বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সীতাকুণ্ডে বন উজাড় , সেগুন গাছ জব্দ

বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সীতাকুণ্ডে বন উজাড় , সেগুন গাছ জব্দ
বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সীতাকুণ্ডে বন উজাড় , সেগুন গাছ জব্দ

পোস্টকার্ড নিউজ ।।  

অর্ধ শতাধিক মূল্যবান সেগুন গাছ সীতাকুণ্ড পাহাড় থেকে পাচারকালে অভিযান চালিয়ে আটক করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার দুপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম এই অভিযান পরিচালনা করেন । তবে অভিযানের সময় পালিয়ে যায় পাচারকারীরা । যদিও ঘটনাস্থলের মাত্র কয়েকশ গজ দুরেই রয়েছে একটি ফরেস্ট অফিস অথচ ঘটনার সময় রহস্যজনকভাবে নীরব ছিলেন বন কর্মকর্তারা ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের সরকারি। পাহাড়ের একটি অংশ চাষাবাদ করছিলেন বাড়বকুণ্ডের দাড়ালিয়া পাড়ার ছালে আহমেদ ড্রাইভারের ছেলে সেকান্দার। বাগানে রয়েছে শত শত সরকারি সেগুন গাছ।বৃহস্পতিবার রাতে সেকান্দার অন্তত ২৫/৩০ জন শ্রমিক নিয়োগ করে বাগানের বড় বড় অর্ধ শতাধিক সেগুন গাছ কেটে বিভিন্ন চক্রের কাছে বিক্রি করতে শুরু করেন। রাতে কয়েকটি ট্রাকে কাঠ পাচার হয় বাগান থেকে। কিন্তু কয়েকশ গজ দূরে থাকা বাড়বকুণ্ড ফরেস্টের বিট অফিস থাকলেও রহস্যজনক কারণে নীরবতা পালন করেছেন বন কর্মকর্তারা। ফলে সাহস পেয়ে তারা নির্বিচারে সেগুন গাছগুলো কেটে উজাড় করে ফেলে। বেশ কিছু মূল্যবান গাছ ট্রাকযোগে স্থানীয় একটি স-মিলে নিয়ে চিরে ফেলেছিলেন।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেও তারা গাছ কেটে একইভাবে নিয়ে যাবার সময় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের সহকারী। কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় পথিমধ্যে একটি কাঠ বোঝাই ট্রাক যেতে দেখে আটক করেন। এছাড়া পাহাড়ের ভেতরে গেলে দেখা যায়, কিছু দূর পর পর বড় বড় সেগুন গাছ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে অর্ধ শতাধিক সেগুন গাছ কাটা। হয়েছে বলে ধারণা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। গাছগুলো তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ ও ভূমি অফিসের কর্মীদের জিম্মায় রাখেন।

এদিকে, বাড়বকুণ্ড বন বিট অফিসের এত কাছে কিভাবে গাছগুলো কাটা হচ্ছে তা জানতে চাইলে এ এলাকার দায়িত্বে থাকা কুমিরার রেঞ্জ অফিসার মো. মকসুদ বলেন, এই গাছগুলো কাটার জন্য একটি চক্র আমাদের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলো। তাদের আবেদন যাচাই করে দেখি যেখানে গাছ আছে সেটি অন্য দাগের জায়গা। তাই আমরা তাদেরকে গাছ কাটার কোন অনুমোদন দিইনি। কিন্তু শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে চক্রটি এই গাছগুলো কেটে ফেলছিলো । যদিও অভিযোগ রয়েছে, বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই গাছগুলো কাটা হয়েছে । 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম জানান, পাহাড় থেকে সেগুন কাঠ কেটে পাচার করা হচ্ছে মর্মে খবর পেয়ে আমি অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানকালে কাঠ বোঝাই একটি ট্রাক আটক এবং পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে কেটে ফেলে রাখা বিশালাকার বেশ কিছু সেগুন গাছের টুকরো জব্দ করি। সব মিলিয়ে অর্ধ শতাধিক গাছ কেটে নিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।

ঘটনাস্থলের কাছে বন বিভাগের কর্মকর্তারা থাকার পরও তারা কেন এ বিষয়ে নীরব ছিলো সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

খালেদ / পোস্টকার্ড;