জলবায়ু পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব

জলবায়ু পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব
জলবায়ু পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি ও খাদ্যের টেকসই ব্যবস্থাপণার ৫টি প্রস্তাব পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে ‘ফুড সিস্টেম অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন’ শীর্ষক প্লেনারি সেশনে তিনি এ ৫ প্রস্তাব দেন।

প্রস্তাব গুলোর মধ্যে রয়েছে-১.প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু-অভিযোজিত কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার প্রতি যথাযথ মনোযোগের সঙ্গে উন্নত দেশগুলোর জলবায়ু অর্থায়নে খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান। ২. জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থা সমন্বয় কেন্দ্রকে গবেষণা ও উদ্ভাবনে আন্তঃ সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞান-ব্যবস্থাপণা বাড়ানো প্রয়োজন। ৩. নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে খাদ্য ও সারের চাহিদা পূরণে বেসরকারি খাতকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন। ৪. বদ্বীপ এবং উপকূলের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে কার্যকর কৃষি-খাদ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব জোরদারের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। ৫.প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক খাদ্য ব্যবস্থার জন্য জোটকে সক্রিয় করার আহ্বান জানান। ২০২১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ এ বিষয়ে যৌথ-নেতৃত্ব দিতে সম্মত হয়েছিল।
 
সম্প্রতি বাংলাদেশের ‘গ্লোবাল মিথেন অঙ্গীকারে’ যোগদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করছি এই উদ্যোগের প্রধান পৃষ্ঠপোষকরা তাদের প্রতিশ্রুত আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসবেন। সরকার জি-২০ দ্বারা আন্তর্জাতিক বায়ো-ফুয়েল অ্যালায়েন্সের প্রস্তান অনুসরণ করে উন্নয়ন করছে। আমরা সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে সেচকে উৎসাহিত করছি, এমনকি ক্ষুদ্র কৃষকদেরও। সরকার ভাসমান কৃষি, ছাদ কৃষি, রান্নাঘর বাগান, হাইড্রোপনিক এবং অ্যারো-পনিক কৃষির সম্প্রসারণে প্রণোদনা ও সহায়তা প্রদান করছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বদ্বীপ এবং উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে কার্যকর কৃষি-খাদ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব জোরদারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘সবুজ বিপ্লবের’ ডাক দিয়েছিলেন। এখন সময় এসেছে ক্লাইমেট-স্মার্ট ‘কৃষি-খাদ্য বিপ্লবের’।

এ সেক্টরের রূপান্তরের আমাদের প্রকৃতিবান্ধব সমাধান এবং উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগ করা প্রয়োজন। জলবায়ু সংকটের কারণে আমাদের একটি টেকসই এবং রূপান্তরিত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে হবে। আর বিলম্ব না করে আমাদের অবশ্যই চিহ্নিত করতে হবে আমাদের এখন কী করা দরকার। খাদ্য নিরাপত্তা এখন জলবায়ু ন্যায়বিচারের সঙ্গে সম্পর্কিত। যথাযথ কৃষি কাজ ও কম গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ করে পশুপালন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপণার জন্য সবার সাশ্রয়ী প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা।

আধুনিক কৃষি-খাদ্য সরবরাহ চেইন বৈশ্বিক গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণে সবচেয়ে বেশি দায়ী হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উচিত খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবহার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপণায় বিনিয়োগ করা। এক্ষেত্রে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আন্তর্জাতিক জনমতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা।

এ প্লেনারি সেশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মৌরিতানিয়া প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ওউলদ গাজোয়ানি, তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইয়েদ, সামাও এর প্রধানমন্ত্রী ফিয়ামি নাওমি মাতাফা, ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তেনিও তাজানি, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক কিউ দোঙ্গিউ।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দফতরে জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

খালেদ /পোস্টকার্ড ;