ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষণের বিচার চেয়ে আজও উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষণের বিচার চেয়ে  আজও উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

ঢাবি প্রতিনিধি।।

ধর্ষণের বিচার চেয়ে আজও উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ধর্ষণের ঘটনায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রতিবাদ-স্লোগানে সরব রয়েছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে নেমেছে।

এসময় চোখে কালো কাপড় বেঁধে নির্মমতার প্রতীকী প্রতিবাদ করেছেন তারা। সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের মূর্তির চোখও ঢেকে দেয়া হয়েছে কালো কাপড়ে।

ধর্ষণের বিচার চেয়ে আজও উত্তাল ঢাবি

ধর্ষণের বিচার চেয়ে আজও উত্তাল ঢাবি

 

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে রোকেয়া হলের সামনে থেকে রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত আলপনা আঁকার কর্মসূচি শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেছেন। চারুকলার অনুষদের শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এ আলপনা আঁকা হচ্ছে।

অপরদিকে ধর্ষণের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মো. আখতারুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপি দেওয়ার পর রাজু ভাস্কর্যের পাশে তারা এক সমাবেশের আয়োজন করেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের  উদ্যোগে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে মৌন মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ধর্ষণের ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। ১৯৮৯ সালের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যদি পরিসংখ্যানগুলো দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে যে ধর্ষণের পরিমান দ্রুত গতিতে বাড়ছে। কিন্তু কয়েকটা ঘটনা বাদে কোনো ধর্ষককেই আমাদের বিচার ব্যবস্থা শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি। যা আমাদের বিচার বিভাগের ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে।  

একই বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, রোববার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাবির নিজস্ব বাসে রওনা দেন তিনি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামেন।

এরপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে নির্যাতনও করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে।

ধর্ষণের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি নিয়ে ঢামেকে আসেন। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।

এ ঘটনায় কুর্মিটোলা থেকে ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়াও ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ ছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পেয়েছে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহান হক গণমাধ্যমকে বলেন, মামলার এজাহারে মেয়েটিকে একজন ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।