বিস্ফোরণের পর স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছে এলাকার সাধারণ মানুষ, পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ দল

বিস্ফোরণের পর স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছে এলাকার সাধারণ মানুষ, পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ দল
বিস্ফোরণের পর স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছে এলাকার সাধারণ মানুষ, পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ দল

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

অগ্নিদুর্ঘটনা ও বিস্ফোরণে সেদিন আশাপাশের মানুষ বিভিন্ন ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হন। এর মধ্যে শারীরিক ক্ষতি উল্লেখ্যযোগ্য। অগ্নিদগ্ধদের মতোই বিস্ফোরণের পর থেকে চোখ জ্বালাপোড়া, মুখ ফুলে যাওয়া এবং কাশির মতো স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন তারা।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের চোখ জ্বালা পোড়া করছে। কেউ বলেছে, মুখ ফুলে গেছে , আবার অনেকেই কাশি বা শ্বাস কস্টের মতো স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলেছেন। তবে ঠিক কতজন শারীরিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হননি কোন সংস্থাই। কিংবা এর মূল্যায়নও করা হয়নি।

এবার বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিদুর্ঘটনায় এখন জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি কেমন বিদ্যমান ওই এলাকাজুড়ে কিংবা ভবিষ্যতে রাসায়নিক এ দুর্ঘটনার কারণে কী ধরণের জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে? এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ, পরিবীক্ষণ এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে এবার সীতাকুণ্ডে এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম।

আজ শুক্রবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় বিএম কন্টেইনার ডিপোতে রাসায়নিক বিস্ফোরণের কারণে আশপাশের মানুষের কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, ভবিষ্যতে কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কেমন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের একটি দল। দুপুরে চমেক হাসপাতালে আসেন। রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম দলের নেতৃত্বে ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।

তিনি বলেন, রাসায়নিক বিস্ফোরণে কী ধরনেরর স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের একটি দল বিএম ডিপো ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছে।এসময় তারা জনস্বাস্থ্য বিষয়ে পর্যবেক্ষণ, পরিবীক্ষণ এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। এ বিষয়ে তথ্য হয়তো খুব শিগগিরই আমরা পাবো এবং আপনাদের জানাতে পারবো।

এছাড়া ডিপোতে দ্বগ্ধ ও আহত রোগীদের চমেক হাসপাতালে কিভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাও পর্যবেক্ষণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চপর্যায়ের দল। এ সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে রোগীদের চিকিৎসা বিষয়ে পরামর্শও দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের।

পরিদর্শন শেষে রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিএম ডিপোতে রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়েছে। আমাদের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখায় রেডিয়েশন হেজার্ট এবং কেমিক্যাল হেজার্ড বিষয়ে কাজ করি। এখানে রাসায়নিক বিস্ফোরণে কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে আমরা এসেছি। এছাড়া এই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়া রোগীদের চমেক হাসপাতালে কিভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তা দেখে যে অভিজ্ঞতা পাবো তাতে পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনায় যেন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো যায় সে বিষয়ে কাজ করবো আমরা।

স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চপর্যায়ের এ দলে ছিলেন রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. মো. সফিকুল ইসলাম, ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান।

আরও ছিলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সহকারী পরিচালক ডা. অনিন্দিতা শবনম কোরেশী, সহকারী পরিচালক ডা. মাহী উদ্দিন আহমেদ, ইভালুয়েটর ডা. ফাবলিনা নওশিন, ডাটা ম্যানেজার মো. রাকিবুল ইসলাম, বিসিআইসির ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি এন্ড হেলথ বিভাগের কেমিস্ট মো. জিয়াউল হক ও ডেপুটি চিফ মো. হুমায়ুন কবীর।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;