স্থগিত থাকছে খালেদার চার মামলা, মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করতে হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল

স্থগিত থাকছে খালেদার চার মামলা, মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করতে হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল
স্থগিত থাকছে খালেদার চার মামলা, মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করতে হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ বছর আগে দারুস সালাম ও যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা নাশকতার চার মামলার কার্যক্রম স্থগিতই রেখেছে আপিল বিভাগ। এ চার মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ার আদেশ বাতিল প্রশ্নে হাই কোর্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদেন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেয়। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করা আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৪ সালের সহিংসতার ঘটনায় ২০১৫ সালে দারুসসালাম ও যাত্রাবাড়ী থানায় যখন এই মামলাগুলো হয়। তখন এফআইআরে তার নাম ছিল না। কারণ ঘটনার সময় তিনি গুলশানের কার্যালয়ে অন্তরীণ ছিলেন। কিন্তু অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় বেগম খালেদা জিয়ার নাম নাম যুক্ত করা হয়। ফলে আইন অনুযায়ী এই মামলাগুলো চলে না। অন্যদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা সিনিয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম গতকাল তাঁর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাহী আদেশে মুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। এখন মেয়াদ বাড়াতে সরকারের কাছে তাঁকে আবেদন করতে হবে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

২০১৭ সালে নাশকতার চার মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। হাই কোর্ট তখন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করে। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে যে আবেদন করেছিল, গতকাল সোমবার তার নিষ্পত্তি করে দিয়ে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। এই চার মামলাসহ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১১ মামলার শুনানির জন্য ৬ অক্টোবর তারিখ রয়েছে ঢাকার জজ আদালতে। এই ১১ মামলার মধ্যে দারুস সালাম থানার নাশকতার আট মামলা, যাত্রাবাড়ী থানার দুটি ও রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা রয়েছে। হাই কোর্টের আদেশে সবগুলো মামলার কার্যক্রমই স্থগিত রয়েছে বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

২০১৫ সালে বিএনপিসহ ২০ দলের ডাকা হরতাল-অবরোধের সময় বাসে আগুন, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, মানুষ হত্যাসহ বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় দুটি ও দারুস সালাম থানায় আটটি মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি দায়ের করা হয় ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয় সেখানে।

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয় বিএনপি প্রধানকে। সাজা স্থগিতাদেশের সেই মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। মেয়াদ শেষ হলে ফের কোথায় আবেদন করতে হবে এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গতকাল বলেন, যেহেতু সরকার নির্বাহী আদেশে তাকে আপাতত মুক্তি দিয়েছেন, মুক্তি বলবো না বাইরে থাকার অনুমতি দিয়েছেন। সুতরাং, এই সময়টা পার হলে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। এখানে আদালতের কোনো বিষয় না।

এদিকে খালেদার পারিবারিক সূত্র বলছে, সরকারের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডনে পাঠাতে চাচ্ছেন তারা। এজন্য সরকারের উচ্চ মহলে দেন-দরবারও করছেন। প্রয়োজনে তারা আবারও সরকার প্রধানের দ্বারস্থ হতে পারেন।