সীতাকুন্ডে সড়ক খুঁড়ে নির্মাণ কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

সীতাকুন্ডে সড়ক খুঁড়ে নির্মাণ কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
সীতাকুন্ডে সড়ক খুঁড়ে নির্মাণ কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

দীর্ঘ দেড় বছর আগে সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক খুড়ে নির্মাণ কাজ ফেলে উধাও হয়েছে ঠিকাদার। সড়কটি নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এলজিআরডি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান একে অপরকে দোষারোপ করলেও জনদূর্ভোগ লাঘবে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডস্থ পূর্ব বাকখালী শেখের হাট-হাজারী হাট সংযোগ সড়ক। বাকখালী খালের দু’পারের মানুষদের চলাচলের একমাত্র ভরসা এ সড়কটি উপজেলা সদরে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমও। কিন্তুু যুগের পর যুগ এ সড়কের বেহাল দশায় এখানকার বাসিন্দাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সড়কটির টেন্ডার হলেও সড়ক খুড়ে চলাচলের অনুপযোগী করে পালিয়ে যায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইমপালস ট্রেডার্স। এরপর প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও সড়কটির উন্নয়ন না হওয়ায় দূর্ভোগের শিকার এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে নানাভাবে চেষ্টা করে ইমপালস ট্রেডার্সের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও উপ-ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. জাফর বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতার কারণে কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি।

এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলা এলজিআরডি প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, সড়কটির টেন্ডার পেয়েছিলো ইমপালস ট্রেডার্স ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ব্যর্থতার দায়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জিকু’র ঠিকাদারি লাইসেন্স বাতিল ও জরিমানা করা হয়েছে। সড়কটি পুনরায় টেন্ডার হয়েছে, ভালো মানের ঠিকাদার পেলে টেন্ডার দেওয়া হবে। এসময় তিনি বর্ষা মৌসুমের আগেই সড়কটির কাজ শুরু হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অন্যদিকে সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম নিজামী বলেন, সড়কটির টেন্ডার হওয়ার পর কাজ শুরু হয়েছিলো কিন্তুু কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদার চলে যায়। এখন পুনরায় টেন্ডারের পথে সড়কটি। অনুমোদন হয়ে গেলে টেন্ডার হবে।

৪নং ওয়ার্ডের বাকখালী গ্রামের বাসিন্দা শেখ রাসেল বলেন, সড়কটি বহু যুগ ধরে কাঁচা মাটির সড়ক। টেন্ডার হওয়ার পর ঠিকাদার সড়ক খুড়ে চলাচলের অযোগ্য করে দিয়ে চলে যায়। এখন খুড়া সড়কে চলাচল করতে গিয়ে চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। আশা করছি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বর্ষা মৌসুমের আগেই সড়ক নির্মাণ করে আমাদের দূর্ভোগ লাঘব করা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী আবুল হক বলেন, আমি শারীরিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। উঁচু-নিছু আর বালির রাস্তায় হাটতে অনেক কষ্ট হয়। বর্ষাকালে ছেলে মেয়েগুলো বিদ্যালয়ে যেতে পারেনা। খালের পানি আর বিলের পানি একাকার হয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় রাস্তা। এলাকার অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পড়তে হয় সীমাহীন ভোগান্তিতে।

সড়কের বিষয়ে সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোতালেব মেম্বার বলেন, রাস্তার কাজ নির্দিষ্ট মেয়াদে শেষ করতে না পারায় কন্ট্রাকটর কাজ ফেলে চলে গেছে। এসময় নিজেও দূর্ভোগে পড়ার কথা উল্লেখ করে সড়কটির বিষয়ে পুরোপুরি অবগত নয় বলে জানান তিনি। বর্ষাকালে এ এলাকাটি পানিতে ডুবে যায় বলে যাতায়াতের কোন উপায় থাকেনা। বর্ষা আসার আগেই সড়কটি দ্রুত নির্মাণ করে এলাকাবাসীর দূর্ভোগ লাঘবের দাবি জানান এখানকার বাসিন্দারা।