সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধক বালু ও ঝাউগাছ হারিয়ে যাচ্ছে, প্রাকৃতিক রূপ হারাচ্ছে পারকি সৈকত

সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধক বালু ও ঝাউগাছ হারিয়ে যাচ্ছে, প্রাকৃতিক রূপ হারাচ্ছে পারকি সৈকত
সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধক বালু ও ঝাউগাছ হারিয়ে যাচ্ছে, প্রাকৃতিক রূপ হারাচ্ছে পারকি সৈকত

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।। 

আটকে পড়া জাহাজের কারণে পারকি সৈকতে জোয়ারের পানির ধাক্কায় গোড়া থেকে বালু সরে যাওয়ায় এমনিতেই হুমকির মুখে ঝাউবাগান। তার উপর রাতের আঁধারে নির্বিচারে ঝাউগাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। ফলে সারি সারি ঝাউগাছ, দীর্ঘ সৈকত, লাল কাকড়াসহ নানা কারণে সম্ভাবনাময় এই সৈকত দিন দিন তার প্রাকৃতিক রূপ হারাচ্ছে। এসব ঝাউগাছ দেখভালের দায়িত্বে থাকা বনবিভাগও বাগান রক্ষা বা বাগান সৃজন কোনটাতেই মনোযোগী নয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা যায়, পারকি সৈকতের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে প্রায় ৩০০ মিটার এলাকার বালু সরে গিয়ে সৈকত জুড়ে কাদায় পরিণত হয়েছে। গাছের গোড়া থেকে দুই-তিন ফুট পর্যন্ত বালু সরে গিয়ে শেকড় বেরিয়ে পড়েছে। উপড়ে পড়েছে কিছু কিছু ঝাউগাছ, পড়ে আছে গাছের গোড়া। কেটে ফেলা হয়েছে শতাধিক গাছ। কয়েক বছর ধরে এই অবস্থা চললেও গাছগুলো রক্ষায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, আনোয়ারা উপকূল রক্ষায় পারকি ও আশপাশের এলাকায় বনবিভাগ ১৯৯৩-৯৪ এবং ২০০২ সালে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৮০ হেক্টর জায়গায় ঝাউগাছ লাগায়। গাছগুলো বড় হতে থাকলে আস্তে আস্তে তা স্থানীয়দের কাছে ঝাউবাগান হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করে। আর্কিটেকচারাল পদ্ধতিতে লাগানো এ গাছ বড় হয়ে উঠলে পরবর্তীতে পারকি পর্যটন এলাকা হিসাবে রূপ নেয়। পারকির ঝাউবনে বসে একসাথে বহিনোঙরের জাহাজসারির আসা যাওয়া ও সৈকতের লাল কাঁকড়ার নাচন উপভোগ করা যায়। চট্টগ্রাম শহর থেকে দিনে এসে দিনে ফিরে যেতে পারায় পারকি সৈকত দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমান সরকার এটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এতে আকর্ষণীয় রিসোর্ট, আবাসিক হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র, পুলিশ ফাঁড়িসহ নানা সুযোগ সুবিধা থাকলেও সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধক বালু ও ঝাউগাছ হারিয়ে গেলে সরকারের এসব পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে বলে মনে করেন পর্যটকরা।

বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্‌ বলেন, সৈকত থেকে আটকে পড়া জাহাজ সরানো না হলে ঝাউগাছসহ আশপাশের এলাকা হুমকির মুখে পড়বে। ফলে বন রক্ষায় এখনি উদ্যোগ না নিলে পারকি সৈকত নিয়ে পর্যটন কর্পোরেশনের সব স্বপ্ন ম্লান হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এসএম গোলাম মওলা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও আটকে পড়া জাহাজের কারণে জোয়ারের পানির ধাক্কায় ঝাউগাছগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব গাছ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে আগে জাহাজ সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে, এখানে বন বিভাগের কিছু করার নেই।