বুয়েটের আবরার হত্যা: শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

বুয়েটের আবরার হত্যা: শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিতে  বিক্ষোভ
বুয়েটের আবরার হত্যা: শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ

‘আবরার, আবরার’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস (আবরার হত্যার বিচার চাই)।’

আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই স্লোগানে প্রকম্পিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। সকাল সাড়ে ১০টায় বুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। শেরে বাংলা হলের পেছন দিয়ে ঢুকে ডা. এম এ রশিদ হল পার হয়ে শেরে বাংলা তারা বুয়েট ক্যাম্পাস ও হল থেকে ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাস’ বন্ধের দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনবিরোধী স্লোগানও দিচ্ছেন তারা।

এর মধ্যে রয়েছে— ‘খুনীদের ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই’, ‘প্রশাসনের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ভিসি তুই নিরব কেন, জবাব চাই, দিতে হবে’, ‘আমার ভাইকে মারলি কেন? জবাব চাই দিতে হবে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’। পরবর্তীতে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা পলাশীর মোড়ে অবস্থান নেবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, বিক্ষোভকারীরা আবরারের খুনীদের বিচার সহ বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো:

*খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
*৭২ ঘন্টার মধ্যে নিশ্চিতভাবে সনাক্তকৃত খুনীদের সকলের ছাত্রত্ব আজীবন বহিঃস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
*দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।
*বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কেন ৩০ ঘন্টা অতিবাহিত হবার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি তা তাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকাল ৫ টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সাথে ডিএসডব্লিউ কেনো ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন তা উনাকে আজ বিকাল ৫ টার মধ্যে সকলের সামনে জবাবদিহি করতে হবে
*আবাসিক হলগুলোতে র‍্যাগের নামে এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের উপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সাথে আহসানউল্লা হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল ১১ নভেম্বর,২০১৯ তারিখ বিকাল ৫ টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
*রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ বিকাল ৫ টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
*মামলা চলাকালীন সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।

রোববার (৬ অক্টোবর) মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহত আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়।সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহতের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েক জনকে অভিযুক্ত করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।