আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন : শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন : শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন : শেখ হাসিনা

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

বংগবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি আজ আপনাদের কাছে এসেছি একটা উপহার নিয়ে। ‘আজ দইজ্জ্যার তল দিয়ে (নদীর নিচ দিয়ে) গাড়ি চলে- অর্থাৎ টানেল। ‘এই টানেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় দেশের ও আঞ্চলিক যোগাযোগে বিরাট ভূমিকা রেখে যাবে। এখন আর ঝড় বৃষ্টির অপেক্ষা করতে হবে না। নদীর তলদেশ দিয়ে এত বড় টানেল ধরে চলে যেতে পারবেন।’

আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো বাবা–মা, ভাই সব হারিয়েছি। আমার বাবা হত্যার বিচার করতে পারতাম না। কারণ ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল। জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পার্লামেন্টে বসিয়েছিলেন। সেদিন আমি আর রেহানা বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। তারপর ছয় বছর আমাকে দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। যখন দেশে ফিরে আসি তখন ওই খুনি আর যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় ছিল। বাংলাদেশে আমার ওপর বারবার হামলা হয়েছে, বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমি জীবনের মায়া করিনি। একটা কথা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ, যে মানুষের জন্য আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন, জেল জুলুম সহ্য করেছেন, জীবন দিয়ে গেছেন, সেই মানুষের ভাগ্যের আমি পরিবর্তন করবই। আমার একটাই কাজ, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। আর কোনো চাওয়া–পাওয়া আর নেই। আপনারা আমাকে সহায়তা করুন।

শনিবার আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ দেবে কিনা সেটা হাত তুলে দেখানোর আহ্বান জানান। সমবেত জনতা হাত তোলেন। এ সময় লাখো জনতার ‘নৌকা, নৌকা’ স্লোগানে মুখর হয় জনসভাস্থল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারাই আমার স্বজন, আপনারাই আমার আপনজন। আপনাদের কাছে নিবেদন, উন্নয়নের এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে। লুটেরা, সন্ত্রাসীদের হাতে যেন ক্ষমতা না যায়। বাংলাদেশকে যেন কেউ দাবায়ে রাখতে না পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কর্ণফুলী নদী; এখানে চট্টগ্রাম বন্দর। বারবার সিলটেশন (পলি জমা) হয়। যত ব্রিজ করব তত সিলটেশন হয়। তাই সিদ্ধান্ত হয় টানেল করে দেব। এই টানেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় দেশের ও আঞ্চলিক যোগাযোগে বিরাট ভূমিকা রেখে যাবে। এখন আর ঝড়–বৃষ্টির অপেক্ষা করতে হবে না। নদীর তলদেশ দিয়ে এত বড় টানেল ধরে চলে যেতে পারবেন। এই প্রথম। আগে এখান থেকে কঙবাজার যেতে অনেক সময় লাগত। এখন আর বেশি সময় লাগবে না। ঢাকা থেকেও সরাসরি যাওয়া যাবে। এশিয়ান হাইওয়ের সাথে আমরা যুক্ত হব। এই টানেল ভূমিকা রাখবে। যারা সংশ্লিষ্ট আর যারা দিন–রাত শ্রম দিয়েছেন সেই শ্রমিকসহ সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আজ যে উন্নয়ন, এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে কারণ নৌকা মার্কায় গত নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। নৌকা মার্কায় যতবার ভোট দিয়েছেন ততবার উন্নয়ন হয়েছে। গত ১৫ বছরে চট্টগ্রামে যত উন্নয়ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছি। চায়না ইকোনমিক জোন হবে গহিরায়। ঢাকা–চট্টগ্রাম হাইওয়ে, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার সড়ক প্রশস্তকরণ, মেট্রোরেল নির্মাণের সমীক্ষা চলছে। সফল হলে করে দেব। এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে করছি। চাক্তাই– কালুরঘাট মেরিন ড্রাইভের কাজ চলছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ২৫০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ করে দেব। বে টার্মিনাল করা হচ্ছে। একাধিক পানি শোধনাগার করেছি। স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ১১ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়েছে। দ্বিতীয় রিফাইনারির কাজ চলছে। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। ৩৫টি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাইটেক পার্ক, সফটওয়ার পার্ক, মিনি সেক্রেটারিয়েট করছি। দোহাজারী কঙবাজার রেললাইন উদ্বোধন হবে। শিগগিরই আমি কঙবাজারে যাব সেই রেললাইন উদ্বোধন করতে। রাঙামাটি পর্যন্ত রেললাইন করার চিন্তা আছে।

তিনি বলেন, মাতারবাড়িতে ডিপ সি পোর্ট হচ্ছে। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছি। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্য রাজধানী। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই সম্ভব হয়েছে এসব।

এর আগে গতকাল বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পতেঙ্গা প্রান্তে উপস্থিত হয়ে বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু টানেলের ফলক উন্মোচন করেন। মোনাজাতের পর টানেলের উদ্বোধনী মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী টানেল নিয়ে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। টোল দিয়ে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে আনোয়ারা প্রান্তে যান। প্রধানমন্ত্রী নিজেই টোল পরিশোধ করেন। বেলা ১২টা ৪৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থলে পৌঁছান। দুপর ১টা ৫৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জনসভা মঞ্চে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে আগত লাখো নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে বক্তৃতা শুরু করেন।

কোরিয়ান ইপিজেডের মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রায় ২২ মিনিট বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকায় বিএনপি–জামায়াতের কর্মসূচি নিয়ে টান টান উত্তেজনার মাঝে জনসভায় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী। এই বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। এটা হলো বাস্তবতা।

জনসভায় স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতাদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের নেতারা জীবন দিয়ে সংগ্রাম করেছেন। তাদের কথা বারবার স্মরণ হচ্ছে আজ। ৬১–৬২ সালে যখন চট্টগ্রামে আসি আজিজ কাকা (এম এ আজিজ) বলেছিলেন, পাকিস্তানিদের সাথে থাকব না। আমাদের স্বাধীন দেশ হবে। এই টাইগারপাস থেকে যুদ্ধ শুরু হবে। সেটাই হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকায় ভোট দিলে হয় উন্নয়ন আর বিএনপি করে দুর্নীতি, মানুষ খুন। এরা খুন করা ছাড়া আর কিছু জানে না। ক্ষমতায় গিয়ে ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে খুন করেছিল। এই চট্টগ্রাম দিয়ে দশ ট্রাক অস্ত্র এনেছিল। গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। আমরা যখন উন্নয়ন করি তখন ওই বিএনপি–জামায়াত ধংস করে। জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে ওই জিয়াউর রহমানসহ তারা জড়িত ছিল। তারা হত্যা ছাড়া কিছু জানে না। ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি লুটপাট করে। আমাকেসহ গ্রেনেড মেরে হত্যা করতে চেয়েছিল।

তিনি বলেন, আজকে বিএনপি সরকারের পতন ঘটাবে, নানারকম আন্দোলনের হুমকি দেয়। একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। ওই সমস্ত ভয়ভীতি আওয়ামী লীগকে দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। বরং খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল বলেই ১৫ ফেব্রুয়ারি তাকে বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে হটিয়েছিল। এটা তাদের মনে রাখা উচিত। বিএনপি–জামায়াত মানেই হচ্ছে খুনি, হত্যাকারী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ শান্তিতে বিশ্বাস করে, আওয়ামী লীগ উন্নয়নে বিশ্বাস করে।

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সাজার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ এতিমদের না দিয়ে এক ব্যাংকে রেখে দিয়ে সেই অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তার ছেলে তারেক রহমান বিদেশে পালিয়ে আছে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। আর কোটি কোটি টাকা মানি লন্ডারিং করেছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত, সে কারণে সে সাজাপ্রাপ্ত। একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যাচেষ্টা করেছে, সেই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। আর আমরা কি করছি? বয়স্ক ভাতা দিচ্ছি, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা নারী আর প্রতিবন্ধীদের ভাতা দিচ্ছি। শিক্ষা উপবৃত্তি দিচ্ছি। বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিয়ে বই উৎসব করছি। এখন দেশের সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছি। বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। গৃহহীনদের ঘর করে দিচ্ছি। জাতির পিতার বাংলায় একজন মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না, এটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রবাসী ব্যাংক করে দিয়েছি। জামানত ছাড়াই ঋণ পাচ্ছেন যুবকরা। তারা দালাল ছাড়াই মাত্র স্বল্প টাকায় বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি, সেখান থেকেও জামানত ছাড়াই ঋণ পাচ্ছে বেকার যুবকরা। এর মধ্যে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা। ইউক্রেন–রাশিয়ায় যুদ্ধ চলছে, স্যাংশন পাল্টা স্যাংশন। এখন আবার ইসরায়েলের ফিলিস্তিনের ওপর আক্রমণ। এজন্য জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য ১ কোটি মানুষকে কার্ডের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে পণ্য দেওয়া হচ্ছে। হতদরিদ্র প্রতিটি পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। করোনার সময় আমরা রিজার্ভের টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনে বিনামূল্যে মানুষকে দিয়েছি, যাতে কারও কষ্ট না হয়। সবাই যেন সুরক্ষিত থাকে সেই ব্যবস্থা করেছি।

তিনি টানেলের নির্মাণকাজ সময়মতো সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী থেকে শুরু করে দেশি–বিদেশি সকল বিশেষজ্ঞ, শ্রমিক–কর্মকর্তা সকলকে ধন্যবাদ জানান । চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, চীনের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংকে ধন্যবাদ জানাই। চীন সফরে গিয়ে উনাকে এই টানেলের কথা বলেছিলাম। আজ উদ্বোধন করেছি।

এদিকে টানেলের উদ্বোধনী পর্বে টানেলের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে সূচনা বক্তব্য দেন সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মনজুর হোসেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে যে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান সেটি বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও হোয়েন সেটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

শুভেচ্ছা বার্তায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে আমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিই। চীনের দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে এগিয়ে নেওয়াকে আমি আরো এগিয়ে নিতে ইচ্ছুক।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিসিসিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর হাতে বঙ্গবন্ধু টানেলের একটি রেপ্লিকা তুলে দেন। বঙ্গবন্ধু টানেল নিয়ে রচিত থিম সঙের সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। সেতু বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে একই মঞ্চে শুরু হয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের পরিচালনায় এসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা। মঞ্চে ডাক বিভাগের স্মারক ডাক টিকিট উন্মোচন করেন। এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব উপস্থিত ছিলেন। এরপর বঙ্গবন্ধু টানেলের উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় জনসভায় আরো বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, এম এ লতিফ, ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, নোমান আল মাহমুদ, মহিউদ্দিন বাচ্চু ও নিজাম উদ্দিন হাজারী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তার ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা, দিদারুল আলম, নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, সাইমুম সরোয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক ও জাফর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, কঙবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম, কঙবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল ও বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ সাহা।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, কঙবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, শাহজাদা মহিউদ্দিন, এস এম আবুল কালাম, অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ, সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেছানুল হায়দার চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার অ্যাডভোকেট মো. জহির, মোসলেহ উদ্দিন মনসুর, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, দক্ষিণ জেলার নুরুল আবসার চৌধুরী, মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ, বিজয় বড়ুয়া, টিপু সুলতান চৌধুরী, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, মাহমুফ সালাউদ্দিন চৌধুরী, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান, কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, ড. জমির উদ্দিন সিকদার, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুণ লুবনা, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র জহুরুল আলম জহুর প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর পর থেকে আনোয়ারা, অপরদিকে পতেঙ্গা থেকে জনসভাস্থল ছিল নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা গেছে উৎসবমুখর পরিবেশ।

জনসভা মঞ্চে শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দক্ষিণ জেলা, মহানগর ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ, আনোয়ারা, কর্ণফুলী থানা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। জনসভায় যোগ দিতে ভোর থেকে কেইপিজেড মাঠে ভিড় জমান চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো নেতাকর্মী ও নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ।আজাদী

খালেদ / পোস্টকার্ড ;