পাপিয়ার পাপ কাজের সহযোগী চট্টগ্রামের মহিলা নেত্রী স্মৃতি!

পাপিয়ার পাপ কাজের সহযোগী চট্টগ্রামের  মহিলা নেত্রী স্মৃতি!

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নুর পাপিয়ার পাপ কাজের অন্যতম সহযোগী চট্টগ্রামের স্মৃতি নামের এক মহিলা যুবলীগ নেত্রী। পাপিয়ার গ্রেফতার হওয়ার পর স্মৃতির সাথে ঘনিষ্টতার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাপিয়ার সাথে স্মৃতির একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি চট্টগ্রামের গণমাধ্যম কর্মী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজরে আসলে যাতে কেউ সংবাদ প্রকাশ না করে টাকা পয়সা দিয়ে হউক অথবা যে কোন কিছুর বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্ঠা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার সময় ”দৈনিক সকালের সময়” ঢাকা থেকে এক অনলাইন টিভির সাংবাদিক দিয়ে নিউজ বন্ধ করার চেষ্ঠা করেন।

পাপিয়ার সহযোগী মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির বিরুদ্ধে মাদক, ইয়াবাসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালের দিকে নগরীর হালিশহর এলাকায় ৪ হাজার টাকায় ভাড়া বাসায় থাকলেও যথা সময়ে ভাড়া দিতে না পারায় জমিদার বাসা থেকে বের করে দেন। যুব মহিলা লীগের দায়িত্ব পাওয়ার পর রাতারাতি বনে যান গাড়ি, বাড়ি, কোটিপতি টাকার মালিক। মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির স্বামী মোহাম্মদ বেলালও তার স্ত্রীর অপকর্মের অন্যতম সহযোগী। স্মৃতির স্বামী বেলাল এর আগে একাধিক বিয়েও করছেন, চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের কমিটিতে মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির নাম চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের কোন নেতা প্রস্তাব না করলেও স্মৃতির নামটি যুব মহিলা লীগের কমিটিতে ঢুকে পড়ায় এ নিয়ে শুরু থেকে বির্তক ছিল। স্মৃতির গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলায় হলেও চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত না থেকেও পাপিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের কমিটিতে পদ পান পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মোস্তারি মোরশেদ স্মৃতি ঢাকায় পদ দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড, ইউনিট পর্যায়ের যুব মহিলা লীগের কর্মীদের ঢাকা নিয়ে যেতেন। পাপিয়ার মাধ্যমে বড় বড় নেতাদের সাথে পরিচয় করিয়ে পদ পাইয়ে দেয়া, প্রশাসনের লোকজন, শিল্পপতিদের সাথে সখ্যতা গড়া এবং বিভিন্ন অসমাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ অহরহ। এছাড়া যুব মহিলা লীগের নেত্রীদের ইয়াবা ব্যবসা করার জন্য সরাসরি প্রস্তাব দিতেন বলে একাধিক নেত্রীর অভিযোগ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আকতার মিতা (মিতা খান) বলেন, মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির নামটি কমিটিতে আসার পর আমরা সবাই হতভাগ হয়ে যায়, এরকম একজন বির্তকিত মহিলা নিয়ে কমিটির সবাই বিব্রত অবস্থায়, পাপিয়ার সাথে নিয়মিত সর্ম্পক রয়েছে গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত বিষয়টি অনেকের জানা ছিল না বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে নগর যুব মহিলা লীগের আহবায়ক অধ্যাপিকা সাইরা বানু রৌশনী বলেন, যুব মহিলা লীগকে আমি অনেক কষ্ঠ শ্রম দিয়ে চট্টগ্রামে দাড় করিয়াছি, যে মহিলার নাম চট্টগ্রাম থেকে কোন নেতা প্রস্তাব করেনি, অথচ অনেক নেতা যোগ্য, শিক্ষিত, ভাল পরিবারের একাধিক মেয়ের নাম প্রস্তাব করছিল তাদের নাম আসেনি, স্মৃতির মত একজন খারাপ মেয়ের নাম আসায় পুরো যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়কের মত পদে চলে আসায়  চট্টগ্রামে সাংগঠনিক কর্মকান্ড বিতর্কিত হয়ে পড়ছে বলে তিনি দাবি করেন।

পাপিয়ার সাথে সর্ম্পক ও ছবি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নগর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতি বলেন, পাপিয়ার সাথে ছবিগুলো ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের দাবি করেন, নিয়মিত সর্ম্পকও ছিল বলে জানান, সাবেক মহিলা এমপি তুহিনের মাধ্যমে পাপিয়ার সাথে সর্ম্পক স্থাপন হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে গ্রপিং ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে স্মৃতির বর্তমান স্বামীর বাড়ি এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাবের আহমদ বলেন, স্মৃতি নামের মেয়েটা আমরা কেউ আগ থেকে চিনতাম না, এলাকার এক ছেলের সাথে বিয়ে হওয়ার পর শুনতেছি নাকি এখন নেত্রী, স্মৃতির সাথে একদিন নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রয়াত সিটি মেয়র এ.বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর স্ত্রী হাসনিা মহিউদ্দীনকে দেখে আমরা অভাক হয়ে যায় এরপর থেকে শুনতেছি মহিলা যুবলীগ উনি।

উল্লেখ্য গত ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই  নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম চৌধুরীর মেয়ে অধ্যাপিকা সাইরা বানু রৌশনীকে আহ্বায়ক, নাজমা আক্তার মিতা, জাহানারা ছাবের, মোস্তারী  মোর্শেদ স্মৃতি, জুলেখা  বেগম পাপ্পীকে  যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কটিতে যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল স্বাক্ষরিত হলে সভাপতি নাজমা বেগমের স্বাক্ষরও ছিল না। এছাড়া সদস্যরা হলেন মমতাজ  বেগম রোজি, শামীম আরা লিপি, রিতা শেখ, সেলিনা আক্তার আসমানী ঝুমুর, হাফিজা  বেগম  বেবি, সোনিয়া আজাদ, জিন্নাত সুলতানা ঝুমা, সায়কা দোস্ত, জিন্নাত আরা খানম তারা, ফরিদা ইয়াসমীন,রুবা এহসান, ইসমত আরা  চৌধুরী, মিলি আক্তার, মোরশেদা পারভীন মিষ্টি, নায়না আফরীন পুষ্প, নাসরিন আক্তার মোহনা, আঞ্জুমান আরা বেগম, কানিজ ফাতেমা, ইসরাত জাহান, দিলশাত খানম  বেবী, আফসানা রহমান ও ফ্লু রাণীকে কমিটিতে রাখা হয়।