রাতের আঁধারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ডে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি!

রাতের আঁধারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ডে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি!
রাতের আঁধারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ডে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি!

এমকে. মনির।।  

গতকাল মঙ্গলবার (১০ মে) রাত সাড়ে এগারোটায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে চট্টগ্রাম থেকে ভোলাগামী হাজী এক্সপ্রেস নামের একটি বাসের চাকা ব্লাষ্ট হয়ে যায়। এসময় সড়কের পাশে থামিয়ে দ্রুত চাকা পরিবর্তনের কাজ সারছিল বাসটির চালক-সহকারী। এমন সময় ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে উল্টো দিক থেকে হাইওয়ে পুলিশের একটি গাড়ি এসে দূর্ঘটনা কবলিত বাসটির সম্মুখে থামে। এসময় পুলিশের গাড়িতে ৫ জন থাকলেও একজন কনস্টেবল নেমে এসে বাসের চালককে বলে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে তারা এসেছে। মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে চাকা নষ্ট হয়ে যাওয়া বাসটির কারণে। অথচ সে সময় কোন যানজটের লেশমাত্র ছিলোনা এবং ৯৯৯ কলের বিষয়টিও ছিলো সম্পূর্ণ ভুয়া। এমন বানোয়াট বার্তা দিয়েই বাসের চালককে কাগজপত্র দেখাতে বলে পুলিশের ওই সদস্য। এসময় চালক তড়িগড়ি করে কাগজপত্র দেখায়। পরে তার একটিমাত্র কাগজে ত্রুটি পেলে তাকে পুলিশ ভ্যানের নিকটে ডাকা হয়। বাসটির চালক সুজনের ভাষ্যমতে গাড়িতে বসা পুলিশের দায়িত্বশীল একজন (ন্যাম প্লেটে মাসুদ রানা) তাকে বললেন, তার বাসটি র‌্যাকার করা হবে, দ্রুত যেন র‌্যাকারের খরচ দিয়ে দেয়। তা না হলে ঝামেলা বাড়বে। এসময় ২ হাজার টাকা দাবি করে ওই পুলিশ সদস্য। না দিলে ধমক দিয়ে কাগজপত্র কেড়ে নেয়।

অন্যদিকে একই কায়দায় বালুবাহী একটি ড্রাম ট্রাককে থামিয়ে একজন কনস্টেবল একলাফে চালকের আসনে বসে পড়ে। পরে কাগজপত্র দেখাতে বললে ড্রাম ট্রাকের চালক তার গাড়িটির মান্থলি (পুশিকে মাসিক মাসোয়ারার বিনিময়ে সড়কে গাড়ি চালানোর অনুমতি) আছে বলে জানায়। এসময় কোন অফিসারের কাছে মান্থলি আছে জানতে চেয়ে ছুটে আসেন এসআই মাসুদ রানা। তিনি বলেন, মান্থলি থাকলে থাকুক। বালুবাহী ট্রাক, সাইড করো বলেই টাকার ইঙ্গিত দিতে থাকেন। ট্রাকটির চালক অনুনয়-বিনয় করে কিছু টাকা ও হাজী এক্সপ্রেস বাসের চালক টাকা প্রদান করার সময় দৃশ্যটি ধারণ করতে চাইলে সহকর্মী ফারহান সিদ্দিকের সাথে চরম দূর্ব্যবহার করে এসআই মাসুদ রানা। তাকে গলাধাক্কা দিয়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। গ্রেফতারের হুমকি দেয়। আমি দৌড়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করতে চাইলে আমার সাথেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে। পরে স্থানীয় জনতা ও বাসের যাত্রীদের রোষানলে পড়ে সবাই ন্যাম প্লেট খুলে ফেলে এবং স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

রাতের আঁধারে ঢাকা-চট্টগ্রামে দূর্ঘটনা কবলিত যানবাহন থেকে এভাবেই চাঁদা আদায় করে আসছে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ। যা নিত্য ঘটনায় রূপ নিয়েছে। কোন দায়িত্বশীল না হয়েও সাধারণ কনস্টেবল দিয়ে গাড়ির কাগজপত্র চেকিং, কথাবার্তা ছাড়া চালকের আসনে বসে পড়া, টাকা দাবি, ৯৯৯ এর নামে মিথ্যা বিভ্রান্তি ছড়ানো, কথায় কথায় গাড়ি ডাম্পিং করার হুমকি কোন আইনের আওতায় পড়ে?

রাতের আঁধারে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের সদস্যদের এমন কান্ডে পুলিশের ভাবমূর্তি আবারও ক্ষুন্ন হলো।

স্থানীয় জনসাধারণ ও বাসটির যাত্রীরা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে বিভাগের কারণেই পুলিশ শব্দটির বদনাম দিনদিন বাড়ছে। তাদের সব আচরণ অপেশাদার, অনৈতিক। - ফেসবুক থেকে ।

লেখক. সাংবাদিক ও সমাজকর্মী ;