১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামে পাঁচ ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেফতার

১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামে পাঁচ ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেফতার
১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামে পাঁচ ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারি খাস জায়গার ভুয়া দলিল তৈরি করে তা ব্যাংকে বন্ধক রেখে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পাঁচ ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে । মঙ্গলবার রাতে নগরীর আগ্রাবাদ বাদামতল মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এরা সবাই যমুনা ব্যাংকের সীতাকুন্ড ভাটিয়ারী শাখার সাবেক কর্মকর্তা।

দুদক জানায়, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলো , যমুনা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার এভিপি মো. রায়হান, ভাটিয়ারী শাখার সাবেক এভিপি গোলাম সারোয়ারুল হক, সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার সাহাব উদ্দীন, সুব্রত বড়ুয়া, মো. ইউসুফ চৌধুরী। প্রথমজন ছাড়া বাকিরা এখন অন্য ব্যাংকে কর্মরত।

 

দুদক আরো জানায়, ২০০৬ সালে ভাটিয়ারীর শীতলপুর এলাকায় সরকারের ৫৪.৬৯ শতক জমি যমুনা ব্যাংকের ভাটিয়ারী শাখায় বন্ধক রাখেন নগরীর ডবলমুরিং এলাকার নুর চেম্বার নামে একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সরকারি জমি বন্ধক রাখার নিয়ম না থাকলেও ব্যাংকটির তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আজমসহ সাত কর্মকর্তার যোগসাজশে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৮ টাকা ঋণ পাইয়ে দেন। এসব টাকা পরিশোধের নির্ধারিত সময় থাকলেও তা না করে বরং এই সাত কর্মকর্তাসহ ১২জন মিলেই সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন। যার বিষয়ে ২০১৬ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকে একটি অভিযোগ পাওয়া যায়।

২০১৬ সালে অভিযোগ দাখিলের পর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এ অনুসন্ধানের জন্য পাঠানো হয়। পরে দুদকের তিন

সদস্যের গঠিত টিম দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পায়। এ বিষয়ে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদি হয়ে অর্থ আত্মসাতের দায়ে গত রবিবার মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হয়। ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাকিরা হলেন : ব্যাংকটির তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আজম, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, গ্রাহক নুর চেম্বারের স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, তার ভাই মো. মজিবুর রহমান মিলন, সীতাকুন্ডের সলিমপুর এলাকার মৃত মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিন কুসুম, কদমরসুল এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে মো. আজাদ রহমান, একই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ জানে আলম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন পূর্বকোণকে বলেন, ‘পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে এবং প্রতারণা মূলকভাবে ভুয়া রেকর্ডপত্র ব্যবহার করে এসব টাকা আত্মসাৎ করেন। যার বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যহত আছে’।

 

সরকারি খাস খতিয়ানের ৫৪ দশমিক ৬৯ শতক জমি ভুয়া দলিল তৈরি করে ব্যাংক থেকে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৫ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে সীতাকুন্ড থানায় মামলা করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম।