সীতাকুণ্ড এসিল্যান্ডের স্ট্যান্ড রিলিজ প্রত্যাহারের দাবী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের

সীতাকুণ্ড এসিল্যান্ডের স্ট্যান্ড রিলিজ প্রত্যাহারের দাবী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের

এম কে মনির।।

সম্প্রতি গুলিয়াখালী সী-বীচে অনৈতিক ও অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বিপাকে পড়েছেন সীতাকুণ্ডের ন্যায়পরায়ন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ মাহবুবুল হক। উক্ত অভিযানের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার পূর্ব মূহুর্তের একটি ছবি ভাইরাল হয়।যদিও ছবিটি চুল কাটার প্রমাণ বহন করে না। অভিযোগ উঠে এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐ ছাত্রের চুল কাটার নির্দেশ দেওয়ার। এরপর থেকে ফেসবুকে পক্ষ বিপক্ষে নানা মন্তব্য দেখা যায়। খবর প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের একটি জাতীয় পত্রিকায়ও। তবে এসিল্যান্ডের এ অভিযানকে সমর্থন করেছেন সীতাকুণ্ডের জনগণ। আর সেই সমর্থনের চিত্র ফুটে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ছাত্রের চুল কাটার বিষয়ে এসিল্যান্ড সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন গুলিয়াখালীতে অবৈধ তাবু টাঙ্গিয়ে অসামাজিক ব্যবসা করার খবর পেয়ে আমি অভিযান পরিচালনা করি।সেখান থেকে (তাবুর ভিতর থেকে) এক ছাত্রকে স্থানীয় লোকজন আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে।ক্ষুব্ধ হয়ে তারা ছেলেটির চুল কেটে দিতে চাই।আমি তাকে জনগণের হাত থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠাই এবং সতর্কবাণী দিই।মেয়েগুলোর অভিভাবকদের সাথে কথা বলে এহেন অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিই। তাবুগুলো জব্দ করি এবং সংশ্লিষ্টদের জরিমানা করি।

ঘটনার একদিন পরই এসিল্যান্ডকে স্ট্যান্ড রিলিজের আদেশ করা হয়।মূহুর্তের মধ্যে এ খবরটি ছড়িয়ে পড়ে পুরো সীতাকুণ্ডে। সরগরম হয়ে উঠে ফেসবুক।গত ৭২ ঘন্টায় সীতাকুণ্ড উপজেলায় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের শতকরা ৯০ জন এসিল্যান্ডের বদলী বাতিল চেয়ে নিজেদের টাইমলাইনে পোস্ট করেন। প্রতিটি পোস্টে বিপুল সংখ্যক মন্তব্য চোখে পড়ার মতো।

বৃহস্পতিবার রাত ৮ থেকে এসিল্যান্ডের বদলী প্রত্যাহার চেয়ে মতামত প্রকাশ করেছেন সীতাকুণ্ডের অসংখ্য সাংবাদিক, শিক্ষক, সমাজসেবক, ব্যাংকার, ব্যবসায়,ছাত্র-যুবও বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।

আজ বেলা ১১টায় এসিল্যান্ডের বদলী বাতিল ও স্বপদে বহাল চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সীতাকুণ্ড ব্ল্যাড ব্যাংক,লিও ক্লাব অব সীতাকুণ্ড, দিশারি যুব ফাউন্ডেশন, সীতাকুণ্ড যুব উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, প্রথম প্রহর ফাউন্ডেশন, স্বপীল যুব কল্যাণ সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠন।

এ বিষয়ে লিও ক্লাব অব চিটাগং জেলা জোন ডিরেক্টর লিও আরাফাত বলেন ঠুনকো ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসিল্যান্ডকে বদলী আমরা মেনে নিতে পারছি না।উনি এমন কোন কাজ করেননি যে ওনাকে বদলী করতে হবে। আমরা এটি প্রত্যাহার চাই।

দিশারি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এডভোকেট সরওয়ার হোসাইন লাভলু বলেন এসিল্যান্ডের কাজে জনগণ খুশি। কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগও করেননি।তাহলে কেন এই বদলী।এই বদলী পরিবর্তন চাই।

সীতাকুণ্ড ব্লাড ব্যাংক ও লিও ক্লাব অব চিটাগং, সীতাকুণ্ড এর সভাপতি লিও মোহাম্মদ নূর খান বলেন কেউ যদি অনৈতিক কাজ করে তাকে শাস্তি দেওয়াকে জনগণ সাপোর্ট করে।এতে এসিল্যান্ডকে বদলী করা দুঃখজনক।

এসিল্যান্ডের বদলী ও পদ অবমুক্ত বিষয়ে সামাজিক সংগঠন সীতাকুণ্ড যুব উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এর সভাপতি এম কে মনির বলেন সামান্য বিষয় নিয়ে এসিল্যান্ড অফিসারকে বদলী করা কোন মতেই মেনে নিতে পারছি না।বিষয়টির সিদ্ধান্তের জন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এসিল্যান্ড সৈয়দ মাহবুবুল হক সীতাকুণ্ডে আসার পর থেকে নানা পরিবর্তন এনেছেন। দালালমুক্ত ভূমি অফিস করেছেন।এসিল্যান্ডের দরজা সবার জন্য খোলা রেখেছেন। যেখানে একজন উচ্চ পদস্থ সরকারি অফিসারের সাথে দেখা করতে অনেক সময় লাগে সেখানে যেকেউ সহজেই এসিল্যান্ডের সাথে দেখা করতে পারতেন।আমরা এই সৎ ও আদর্শিক এসিল্যান্ডকে হারাতে চাই না।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড প্রত্যয় ফাউন্ডেশনের সভাপতি এফ এস নাইম বলেন এসিল্যান্ডের বদলী আমি সমর্থন করি না । আমাদের দাবী সীতাকুণ্ডের এসিল্যান্ড সৈয়দ মাহবুবুল হক স্বপদে এবং সীতাকুণ্ডেই থাকবে।