বাবার লাশ গ্রহণ ও দাফনে অস্বীকৃতি, সন্দ্বীপের ওমর ফারুকের শেষ যাত্রায় সঙ্গী গাউসিয়া কমিটি

বাবার  লাশ গ্রহণ ও দাফনে অস্বীকৃতি, সন্দ্বীপের ওমর ফারুকের শেষ যাত্রায় সঙ্গী গাউসিয়া কমিটি
বাবার লাশ গ্রহণ ও দাফনে অস্বীকৃতি, সন্দ্বীপের ওমর ফারুকের শেষ যাত্রায় সঙ্গী গাউসিয়া কমিটি

কর্ণফুলী সংবাদদাতা ।।

সন্দ্বীপের বাসিন্দা মো. ওমর ফারুক (৫০) জীবিকার তাগিদে স্ত্রী সন্তান নিয়ে চলে আসেন কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। বসবাস শুরু করেন ছোট্ট একটি ভাড়া বাসায়। সেখানে একটি ছোট দোকান করে সংসারের হাল ধরেন ।

সংসারের বাড়তি খরচ মেটাতে রাতে করতেন প্রহরীর চাকরিও। হাড়-খাটুনি পরিশ্রম করা উপার্জন দিয়ে দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে পড়াশুনা করিয়েছেন। কিন্তু তুচ্ছ কারণে স্ত্রীর সাথে বিবাদে জড়ালে তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে তাকে ছেড়ে চলে যায় । তাতে গেলে সে একা হয়ে পড়ে ।

এদিকে তার মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানালে তারা লাশ গ্রহণ ও দাফনে অস্বীকৃতি জানান। ফলে ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে ওমর ফারুকের লাশ দাফন করে কর্ণফুলী গাউছিয়া কমিটি।

কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর গ্রামের এক ব্যক্তির লাশ তার পরিবারের কেউ গ্রহণ করছে না জানিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাকে সংবাদ দেন। আমি গাউসিয়া কমিটি কর্ণফুলীকে লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করি। শনিবার মধ্যরাতে ভারী বর্ষণের মাঝেই গাউসিয়া কমিটি হতভাগা ফারুককে দাফনে এগিয়ে আসে। 

গাউসিয়া কমিটি কর্ণফুলী মানবিক টিমের সমন্বয়ক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, কর্ণফুলীর ওসি স্যারের ফোন কল পেয়ে আমরা হাসপাতাল থেকে লাশ এনে দাফনের উদ্যোগ নেই। কিন্তু মধ্যরাতে ভারী বর্ষণের কারণে কবরের জায়গা নিয়ে সঙ্কট দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত আমরা গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ শিকলবাহা ২নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার চৌধুরীকে ফোন করে কবরের জায়গায় ব্যবস্থার জন্য অনুরোধ করলে তিনি কবরের জায়গা ব্যবস্থা করে দেন। গভীর রাতে ভারী বৃষ্টিপাতের মধ্যেই গাউসিয়া কমিটির কবর খননকারী টিম কাজ শুরু করে দেয়। শেষ পর্যন্ত হাজি আব্দুস শুক্কুর জামে মসজিদে মরহুমের জানাজা শেষে লাশ দাফন সম্পন্ন করি।

ওমর ফারুকের পুত্র মেহেদী হাসানকে কল করা হলে এ বিষয়ে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে লাইন কেটে দেন।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;