সীতাকুন্ড ছলিমপুর সিডিএ রাস্তার বেহাল দশা

সীতাকুন্ড ছলিমপুর সিডিএ রাস্তার বেহাল দশা
সীতাকুন্ড ছলিমপুর সিডিএ রাস্তার বেহাল দশা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ছলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকা। রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে যাতায়াতের একমাত্র সড়কজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। পিচ উঠে গিয়ে ইট-সুরকি পর্যন্ত নেই। গাড়ি চলে হেলেদুলে। পায়ে হেঁটে চলাচল ও সম্ভব নয়। যানবাহন যেতে চায় না লক্কর-ঝক্কর সড়কটি দিয়ে। কিছু স্থানে গাড়ি থেকে নেমে ওই অংশ পার হতে হয় আবাসিক এলাকায় বসবাসকারীদের। প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের পুরোটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

একাধিকবার সিডিএ চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন নিবেদন করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন আবাসিক এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা। অথচ আবাসিক এলাকা থেকে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব নিচ্ছেন।

রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের পূর্বে ৩০ ফুট প্রসস্ত সড়কটি সম্পূর্ণ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার দুইপাশে ময়লা অবর্জনার স্তুপ। মহাসড়কের সংযোগ থেকে পুরো রাস্তায় রয়েছে খানা খন্দক। হেলেদুলে চলে গাড়ি। ফৌজদারহাট রেলস্টেশন ও জলিল গেইট যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। আবাসিক এলাকার ১২’শ ৮টি প্লটের বসবাসকারী এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। উন্নত সুযোগ সুবিধার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্লটগুলো বিক্রি করেছিলো। অথচ আবাসিক এলাকায় চলাচল রাস্তাটিও এখন দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। আবাসিক এলাকায় অবস্থিত স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পথের কাটা হয়েছে সড়কটি।

সিডিএ আবাসিক এলাকা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, সড়কটির দুর্দশা ও বেহাল অবস্থার কারণে সমস্যায় পড়তে হয় নামায পড়তে আসা মুসল্লিদের। আর একটু বৃষ্টি হলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা প্লটের মালিক আলহাজ্ব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কটি নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। যত ভোগান্তি চলাচলকারীদের। অথচ এই সড়ক দিয়ে স্কুল কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ ট্রেন যাত্রীরা স্টেশনে আসা-যাওয়া করে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ একাধিকবার সড়কটি মেরামত করার অনুরোধ জানান। তারা সিডিএ রোড হওয়ার কারণে সড়কটি সংস্কার করছেন না। আর সিডিএ কর্তৃপক্ষও তিন যুগ ধরে কোন সংস্কার করছে না। তিনি আরও জানান সন্ধ্যা হলেই রাস্তাটি চলে যায় অন্ধকার রাজ্যে। নেই কোন লাইটিং এর ব্যবস্থা।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ভাটিয়ারি ও জঙ্গল ভাটিয়ারি মৌজায় সিডিএ’র সিলিমপুর আবাসিক প্রকল্প অবস্থিত। ১৯৬০-৬১ এবং ১৯৮০-৮১ সালে দুই দফায় সিলিমপুর প্রকল্পের জন্য ১৯৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয় আশির দশকে। দু’দফায় প্রায় এক হাজার ২০০ প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে বাড়ানো হয় আরও ৭০টি প্লট। আবাসিক এলাকায় প্লট বাড়লেও বাড়েনি কোন সুযোগ সুবিধা।

ছলিমপুর সিডিএ কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আরজু খান বলেন, আশির দশকে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার পর রাস্তাগুলো নির্মাণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে আবাসিক এলাকার পরিধি বেড়েছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বসতি সংখ্যাও।

দীর্ঘ তিন যুগ পেরিয়ে গেলেও সংস্কার হয়নি সড়কগুলো। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে বারবার রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানালেও কোন প্রতিকার হচ্ছে না। রাস্তাগুলো এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তিনি রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবিও জানান সিডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, বিষয়টি আমাকে স্থানীয় প্লটের মালিকরা জানিয়েছেন। বর্তমানে ওই প্রকল্পের পিডি ছুটিতে আছে। তিনি ছুটি শেষে অফিসে আসলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।