'সর্বজনীন পেনশন' চালু হচ্ছে আজ, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

'সর্বজনীন পেনশন' চালু হচ্ছে আজ, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সর্বজনীন পেনশন চালু আজ

বিশেষ প্রতিবেদক।।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আজ। এ সংক্রান্ত আইন পাস হওয়ার প্রায় ৭ মাস পর আজ সকাল ১০টায় পরীক্ষামূলকভাবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সরকারি বাসভবন রাজধানীর গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বহুল প্রতীক্ষিত এ পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন তিনি। অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থাকবে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, রংপুর জেলা ও সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস। এর পর আজ থেকেই স্বল্পপরিসরে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা চালু হবে।

১৮ বছর থেকে ৫০ বছরের বেশি বয়সি বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য চার ধরনের পেনশন স্কিমের বিধান রেখে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা জারি করেছে সরকার। গত রোববার অর্থ বিভাগ থেকে জারি হওয়া এ বিধিমালায় প্রবাস (প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য), প্রগতি (বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য), সুরক্ষা (স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য) এবং সমতা (স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য) নামে পেনশন স্কিম চালুর কথা বলা হয়েছে। প্রবাসে থাকা যেসব বাংলাদেশি নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারাও এ স্কিমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। এসব স্কিমে চাঁদার হার কত হবে তাও নির্ধারণ করা হয়েছে। পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে একজন চাঁদাদাতা ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। তবে চাঁদাদাতা মারা গেলে তার নমিনি বা উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন চাঁদাদাতার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত। অর্থাৎ কোনো চাঁদাদাতা যদি ৬০ বছর বয়সে মারা যান, তা হলে তার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত অর্থাৎ ১৫ বছর তার নমিনি পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বিধিমালায় আজীবন পেনশনের ব্যাপারে অবশ্য স্পষ্ট কিছু বলা নেই।

অর্থ বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, উদ্বোধনের দিন থেকেই ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সি যে কেউ পেনশন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে ৫০ বছরের বেশি বয়সিরাও বিশেষ বিবেচনায় পেনশনভুক্ত হতে পারবেন।

গেজেটে বলা হয়েছে, ‘সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ (২০১৩ সালের ৪ নং আইন)-এর ধারা ২৯-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নিম্নরূপ বিধিমালা প্রণয়ন করা হলো। এই বিধিমালা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা, ২০২৩ নামে অভিহিত হবে। এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে। এই বিধিমালায় ব্যবহৃত যেসব শব্দ বা অভিব্যক্তির সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি, সেসব শব্দ বা অভিব্যক্তি আইনে যে অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে সেই অর্থে প্রযোজ্য হবে।’

প্রবাস স্কিম

বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক তফসিলে বর্ণিত চাঁদার সমপরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং তিনি দেশে প্রত্যাবর্তনের পর সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করতে পারবেন। প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে পেনশন স্কিমের মেয়াদ পূর্তিতে পেনশনার দেশি মুদ্রায় পেনশন পাবেন। ‘প্রবাস’ কর্মসূচিতে মাসিক চাঁদার হার ৫ হাজার, ৭ হাজার ৫০০ ও ১০ হাজার টাকা। এ কর্মসূচিতে মার্কিন ডলার, ইউরো, কুয়েতি দিনার, সৌদি রিয়াল ইত্যাদি মুদ্রায় চাঁদা দিতে হবে।

প্রগতি স্কিম

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা দিয়ে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মচারীদের জন্য এ স্কিমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার ৫০ শতাংশ কর্মচারী এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দেবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ স্কিমে অংশগ্রহণ না করলে, ওই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ‘প্রগতি’ কর্মসূচির আওতায় মাসিক চাঁদার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

সুরক্ষা স্কিম

অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিরা যেমন-কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা দিয়ে এ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। ‘সুরক্ষা’ কর্মসূচির আওতায় মাসিক চাঁদার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

সমতা স্কিম

সময় সময় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত আয়সীমার ভিত্তিতে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী আয়ের ব্যক্তিরা (যার বর্তমান আয়সীমা বার্ষিক সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা) তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা দিয়ে এ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। ‘সমতা’ কর্মসূচিতে মাসিক চাঁদা ৫০০ টাকা। এ কর্মসূচিতে সমপরিমাণ অর্থাৎ ৫০০ টাকা করে চাঁদা দেবে সরকার।

অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পেনশন কর্মসূচির আওতায় ঘরে বসেই চাঁদা দেওয়া যাবে। এ জন্য একটি অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। যারা সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসতে চান, তাদের আগে নিবন্ধন করতে হবে। ব্যাংকের পাশাপাশি নগদ, বিকাশসহ যেকোনো মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও চাঁদা পরিশোধের সুযোগ রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৮ বছর বয়সে এ স্কিমে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বেসরকারি খাতের কর্মচারী বা প্রবাসীরা তাদের ৪২ বছরের চাঁদার তুলনায় ১২ গুণ বেশি লাভবান হতে পারবেন। এ ছাড়া প্রগতি স্কিমের আওতায় বেসরকারি খাতের একজন কর্মচারী প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিলে মোট ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দেবেন।

৭৫ বছর বয়সে এসে তার মোট সরকারি পেনশনের পরিমাণ হবে মোট দেওয়া চাঁদার ১২.৩১ গুণ অর্থাৎ তিন কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার ৮৬০ টাকা। যদি পেনশনভোগী ৭৫ বছরের আগে মারা যান, তা হলে তার নমিনি সেই বয়স (৭৫) পর্যন্ত একই হারে পেনশন পাবেন। কোনো স্কিমের চাঁদাদাতা মাসিক পেনশন পাওয়ার উপযুক্ত হওয়ার আগেই মারা গেলে তার নমিনি বা নমিনিরা অথবা নমিনির অবর্তমানে উত্তরাধিকারী বা উত্তরাধিকারীরা মুনাফাসহ জমা করা অর্থ ফেরত পাবেন। নমিনির অবর্তমানে উত্তরাধিকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকারের সনদ বিবেচনায় নেবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অর্থসচিব বরাবর আপিল করার সুযোগ পাবেন। আপিল কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা এক বা একাধিক নমিনি মনোনয়ন করতে পারবেন। যেকোনো সময় একজন বা সব নমিনিই পরিবর্তন করে নতুন নমিনি মনোনয়নের সুযোগ থাকবে। চাঁদাদাতা বা পেনশনধারী মারা গেলে এবং তার মৃত্যুর পর নমিনি মনোনয়ন কার্যকর থাকলে পেনশনের অর্থ নমিনি পাবেন। তবে নমিনি নাবালক হলে পেনশনধারীর মৃত্যুর পর নমিনি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত নমিনির পক্ষে অর্থ তুলতে পারবেন চাঁদাদাতার মনোনয়ন বা নিয়োগ দেওয়া যেকোনো ব্যক্তি। তিনিই হবেন নাবালক নমিনির আইনসম্মত অভিভাবক। নমিনি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত ওই ব্যক্তি নাবালক নমিনির প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য হবেন।

কোনো স্কিমের বিপরীতে একাধিক নমিনি থাকলে এবং যেকোনো একজন নমিনি মারা গেলে এবং মৃত নমিনির বিপরীতে নতুন কোনো নমিনি মনোনয়ন না করা হলে জীবিত নমিনি বা নমিনিরা ওই স্কিমে উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য হবেন এবং স্কিমের অর্থ পাবেন। বিধিমালায় বলা হয়েছে, পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে কোনো চাঁদাদাতা যদি চাঁদা দেওয়ার জন্য অসমর্থ হয়ে পড়েন, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তির নমিনি বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারীর ওপর কর্মসূচির স্বত্ব ন্যস্ত করতে পারবে। তারা কর্মসূচিটি চালিয়ে নিতে পারবেন এবং মেয়াদ শেষে পেনশন ভোগ করতে পারবেন।

চাঁদাদাতা নিখোঁজ হয়ে গেলে নমিনি বা উত্তরাধিকারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করে পেনশন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে নিতে পারবেন। নিখোঁজ হওয়ার ৭ বছর পার হওয়ার মধ্যে চাঁদাদাতা ফিরে না এলে তার কর্মসূচিটি স্থগিত করা হবে। এ ছাড়া চাঁদাদাতা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসমর্থ হয়ে গেলে এবং অসামর্থ্যরে কারণে কর্মহীন ও উপার্জনে অক্ষম হয়ে পড়লে চাঁদাদাতাকে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হবে। তখন তাকে অসচ্ছল চাঁদাদাতা হিসেবে ঘোষণা দেবে পেনশন কর্তৃপক্ষ। চাঁদাদাতার অসচ্ছলতা নির্ণয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠিত হবে এবং অসচ্ছল হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর এক বছর পর্যন্ত চাঁদা না দিলেও পেনশন হিসাব স্থগিত হবে না।

পেনশন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। আপাতত অর্থ বিভাগের আওতাধীন সংস্থা হবে এটি। আইন অনুযায়ী জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য থাকবেন। এদের নিয়োগ করবে সরকার। সরকারের অনুমোদন নিয়ে এই কর্তৃপক্ষ নিজ নামে ঋণ নিতে পারবে। সম্প্রতি অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইজদানী খানকে এ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরেক অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফাকে সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পেনশন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে ইতিমধ্যে সচিবালয়ে পাঁচটি সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ।

সংস্থাগুলো হচ্ছে নির্বাচন কমিশন, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, সোনালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড।

গত ২৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন পাস হয়। আইন অনুযায়ী ১৬ সদস্যের একটি পেনশন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হবে। পর্ষদের চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী। সদস্য থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ও উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এর সদস্য হবেন। পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান।

আপাতত সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবেন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন বলে আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড;