কষ্টে কাটছে সীতাকুণ্ডের নির্মাণ শ্রমিকদের দিন

কষ্টে কাটছে সীতাকুণ্ডের নির্মাণ শ্রমিকদের দিন
নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ নেই, কষ্টে কাটছে দিন

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক।।

দেশে লকডাউন উঠে যাওয়ার পরেও কাজ নেই সীতাকুন্ডের নির্মাণ শ্রমিকদের। দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় অভাবে দিন কাটাচ্ছে তারা। সংসারে অভাবের কারণে হন্য হয়ে কাজ খুঁজছে এসব শ্রমিকরা। কিন্তু করোনার এ মহাদুর্যোগে শুধু শ্রমিকরাই নয়, আর্থিক অনটনে আছে দেশের সকল মানুষ। ফলে কাজের সংকট আরো বেশি দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে অনেকে কাজ পেলেও সেগুলো ছিল দুই তিনদিনের অল্প কিছু কাজ মাত্র। 

আগের একজন শ্রমিক দিনে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা বেতনে কাজ করতো। এখন একজন নির্মাণ শ্রমিক কাজে নিতে ৪শ’ টাকায়ও রাজি হয় না কন্ট্রাকটররা। আগে অনেক মানুষ এসেও বায়না করতো। আর এখন সেটা একেবারেই নেই।

ইট টানার পাল্লা আর ঝুঁড়ি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ মধ্যম ও বৃদ্ধ বয়সের বসে থাকা একদল নির্মাণ শ্রমিকের সাথে সীতাকু-ের ফকিরহাট বাজারে কথা হয় । তারা বলেন, প্রতিদিনের মতই আজও কাজের জন্য বসে অপেক্ষা করছে তারা। এভাবে ভোর থেকে ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা শেষে আবার ফিরে যায় ঘরে। এটি শুধু আজকের চিত্র নয়, দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই এমন চিত্র দেখা যায়। শামসুল আলমের বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। ২ ছেলে থাকতেও এ বয়সে এমন কষ্টের কাজ করছেন তিনি। ২ ছেলেই বিয়ে করে স্ত্রীদের নিয়ে আলাদা সংসার করছেন। এদিকে দুই মেয়ে ও স্ত্রীসহ চারজনের সংসার তাকেই চালাতে হয়। এসময় তিনি বলেন, ‘তিন মাসেরও বেশি সময় কাজ নেই। এরমধ্যে ঘরে অভাবও দেখা দিয়েছে। পরিবার নিয়ে অনেকদিন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছি। আমার দুই মেয়েও পোশাক কারখানায় কাজ করে। অনেকদিন তাদেরও কাজ ছিল না। আমরা রাজমিস্ত্রিরা অনেক কষ্টে আছি। আমাদের কথা কেউ ভাবছে না। আজ দশদিনের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন মোড়ে বসে আছি কাজের আশায়। কিন্তু কেউ এসে জিজ্ঞাসাও করছে না’।

খোকন মিস্ত্রী বলেন, ‘আমার বাড়ি কুমিল্লায়। পরিবারের সবাই গ্রামেই থাকে। প্রতি মাসে তাদের জন্য টাকা পাঠাতে হয়। কিন্তু অনেক দিন কাজ না থাকায় বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছি না। বাড়িতে সবাই খুব কষ্টে আছে। তাই হন্য হয়ে কাজ খুঁজছি, কিন্তু পাচ্ছি না। শহরে আমি একাই থাকি। নিজের কাছে যে টাকা ছিল সেটাও বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। আবার মাঝখানে রিকশাও চালিয়েছি। এদিকে ঘর ভাড়াতো আছেই। আমরা ’রাজমিস্ত্রিরা’ খুব কষ্টে আছি ।