রাজনীতিতে আমি এখন ওএসডি - এস এম গোলাম খালেক খালেদ

রাজনীতিতে আমি এখন ওএসডি - এস এম গোলাম খালেক খালেদ
আমি এখন ওএসডি - এস এম গোলাম খালেক খালেদ

রাজনীতির হাতেখড়ি ১৯৬৯ এ। সবে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তখন। পারিবারিক উত্তরাধিকারের সূত্র ধরে শৈশবেই আওয়ামী রাজনীতিতে প্রবেশ।

খুব মনে পড়ে- ইমাম নগর মডেল প্রাইমারীতে পড়তাম। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির সংবাদে আমি আর আমার সহপাঠীরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে পড়ি। স্কুলে মিছিল বের করি। শ্লোগান দিই- "জেলের তালা ভেঙ্গেছি, শেখ মুজিব কে এনেছি", "তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা"... কঁচি মুখে কত কি শ্লোগান!!

তারপর সত্তরের নির্বাচনে নৌকার ক্ষুদে কর্মী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নিজ পরিবারের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও ভূমিকা রাখা। ৭৪ সালে ফৌজদারহাট কে এম হাই স্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তখন আমি নবম শ্রেণিতে। এরপর ৭৫ এর পটপরিবর্তন। ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড ও ক্যূ- এর ঘটনায় জাতির জনক স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু শাহাদাত বরণ। অতঃপর বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপট। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ক্ষমতার স্বাদ নেয়া সুবিধাবাদীদের গা ঢাকা। সারা বাংলাদেশের মতো সীতাকুণ্ডের প্রতিটি জনপদেও আওয়ামিলীগ -বঙ্গবন্ধু নাম বলার লোকের অভাব। কি দূঃসহ স্মৃতি!!!!!

নিজের সম্ভাবনাময় কৈশোর ও তারুন্যকে জ্বলাঞ্জলি দিয়ে সংগঠনকে পূর্ণগঠনে আত্মনিয়োগ করেছিলাম। কতবার যে নিশ্চিত মৃত্যুর দুয়ার থেকে যে ফিরে এসেছি, তা বলাই বাহুল্য। এ জনপদে পারিবারিকভাবে শতভাগ আওয়ামীলীগ করতো একমাত্র সৈয়দ পারিবার-ই। তাই আমরাই সবসময় বিএনপি-জামাতে লক্ষ্যবস্তু ছিলাম।

সত্তর দশকের শোষে সলিমপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক, ৮৮ তে সীতাকুন্ড থানা আওয়ামীলীগের সদস্য, ৯২ তে সলিমপুর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক..... তারপর ওএসডি??? মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই সংগঠনের নেতৃত্বে অপাংক্তেয় হয়ে পড়ি। আর কখনো নেতৃত্বের বিবেচনায়ও আসিনি। কিন্তু তারপরও দলকে শেষ অবধি দিতে ভুল করিনি কখনো। যারা এখন জেলা-উপজেলায় নেতৃত্বে, তাদের প্রায় বেশীর ভাগই রাজনীতিতে আমার জুনিয়র।

এখনও ভাবি -আওয়ামীলীগ হয়তো আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে- প্রতিহিংসার শিকার হয়তো, কিন্তু আমি কখনো আমার প্রিয় সংগঠনকে বিমূখ করতে পারিনা। পদলেহণ করতে পারিনি বলেই আজ আওয়ামী রাজনীতিতে সারারন সদস্যপদও নেই আমার। বাহ্ চমৎকার!!!

তোমরা যারা আজ আমার মতো আওয়ামী রাজনীতির ফেরিওয়ালাকে পেছনে ফেলে নেতৃত্ব পেলে- তোমাদের /আপনাদের অভিনন্দন। অনেক কষ্টে বাঁচিয়ে রাখা এ সংগঠনকে আপনারা আগলে রাখবেন-তাহলে মরণের পরও আমার মতো যারা আছে তাদের আত্মা শান্তি পাবে।

আল্লাহ হাফেজ
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু