সীতাকুণ্ড বিএনপির কোন্দল চরমে, পাল্টাপাল্টি কমিটি

সীতাকুণ্ড বিএনপির কোন্দল চরমে, পাল্টাপাল্টি কমিটি
সীতাকুণ্ড বিএনপির কোন্দল চরমে, পাল্টাপাল্টি কমিটি

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

কোন্দল চরমে উঠেছে সীতাকুণ্ড পৌর বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে । কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযােগ তােলায় কারণ দর্শানাের নােটিশ দেওয়া হয়েছে তিন নেতাকে। পরে একাংশের নেতারা পাল্টা কমিটি ঘােষণা করেছেন। তারা বিতর্কিত আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের শাস্তির দাবি জানান। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা বিএনপি। 

একাংশের নেতাকর্মীদের অভিযােগ, ত্যাগী ও যােগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে পৌর বিএনপির ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাতটির কমিটি করা হয়েছে । সদস্য সচিব ছালে আহম্মদ ও জ্যেষ্ঠ সদস্য শামছুল আলম আজাদের যােগসাজশে নিজেদের পছন্দমতাে নেতাদের দিয়ে ফেসবুকে কমিটির ঘােষণা দিয়েছেন। কমিটিগুলাে উত্তর জেলা আহ্বায়ক গােলাম আকবর খােন্দকারের নাম ভাঙিয়ে পৌর আহ্বায়ক জাকির হােসেনের কাছ থেকে অনুমােদনও করিয়ে নিয়েছেন। তবে গােলাম আকবর বিষয়টি জানার পর অনুমােদন আটকে দেন।

পৌর বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হােসেন বলেন, তার বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে এসে সদস্য সচিব ছালে আহম্মদ ও কমিশনার আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন নেতা কৌশলে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কমিটিতে স্বাক্ষর নিয়েছেন। তাঁরা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গােলাম আকবর খন্দকারের দোহাই দেন। সামাজিক যােগাযােগমাধ্যমে কমিটি গঠনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করায় বিএনপির তিন নেতাকে কারণ। দর্শানাের নােটিশ দিয়েছে পৌর কমিটি। তারা হলেন- বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মােজাহের উদ্দিন আশরাফ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মােহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খােরশেদ আলম।তিনজনই পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। নােটিশের জবাব ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছিল। সে সময়সীমা রােববার শেষ হয়েছে। তবে এর জবাব ওই তিন নেতা দেননি।

এরই মধ্যে পৌর বিএনপির একাংশ শনিবার বিকেলে পৌর কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযােগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবে। এতে নােটিশ পাওয়া তিন নেতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পৌর যুবদলের সদস্য সচিব জিয়া উদ্দীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মামুন রেজা চৌধুরী, সীতাকুণ্ড ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশরাফ জিকু, সদস্য সচিব শাকিল ভূইয়া প্রমুখ ।

মােজাহের উদ্দীন আশরাফ বলেন, কারণ দর্শানাের নােটিশ ফেসবুকে প্রচার করে তাদের সম্মানহানি করা হয়েছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে হাইকমান্ডের কাছে দাবি জানান। এ সময় ঘােষিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পাল্টা পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘােষণা দেন তিনি।

এ বিষয়ে পৌর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, কমিটি নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। সদস্য সচিব মাে. ছালে আহম্মদ বলেন, সংগঠনবিরােধী কার্যক্রম করায় তিনজনকে কারণ দর্শানাের নােটিশ দেওয়া হয়। রােববার নােটিশের জবাব দেওয়ার শেষ দিন হলেও তারা দেননি। তাদের বিরুদ্ধ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাল্টা কমিটি ঘােষণা দেওয়ার এখতিয়ার তারা রাখেন না। এটি অবৈধ ও সংগঠন পরিপন্থি কাজ। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গােলাম আকবর খােন্দকার বলেন, বেশ কয়েকটি অভিযােগ এসেছে। পৌরসভা থেকে আনা কমিটি এখনও জেলা অনুমােদন দেয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

খালেদ / পোস্টকার্ড ;