে হালিশহর পর্যন্ত ভুয়া ”প” সিরিজের  ১০০ টির মতো ভুয়া নাম্বারের অবৈধ টেম্পু চলাচল করে পুলিশের নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত। 
এব্যপারে টিআই চান্দগাঁ প্রশান্ত কুমার দাশ বদলী হয়েছেন জানিয়ে বলেন আমরা এসব গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছি পাইলেই টো করছি তবু চুরি চামারি করে কিছু চলছে। এই বিষয়ে টিআই (কোতোয়ালী) পুলক চাকমা বলেন এসব ভুয়া নাম্বারের গাড়ি চোখে পরলেই ব্যবস্থা নিচ্ছি গত একমাসে প্রায় ৪০ টার মতো টেম্পু টো করা হয়েছে আজকেও একটি টো করা হয়েছে।
এব্যপারে জানতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

লেখক . ব্যুরো প্রধান, দৈনিক সকালের সময় , চট্টগ্রাম  ।