পরিবর্তিত সূচিতে যেভাবে হবে মুজিববর্ষের উদ্বোধন

পরিবর্তিত সূচিতে যেভাবে হবে মুজিববর্ষের উদ্বোধন
পরিবর্তিত সূচিতে যেভাবে হবে মুজিববর্ষের উদ্বোধন

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়িয়ে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী আয়োজন কীভাবে হবে, তার একটি ধারণা দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিউটে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে একটা নির্দিষ্ট সময়ে, একটা বিশেষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আমরা আয়োজন করব। সেটি সকল টেলিভিশনের মাধ্যমে ও আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে ব্যবহার করে সম্প্রচারিত হবে এবং একইসঙ্গে সারা পৃথিবীতে’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য দেড় থেকে দুই ঘণ্টার টেলিভিশন অনুষ্ঠান হবে জানিয়ে কামাল চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটাকে যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেটাকে মোটামুটি একটা অবস্থায় রেখে চিন্তা করেছি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমাদের দেড় থেকে দুই ঘণ্টার একটা টিভি প্রোগ্রাম তৈরি করা হবে। সেটা পরবর্তীতে সারা বাংলাদেশে এবং সারা পৃথিবীতে সম্প্রচার হবে’।

তিনি বলেন, ‘এই প্রোগ্রামটার মধ্যে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত আছে। আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাণী দেবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা সেখানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন, তারপরে তার কবিতা পাঠ আছে’।

বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আগামী ১৭ মার্চ এক বছর ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বছরজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনে মুজিববর্ষ উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান ঠিক হয়েছিল, সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। তবে বিশ্বের প্রায় একশ দেশে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ওই আয়োজনে লাগাম টানা হয়েছে। মূল ওই অনুষ্ঠান স্থগিত করে এখন ১৭ মার্চ জনসমাগম এড়িয়ে এই কর্মসূচি সাজানো হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রচার রাতে হবে জানিয়ে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণ সেটি হচ্ছে রাত ৮ টায়। রাত ৮ টায় বঙ্গবন্ধুর যে জন্মক্ষণ সেই জন্মক্ষণে আতশবাজি ও আনন্দ আয়োজনমূলক প্রোগ্রামের মাধ্যমে উদ্যাপন করব। সে আলোকে প্রোগ্রামটা কোন সময়টাতে শুরু হবে, সেটা ঠিক করব। তবে রাতে প্রোগ্রামটা হবে। সময়টাকে এখন ডিজাইন করব’।

এক প্রশ্নে কামাল চৌধুরী বলেন, ‘এটা রেকর্ডেডও হতে পারে, আবার কিছু অংশ লাইভও হতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের টেকনিক্যাল টিম আছে, অ্যাটকো ও বাংলাদেশ টেলিভিশন আছে, তারা কাজ করছে। সাংস্কৃতিক উপ-কমিটিসহ যারা আছে সংশ্লিষ্ট আছেন, তারা কাজ করছেন’।

কামাল চৌধুরী জানান, জাতীয় শিশু দিবসে এই আয়োজনে শত শিশুর কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত ও শিশুদের কণ্ঠে অন্য সঙ্গীত পরিবেশনা থাকবে। একশজন দেশীয় শিল্পীর যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনার পাশাপাশি মুজিববর্ষের জন্য থিম সং বা উৎসব সঙ্গীত পরিবেশিত হবে অনুষ্ঠানে। উদ্বোধনী আয়োজনের অংশ হিসাবে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম, অবদান ও ত্যাগের মহিমা নিয়ে ’চিত্রপটের দৃশ্যকাব্যে বঙ্গবন্ধু’ নামে থিয়েট্রিক্যাল কোরিওগ্রাফির আয়োজন থাকবে বলে জানান কামাল চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘জীবনকর্ম নিয়ে থিয়েট্রিক্যাল কোরিওগ্রাফির মতো থাকবে। এটা একটা সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম আকারে তৈরি করা হয়েছে। সেটা শিল্পকলা একাডেমি পরিবেশন করবে। এই আয়োজনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিখ্যাত ব্রিটিশ কোরিওগ্রাফার আকরাম খানের একটা দল পারফর্ম করার কথা। তাদের রিহার্সাল চলছে এখন। আকরাম খানের যে পারফর্মেন্স সেটাও কিন্তু এখানে পরিবেশন করা হবে’।

সবার জন্য উপভোগ্য আয়োজনের পরিকল্পনা জাতীয় কমিটি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব কিছু মিলিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটাকে যাতে সবাই মিলে উপভোগ করতে পারেন, তাদের গৃহে কিংবা যেখানে থাকুন না কেন, আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াগুলো এবং টেলিভিশন ও অন্যান্য মাধ্যমে যাতে উপভোগ করতে পারেন। প্রত্যেকটা জিনিস এমনভাবে ডিজাইন করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষ ফিল করে, তারা এই বড় আয়োজনে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু আসতে পারেননি, তারা যাতে না ভাবেন- আমরা সম্পৃক্ত হতে পারলাম না’।

সব ইলেকট্রনিক মিডিয়া আয়োজনের সঙ্গে সমপৃক্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট সময়ে এটা সবাই প্রচার করবেন। এর বাইরে সোশ্যাল মিডিয়াতো আছে’।