সীতাকুন্ডে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নার্সারী পেশা, বিস্তৃতি লাভ করছে উপজেলা জুড়ে

সীতাকুন্ডে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নার্সারী পেশা, বিস্তৃতি লাভ করছে উপজেলা জুড়ে
সীতাকুন্ডে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নার্সারী পেশা, বিস্তৃতি লাভ করছে উপজেলা জুড়ে

নাছির উদ্দিন শিবলু, বিশেষ প্রতিবেদক , পোস্টকার্ডবিডি.কম ।।  

সীতাকুন্ড বেকার মাঝে জনপ্রিয়তা পেয়েছে নার্সারী পেশা। কম পূজিতে ভালো লাভের অংশ একটু বেশী হওয়ায় ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা জুড়ে বিস্তৃতি লাভ করছে পেশাটি। বেকারত্ব দুরীকরনে যুবকদের কাছে নার্সারী পেশাটি পছন্দনীয় হয়ে উঠায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে নার্সারী চারার চাষাবাদ।

সরকারী-বেসরকারী প্রনোদনা না থাকলেও সম্পূর্ন নিজস্ব অর্থায়নে পেশার স্থায়ীত্ব লাভে দিন-রাত খেটে চলছেন উদ্যোক্তারা। বালিযুক্ত মাটির সাথে জৈব ও রাসায়নিক সারের মিশ্রনে প্লাষ্টিকে মাটি ভর্তি সারিবদ্ধ সাজানো প্যাকেটগুলোতে নজর পড়তে জুড়িয়ে চোখ। বিশাল সমতল ভূমিতে বিছানো নানা রকমের গাছের সমারোহ হয়ে উঠে নিপুন শিল্পীর আঁকা সাজানো বাগান। শীতের শেষে বর্ষার আগমনীর পূর্বে বীজ বুননের সাথে চলতে থাকে বেড তৈরীর মাধ্যমে নার্সারী পরিচর্যা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রায় ২-৩ মাস ধওে চলে বনজী, ঔষুধী, ফুল-ফল ও কাঠসহ শত রকম গাছের বীজ বপনের পালা। নিয়মত্রান্তিকভাবে বপনকৃত বীজগুলো কয়েক মাসের মধ্যে আঙ্কুরোদগমিত হতেই সুখের হাঁসি জলজল করে চাষীর চোখে- মুখে।

সবুজ বনায়ন তৈরীতে বন বিভাগের পাশাপাশী উপজেলায় প্রায় ২০ নার্সারীতে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে কর্মে নিয়োজিত রয়েছে চাষীসহ কয়েক’শ শ্রমিক। মাটি ও সারের মিশ্রনকৃত পেকেটে বীজ লাগিয়ে চলছে কর্ম ব্যস্ততা। সারি সারি সাজানো প্যাকেটে  ফুল,ফল কাঠ ও ঔষুধী বীজ লাগানোর কয়েক দিনের মাথায় গজিয়ে উঠতে থাকে চারা গাছ। বীজ অঙ্করোধগমন হতেই চারা গাছ বাঁচিয়ে রাখার শুরু হয় তোড়জোড় মিশন। রাত-দিন সমান তালে পরিশ্রম করে চলে চারা বৃদ্ধির আপ্রান প্রচেষ্টা। এভাবে পরিচর্যায় চারাগাছগুলো ২-৩ ফুট উচ্চতা পেয়ে লাভ করে বিক্রি উপযুক্ততা। আর বর্ধিত গাছের চারাগুলো বিক্রির শুরুতে ঘরে সুখ হাঁসি ফিরে আসে বলে জানান চাষীরা।

চাষীরা বলেন,‘ প্যাকেটে মাটি ও সার মিশ্রিত করে বীজ তলা তৈরী করতে হয়। প্রায় ১’শ প্রজাতির ফুল-ফল, ঔষুধী ও কাঠের বৃক্ষের বীজ বপন করে চারা গজানো পর্যন্ত রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে সার্বক্ষনিক বীজ তলা পরিচর্যায় রাখতে হবে। সে সাথে আগাছা পরিস্কার করে সার-কিটনাশক ব্যবহার করে চারাগাছ বৃদ্ধি দিনরাত পরিশ্রমে লেগে থাকার পর পাওয়া যাই সুফল। লক্ষাধিক চারা উৎপাদনে পর্যাপ্ত জায়গার পাশাপাশি প্রয়োজন পড়ে লক্ষ টাকার যোগান। বর্ষা শেষে আগষ্ট হতে শুরুতে নার্সারীতে শুরু করতে হবে বীজ বপন। পরবর্তীতে নানা পরিচর্যা শেষে জুলাই- নভেম্বর মাস ধরে চলে  চারা বিক্রয়। প্রতিবছর চারা বিক্রয় করে খরচ পুষিয়ে প্রাপ্ত মুনাফায় সংসারের বরন পোষন চলে যাই। তবে সরকারী-বেসরকারী পৃষ্টপোশকতা পাওয়া গেলে নার্সারী পেশায় স্বাবলম্বি হতে বেশী সময় লাগবে না বলে জানান পর্দশনী নার্সারীর মালিক তপন। উপজেলা কৃষি দপ্তরের কাছ থেকে নার্সারী মালিকদের সহযোগীতার নির্দেশনা থাকলেও তা এড়িয়ে চলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ফলে পরামর্শের অভাবে অধিক লাভ হতে বঞ্চিত হতে হচ্ছে নাসারী মালিকদের।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা সুশান্ত সাহা বলেন,‘ সবুজ বনায়নে উপজেলা জুড়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে নার্সারীর চারা ব্যবসা। এ ব্যবসায় বহু বেকার লোকের কর্মসংস্থান তৈরী হওয়ায় কমেছে বেকারত্ব। যতবেশী নার্সারী ব্যবসা ততবেশী সবুজ বনায়ন এগিয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারী পৃষ্টপোষকতা প্রয়োজন হলেও তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।