দুই লাখ পুলিশ সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই দায়িত্বে

দুই লাখ পুলিশ সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই দায়িত্বে
দুই লাখ পুলিশ সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই দায়িত্বে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

করোনাভাইরাসে সারা বিশ্ব নাস্তানাবুদ । মৃত্যুর মিছিল থামছে না। নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। এর বাইরে বর্তমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবেলায়ও বিভিন্ন দায়িত্বে যুক্ত করা হয়েছে তাদের। তবে পর্যাপ্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ (পিপিই) ছাড়াই এসব দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় দুই লাখ সদস্যকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা ২ লাখ ২ হাজার ১৭৯। এর মধ্যে ডিউটিরত রয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫২ জন। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এসব পুলিশ সদস্যকে বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তায়ও দায়িত্ব পালন করতে হয়।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবেলায় এরই মধ্যে দেশের সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের কার্যক্রম সীমিত করে এনেছে। তবে জরুরি সেবা বিবেচনায় পুলিশ সদস্যদের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে বাড়তি দায়িত্বও। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় বিদেশফেরত যাত্রীদের হাতে অমোচনীয় কালি দিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য সিল দেয়ার দায়িত্বটি পালন করছেন পুলিশ সদস্যরাই। পাশাপাশি এসব ব্যক্তির গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে গিয়ে হামলার শিকারও হতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের জন্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর কাছে যেতে হলে প্রয়োজনীয় পিপিই এখনো পাননি পুলিশ সদস্যরা।

যদিও করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এরই মধ্যে পুলিশের সব স্থাপনায় দর্শনার্থী প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ লাইনসসহ প্রতিটি ইউনিট নিয়মিত জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিশেষ নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে সদর দপ্তর থেকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, প্রাথমিকভাবে পুলিশ সদস্যদের জন্য সীমিত আকারে পিপিই সংগ্রহ করা হয়েছে। আরো বেশিসংখ্যক পিপিই সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই করোনাভাইরাস প্রতিরোধী প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণ সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর পুলিশের সব ইউনিটে করোনাভাইরাসসংক্রান্ত জরুরি স্বাস্থ্য বার্তা পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় করোনাভাইরাস সম্পর্কে আতঙ্কিত না হয়ে এ ভাইরাসের যাতে বিস্তার না ঘটে, সে বিষয়ে সচেতন হতে সব পুলিশ ইউনিটে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জরুরি স্বাস্থ্য বার্তায় বলা হয়েছে, কোনো পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি পুলিশের রয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্য জ্বর, কাশিসহ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে স্থানীয় পুলিশ হাসপাতাল বা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর নির্দেশনায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া সব বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালকে কোয়ারেন্টিন সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে।