কাজ করার যোগ্য হয়েছি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে - পিয়া জান্নাতুল

কাজ করার যোগ্য হয়েছি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে - পিয়া জান্নাতুল

মোহাম্মদ তারেক ।।

পিয়া জান্নাতুল - মডেল ও অভিনেত্রী । কাজের মাধ্যমে দেশের বাইরেও নিজের গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করেছেন। যুক্ত আছেন আইন পেশায়। সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে দৈনিক সময়ের আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোহাম্মদ তারেক

মডেলিংয়ের শুরুর সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ের কী পার্থক্য চোখে পড়ে?
আমার মডেলিং ক্যারিয়ার প্রায় ১২ বছর হয়ে গেছে। যখন মডেলিং শুরু করি তার দুই বছরের মধ্যে দেখলাম দেশের সব বড় ব্র্যান্ডের কাজ করে ফেলেছি। এখন বড় আয়োজনে বিউটি পেজেন্টগুলো হচ্ছে, আমাদের সময়ে এমন করে হয়নি। আমার মনে হয় আমরা ভালো সময় পার করছি, আমাদের মেয়েরা বাইরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। তখনকার সময়ে আমরা চিন্তা করতেই পারতাম না আমরা বিদেশ গিয়ে কাজ করব, স্বপ্নটাই দেখতে পারতাম না। এখন আমাদের সাহস আছে। একটা সময়ে আমরা প্যারিসেও কাজ করতে পারব, মডেলিং সেক্টরটাকে ওই পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব।

মডেলিং সেক্টরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়?
কোনো ইন্ডাস্ট্রি একদিনে বদলায় না, সময় দিতে হয়। প্রত্যেকটি ইন্ডাস্ট্রির কিছু কান্ডারি থাকে, তাদের ভালো কাজের মাধ্যমে ধরে রাখতে হয়। সেটা না হলে ইন্ডাস্ট্রি নষ্ট হয়ে যায়। আমার মনে হয় না ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সে রকম কিছু হয়েছে। এটি ভালো অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার যোগ্য হয়ে উঠছি।

এই সময়ে পেশা হিসেবে মডেলিং বেছে নেওয়া সম্ভব?
অবশ্যই পারে। একটা ব্যাপার বলি, যদি আমার কাছে সি গ্রেডেরও একটি মুভির অফার আসে সেটি নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহ বেড়ে যায়। অন্যদিকে আমরা যে অন্য সেক্টরে ভালো ভালো কাজ করছি সেটি নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহ হয় না। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হওয়ার পর ফ্যাশন নিয়ে চিন্তার কথা আসে। আমরা হয়তো বিনোদন নিয়ে ভাবতে পারি, তারচেয়ে বেশি কিছু নয়। কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রি প্রস্তুত। কারণ বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো আমাদের এখানে এসেছে। তারা একেকটি ফ্যাশন শোয়ে ইনভেস্ট করছে। বড় অ্যামাউন্ট ইনভেস্ট করলেই ফ্যাশন ডিজাইনার, মডেল তৈরি হচ্ছে। এটা আমরা ওভারলুক করে যাই। সব মিলিয়ে আমার মনে হয় এ দেশে পেশা হিসেবে মডেলিং বেছে নেওয়ার সুযোগ আছে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট উপস্থাপনায় আমাদের অবস্থান কী?
বড় জায়গায় গেলে অনেক কিছু শেখা যায়। বাইরে গেলে নিজের পরিসরটাকে বেশ ছোট মনে হয়। দেশে এসে যখন কাজ করি তখন মানুষ অ্যাপ্রিশিয়েট করে। পাশাপাশি সমালোচনাও করে। আমার মনে হয় মানুষ অ্যাপ্রিশিয়েট করে বলেই কিছু মানুষ সমালোচনা করে। সব কিছু মিলিয়ে আমার মনে হয় তাড়াহুড়োর কিছু নেই। আমি করছি, ভবিষ্যতে অন্য কেউ করবে তখন একটা পরিবর্তন আসবে। কিন্তু সময় দিতে হবে, ধৈর্য্য ধরতে হবে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার যোগ্য হয়েছি

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার যোগ্য হয়েছি

সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক সময় নেতিবাচক আলোচনা দেখা যায়। বিষয়টা আপনি কীভাবে দেখেন?

এটা মানসিক ব্যাপার। কিছু কিছু জিনিস খুবই ব্যক্তিগত। যেমন আমার খুব মন খারাপ হলে বা রেগে গেলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বুঝিয়ে দেই না যা অনেকে দেয়। আমাদের দেশে মানুষ কোনটা ব্যক্তিগত রাখতে হয়, কোনটাকে হয় না এটা বুঝতে পারে না। আমি ধর্ম-কর্ম করব কি না বা আরেকজন ধর্ম পালন করবে কি না এটা তার নিজস্ব ব্যাপার। ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে ব্যাপারটি বুঝতে পারার কথা। আমাদের দেশে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেওয়ার মতো সময় অনেকেরই আছে। বাইরে সেটা নেই। এ দেশে কাউকে না চিনলেও দেখা যায় ১-২ মিলিয়ন ফলোয়ার হয়ে যাচ্ছে। আমি যেমন কাজ না থাকলেও অন্য কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখি। কাজ দিয়ে কিছু মানুষ এগিয়ে যাবে আর কেউ পিছিয়ে যাবে।
 

সম্প্রতি দুটো সিনেমার সঙ্গে আপনি যুক্ত হয়েছেন। সেগুলোর শুটিং কবে শুরু হতে পারে?
‘মাসুদ রানা’ জানুয়ারির দিকে শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ‘স্বপ্নবাজি’ ছবিটিও ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি হতে পারে। অর্থাৎ দুটো ছবির ডেট নিয়ে ক্ল্যাশ হতে পারে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার আলোচনা করতে হবে।

আপনি আইন পেশার সঙ্গেও জড়িত আছেন। এত কিছু কী করে সামলান?
এখন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে কাজ করছি। শিগগিরই গুলশানের কোনো ল’ ফার্মের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। আমার পক্ষে ছয় দিন ৬-৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া সম্ভব না যেহেতু অন্য পেশায় যুক্ত আছি। আমি প্রায়োরিটি দিয়ে কাজ করি। যখন মনে হয় এই কাজটা করা ইম্পোট্যান্ট, এটা থেকে ভালো আউটপুট পাব তখন সেই কাজটাই করি। অর্থাৎ ব্যালেন্স করে কাজ করি, না হয় এসব সামলানো যেত না।

- সময়ের আলো