এএসপি শম্পা রানী শাহা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন ছেলে কর্তৃক নির্যাতিত বৃদ্ধাকে 

এএসপি শম্পা রানী শাহা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন ছেলে কর্তৃক নির্যাতিত বৃদ্ধাকে 

উপজেলা প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড ।।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ছেলে তার বৃদ্ধা মাকে পিটিযে ঘর থেকে বের করে দিলে ঘটনাটি শুনে সেই হতভাগ্য মায়ের কাছে গিয়ে তাকে পরম শ্রদ্ধা-ভালোবাসা দিলেন সীতাকুণ্ডের সার্কেল এডিশনাল এসপি শম্পা রানী সাহা ও ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা। মায়ের যত্ন না নিয়ে আর কখনো নির্যাতনের কথা শোনা গেলে উচিত শিক্ষা দেয়া হবে বলে দু’জনেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে সেই বৃদ্ধার সন্তানকে সতর্ক করেছেন। উপজেলা পৌরসদরের ইয়াকুবনগর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পৌরসদরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ইয়াকুবনগর গ্রামের জরিপা বেগম নামক এক বৃদ্ধা বার্ধক্যজনিত কারণে ঘর ময়লা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছোট ছেলে জসীম উদ্দিন ও পুত্রবধূ তাকে মারধর করে। গত মঙ্গলবারের (১৩ অক্টোবর) এ ঘটনার পর বৃদ্ধা ঘটনাটি থানায় জানালে রাতেই সীতাকুণ্ড থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা সেখানে ছুটে যান। পরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন বার্ধক্যজনিত কারণে মা ঘর ময়লা করায় তাকে ছেলে ও পুত্রবধূ নির্যাতন করেছে। এ সময় পুলিশ ছেলেকে খুঁজলেও তাকে পাওয়া না যাওয়ায় পুত্রবধূকে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দেন। আজ বুধবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সীতাকুণ্ড সার্কেলের এডিশনাল এসপি শম্পা রানী সাহাও। তিনি বৃদ্ধা জরিপা খাতুনের জন্য এক মাসের নানারকম খাবার ও প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে দেন। পাশাপাশি তিনিও অভিযুক্ত ছেলের স্ত্রীকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন। পরে তারা ভবিষ্যতে মাকে যত্নে রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় এডিশনাল এসপি বৃদ্ধাটিকে শান্তনা দিলে সেই বৃদ্ধা মা-ও তাকে জড়িয়ে ধরে দোয়া করেন।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ডের ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, মা যদি বার্ধক্যজনিক কোন ভুলও করেন তাকে কোন কষ্ট দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে ছেলে যা করেছে তা অবশ্যই অন্যায়। ভবিষ্যতে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

সীতাকুণ্ডের এডিশনাল এসপি শম্পা রানী সাহা বলেন, এই বয়সে একজন মাকে নির্যাতনের কথা ভাবা যায়? এখন তাকে পরম সেবাযত্ন করতে হবে। কিন্তু তারা উল্টো অত্যাচার করেছেন বলে বৃদ্ধাটি জানিয়েছেন। এই কথা শুনে আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে ছেলের পরিবারকে কড়াভাবে বলেছি যেন এই মায়ের প্রতি আর কোন অত্যাচারের কথা না শুনি। এছাড়া তার প্রয়োজনে সামান্য কিছু সরঞ্জাম কিনে দিয়েছি। ভবিষ্যতে এভাবে পাশে থাকতে চাই। এই মা’টি ভালো থাকলেই আমরা খুশি।