সীতাকুণ্ডের সওজের জায়গা এখন কবির ষ্টীলের দখলে 

সীতাকুণ্ডের সওজের জায়গা এখন কবির ষ্টীলের দখলে 
সীতাকুণ্ডের সওজের জায়গা এখন কবির ষ্টীলের দখলে 

সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) জায়গা দখলে নিয়ে দেয়াল দিয়েছে কেএসআরএম।

জানা যায়, সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কেএসআরএম গ্রুপের একটি ওয়্যার হাউস রয়েছে। ভবনের সামনে ও পাশে অন্তত ২০ শতক জায়গা দখলে নিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকার জনগণের প্রতিবাদও ঠেকাতে পারেনি জায়গা দখল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকাবাসীর দাবি আদেশ উপক্ষো করে কয়েক ধাপে স্থাপনা নির্মাণ করে জায়গা দখলে নেয় কেএসআরএম। একই সঙ্গে পাশের দুটি খাল ভরাট ও একটি খালের ওপর স্লাভ বসিয়ে খালের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্ষায় পুরো খাদিমপাড়া এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের দাবি, সড়কের পাশের কিছু জায়গা অবৈধ দখল ঠেকাতে ফুলের বাগান করা হয়েছে।

জায়গা দখল করে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ দেয়াল দিয়েছে অভিযোগ করে সেটি সরিয়ে নিতে নোটিশ জারির কথা জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন। স্থানীয় চেয়ারম্যানের অভিযোগ, কেএসআরএম স্থাপনা নির্মাণের সময় সওজকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল; তখন আপত্তি না করায় নির্বিঘ্নে কাজ চালিয়েছে কেএসআরএম।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের ওয়্যারহাউসটি সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাদিমপাড়ার সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগুয়া। উত্তরে মাদামবিবির হাট এবং দক্ষিণে ভাটিয়ারি বাজার। মহাসড়কের পূর্বপাশে পাঁচ থেকে ছয় ফুট পেছন থেকে অন্তত ১০ ফুট জায়গা লোহার কাঠামো ও তার দিয়ে ঘেরাও করা। সেখানে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চারা লাগানো হয়েছে। এর দক্ষিণ পাশের প্রবেশপথে লোহার গেট। গেটের দক্ষিণ পাশের জায়গায় ফুলের চারা ও বিভিন্ন ধরনের সজবির চাষ করা হয়েছে। ফুল ও সবজি ক্ষেতের শেষ সীমানায় উত্তর-দক্ষিণ করে দেয়াল দেওয়া হয়েছে। দেয়ালের ভেতরের অংশে ১২ থেকে ১৪ শতক জায়গা খালি দেখা গেছে। খালি জায়গার পরই ওয়্যার হাউসের (উত্তর পাশে) মূল কাঠামো রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন বলেন, সড়কের পাশের ফুল-সবজি ক্ষেত থেকে শুরু করে দেওয়ালের ভেতরের পুরো খালি জায়গা অবৈধভাবে দখল করেছে কেএসআরএম। এ ছাড়া খাদিমপাড়া থেকে আসা দুটি খাল কেএসআরএম ওয়্যার হাউসের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। দুটি খাল ভরাট করে নালায় পরিণত হয়েছে। আবার ওই নালার ওপরে স্ল্যাভ দিয়ে সেই জায়গাও ব্যবহার করছে কেএসআরএম।

স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, জায়গা দখলের সময় আমরা প্রতিবাদ করে কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্তু সওজ জোরালো আপত্তি করেনি। তাই ১৮ থেকে ২০ শতক জায়গা তারা দখল করেছে। খাল ভরাটের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে ভরাট নয়; দুই পাশে দেয়াল দিয়ে ওপরে স্ল্যাভ বসিয়ে জায়গাটা ব্যবহার করছে।

সওজের তথ্যমতে, ওয়্যার হাউসের সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে ১৫ থেকে ২১ বর্গফুট জায়গা সওজের মালিকানাধীন। সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্বাপাশের ৫ ফুটের মধ্যেই কেএসআরএম বেড়া দিয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন বলেন, বাগান ও ওয়্যার হাউসের দেয়াল সওজের জায়গায়। জায়গা ছেড়ে দিতে নোটিশ জারি করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে আদেশ দিয়েছি।

কেএসআরএম’র ব্যবস্থাপক (ভূমি) মোহাম্মদ কামাল বলেন, ওয়্যার হাউসের সামনে কিছু জায়গা সওজের। দেয়ালের ভেতরে সওজের কোনো জায়গা নেই। সরকারি জায়গার ওপর এভাবে সবাই বাগান করেছে। আমরা বাগান না করলে জায়গাটা বেদখল হয়ে যেত।

খালেদ /পোস্টকার্ড ;