সীতাকুণ্ডে ডিপো নির্মাণে প্রতিবাদ, এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ!

সীতাকুণ্ডে ডিপো নির্মাণে প্রতিবাদ,  এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ!
সীতাকুণ্ডে ডিপো নির্মাণে প্রতিবাদ, এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ!

পোস্টকার্ড ডেস্ক।।

সীতাকুণ্ডের গ্রামের ভিতর কন্টেইনার ডিপো নির্মাণের প্রতিবাদ করায় গণহারে চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত হলো এলাকাবাসী। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নুরুল আলম চৌধুরী গণ্যমান্য ১৭ জনের বিরুদ্ধে নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানান, গামারীতলা গ্রামের ভিতর আলহাজ মোস্তফা হাকিম প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গামারীতলা জামে মসজিদের সাথে লাগোয়া ২ একর ৬২ শতক জায়গায় কন্টেইনার ডিপো স্থাপনের উদ্যোগ নেন নুরুল আলম চৌধুরী নামে এক প্রভাবশালী। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী, অভিভাবক, মসজিদের নিয়মিত নামাজি ও এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদ স্বরূপ বিগত ১১ আগস্ট চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সীতাকুণ্ড থানার ওসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। এছাড়াও পরদিন শত-শত শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করে। একই দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ও সীতাকুণ্ড থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।

শনিবার (২০ আগস্ট) সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীসহ এলাকার অন্তত কয়েকশত মানুষ জড়ো হয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মোস্তফা হাকিম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহরম আলী বলেন, ‘ডিপোর সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কারণে বিদ্যালয়ের কক্ষগুলোতে আলো-বাতাস প্রবেশ একদম বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে শ্রেণীকক্ষে বসা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে আসতে দিচ্ছেননা।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ও সবুজ শিক্ষায়তন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবুল আলম বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কন্টেইনার ডিপো নির্মাণের বিরোধীতা করছে এলাকার সাধারণ জনগণ। এখানে ডিপো নির্মাণ হলে তিনটি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের মারাত্মক অসুবিধা হবে। ডিপো নির্মাণের বিরোধীতা করায় এলাকাবাসীর নামে চাদাঁ চাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উল্লেখিত জায়গার মালিক নুরুল আলম চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ১৭ জনের নামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার কথা উল্লেখ করা হয়। তবে এ অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলছেন এলাকাবাসী।

সোনাইছড়ি জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি দিদারুল আলম বলেন, আমাদের গ্রাম অনেক শান্ত। এখানে বেশিরভাগ মানুষ শিক্ষিত ও সমাজের ভাল-ভাল জায়গায় রয়েছে। চাদাঁবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

বিষয়টি নিয়ে জানতে স্থানীয় চেয়ারম্যান মনির আহমদ ও নুরুল আলম চৌধুরীর মোবাইলে অনেকবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছে। ইতোমধ্যে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখানে ডিপো নির্মাণের সুবিধা যেমন আছে তেমন অসুবিধাও রয়েছে। সব দিক মাথায় রেখে বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;