ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি চলছে সীতাকুণ্ডে, প্রতিবাদে সোচ্চার ছাত্রলীগ

ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি চলছে সীতাকুণ্ডে, প্রতিবাদে সোচ্চার ছাত্রলীগ
ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি চলছে সীতাকুণ্ডে, প্রতিবাদে সোচ্চার ছাত্রলীগ

এম কে মনির, সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।

প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে গণপরিবহনে সরকার ঘোষিত ৬০% ভাড়ার নিয়মের তোয়াক্কা হচ্ছে না সীতাকুণ্ড উপজেলায়। এখানে নিয়মিত চলছে ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি। বিভিন্ন মহলের নানা সিদ্বান্তের পরও বন্ধ হয়নি এসব অনিয়ম। ফলে সীতাকুণ্ডে গণপরিবহনের যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে গিয়ে ঠেকেছে।প্রতিদিন সীতাকুণ্ডের ৮, ৭ ও ১৭ নং রুটে নানা অনিয়ম ও যাত্রী হয়রানির খবর আসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ৬০% নয় দ্বিগুণ ভাড়া আদায়,যাত্রীর সাথে দূর্বব্যবহার, সরকারি নির্দেশনা অমান্যসহ যাত্রীদের  নানাভাবে হয়রানি করছে এ রুটের চালক ও সাহায্যকারীরা।

ভাড়া নৈরাজ্যের বিষয়ে সীতাকুণ্ডের বিশিষ্ট শিক্ষক, সাংবাদিক, সংগঠক, চাকরীজীবি, ছাত্রসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের অভিযোগে ঝুঁড়ি ভরেছে বহু আগেই।সীতাকুণ্ডের প্রশাসন ও উপজেলা ছাত্রলীগ চেষ্টা করেও এ নৈরাজ্য বন্ধ করতে পারেননি।সকল নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় অব্যাহত রেখেছে পরিবহন শ্রমিকরা।

সম্প্রতি উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় এর  নির্দেশনা অনুযায়ী মালিক সমিতির সাথে যৌথ বৈঠকে ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।সেখানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করার কথা জানান মালিক সমিতি। তবে এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখেনি সীতাকুণ্ডবাসী।বরাবরই চালক -হেলফাররাদের গোড়ামি করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় ও অশ্লীল আচরণ বিদ্যমান রয়ে গেছে।

সম্প্রতি সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন মানুষের অভিযোগ লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়ে গেছে। তাদেরই একজন কণ্ঠ শিল্পী কিশোর দাস এর পিতা কেশব দাস দ্বিগুণ ভাড়া আদায় ও অশ্লীল আচরনের অভিযোগ করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতি সীতাকুণ্ড উপজেলার সদস্য সচিবের কাছে।অভিযোগের ভঙ্গিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  শিক্ষক সাদেকুল লিখেছেন সীতাকুণ্ডের উত্তরা বাসে দাঁড়ানো যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। পূর্ণ সিটে  যাত্রী নিয়েও ভাড়া দ্বিগুণ নিচ্ছে ৭,৮, ও ১৭ নং রুটের বাসগুলো।ওমর ফারুক  নামে একজন লিখেছেন তিনি সীতাকুণ্ড-শুকলাল হাট যাওয়ার উদ্দেশ্য ৮ নং রুটের চট্টমেট্টো-ছ ১১-০৮২৯ নাম্বার একটি গাড়িতে ওঠেন।নিয়মানুযায়ী ১৫ টাকা ভাড়া দিলে হেলফার তার সাথে বাক বিতন্ডায় লিপ্ত হয়।এসময় তিনি মালিক সমিতি বনাম ছাত্রলীগ অনুষ্ঠিত বৈঠকের বরাত টানলে ঐ চালক বলে উঠে এসব নেতা খাওয়ার টাইম নাই।যারা বৈঠক করছে তাদের বলেন গাড়ি চালাতে।শুধু এসব উগ্রবাদী আচরণ নয় মাঝেমধ্যে যাত্রীর শার্টের কলার ধরে টানাটানির ঘটনাও ঘটছে ৮ নং রুটে।

এমতাবস্থায় গণপরিবহনের এসব নৈরাজ্য থেকে পরিত্রাণ চান সীতাকুণ্ডবাসী।সীতাকুণ্ডের একাধিক ভুক্তভুগী বলেন,৮ নং ও ১৭ নং রুটের অনিয়ম কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না।প্রত্যেহ সকালে অফিসে যাওয়ার বেলায় এসব চালক-কন্ট্রাক্টরদের সাথে অহেতুক তর্কে লিপ্ত হতে হয়।আমরা সীতাকুণ্ডবাসী চাই সীতাকুণ্ডের সব রুটের সব যানবাহনে ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হোক।আর যেসব গাড়ির শ্রমিকরা অশ্লীল ও আপত্তিকর ব্যবহার করছে তাদের সনাক্ত করে তাদের রুট পারমিট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হোক।

এ বিষয়ে চালক সমিতির দায়িত্বশীল খোরশেদ আলম বলেন,সরকারি নির্দেশনা মানতে চালকদের নিয়মিত সচেতন করা হচ্ছে।  এরপরও কেউ কেউ অমান্য করলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।লাইনে কোন লাইনম্যান না থাকায়
বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।দ্রুত উপজেলা প্রশাসনের সাথ আলোচনাপূর্বক ভাড়ার তালিকা করে সমস্যা সমাধান করা হবে। তবে চালকরা খোরশেদ আলমের বিপরীত বক্তব্য দিয়ে বলেছেন আমাদেরকে সমিতি থেকে কিছুই বলা হয়নি।ভাড়ার বিষয়ে আমাদের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

ভাড়া নৈরাজ্যের বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের আহব্বায়ক শায়েস্তা খাঁন সাজু বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযোগ পাচ্ছি। চালকদেরও সচেতন করা হচ্ছে। আজও দ্বিগুণ  ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ছাত্রলীগ সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে।শীঘ্রই জনগণ এ হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পাবে বলে আশা করছি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ  সমিতি সীতাকুণ্ড উপজেলার সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার কামরুদ্দোজা বলেন, সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন মানুষ আমাদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ জানাচ্ছে।ইতিমধ্যে আমরা এসব গাড়িকে সনাক্ত করেছি। সনাক্তকৃত গাড়ির বিরুদ্ধে আমরা জেলা প্রশাসক ও ও হাইওয়ে এর নিকট অভিযোগ দাখিল করবো।এছাড়াও আমরা ভাড়া নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী  পালন করার কথা ভাবছি।