নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পূরণে আ. লীগ নেতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ

নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পূরণে আ. লীগ নেতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন , দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পূরণে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিষয়ভিত্তিক দায়িত্ব পালনে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর যৌথসভায় যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, প্রত্যেকে যার যার বিষয়ভিত্তিক দায়িত্বটা পালন করা দরকার। নির্বাচনী ইশতেহারে যে ঘোষণাগুলো দিয়েছি, পাশাপাশি আমরা আমাদের যে পলিসি আছে, সেগুলো নিয়ে বসা, আলোচনা করা। আমরা প্রতিশ্রুতি কতটুক রক্ষা করতে পেরেছি সেই বিষয়ে আলোচনা করা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে সরকার কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথম যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, সেটি ছিল ২০১০ থেকে ২০২০- এই দশ বছর মেয়াদী। আর নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনার মেয়াদ ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত। বাংলাদেশকে আমরা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা আমাদের পার্টির প্রত্যেক নেতার দেখা উচিত এবং এখানে বিষয়ভিত্তিক যেটা আছে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা দেখে নিন কীভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। করোনার কারণে অনেক জায়গায় সম্মেলন হলেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এখন সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে। মহামারীর সঙ্কটে গত অর্থবছর দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে গেলেও দেশের অর্থনীতি ‘ভালো অবস্থানে আছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বারবার আমাদের ভোট দিয়েছি। আমরা বংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আজকে আমাদের রিজার্ভ ৩৯.৪০ বিলিয়ন ইউএস ডলার। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮.২ ভাগ টার্গেট করেছিলাম, এপ্রিল পর্যন্ত আমরা ৭.৮ অর্জন করেছিলাম, কিন্তু করোনার কারণে কমে গেছে। এরপরও অর্থনৈতিকভাবে আমরা একটা ভালো অবস্থানে আছি। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বাংলাদেশের ‘অকৃত্রিম বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করে তার আত্মার শান্তি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। সে কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘সীমিত আকারে’ জন্মদিন পালনের অনুমতি চান। প্রধানমন্ত্রী তখন বলেন, জন্মদিন পালনের দরকার নেই। আমি এমনিতেই জন্মদিন পালন করি না।

দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো হলসহ জরাজীর্ণ স্থাপনাগুলো সংস্কারে উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দেশের অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেন তিনি।

গতকাল বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের ২০তলা বিশিষ্ট ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন’ এর নকশা এবং ‘ময়মনসিংহ বিভাগীয় সদর দপ্তর স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত প্ল্যানের ভূমি ব্যবহার’ পরিকল্পনার উপস্থাপনা অবলোকন (ভার্চ্যুয়াল) অনুষ্ঠানে এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনিভার্সিটি কবে উদ্যোগ নেবে সেই আশায় বসে না থেকে আমি মনে করি আমাদের পক্ষ থেকে, এটা আমি নিজেই করতে চাই। আমাদের পুরনো যে হলগুলো রয়ে গেছে, এই হলগুলো সংস্কার করা, আরও সুন্দর করা, এখন একটা সুযোগ হলগুলো মেরামত করা। হল যেহেতু এখন বন্ধ, এসময় আমাদের কাজগুলো করে ফেলা উচিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু হলের অবস্থা এত খারাপ, এত পুরনো যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরগুলো সংস্কার করার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, পুকুরগুলো খুব খারাপ অবস্থায় আছে সেগুলো নতুন করে সংস্কার করা দরকার। পাবলিক লাইব্রেরি নতুন করে তৈরি করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পাবলিক লাইব্রেরিটাও অনেক পুরনো। অডিটোরিয়াম থেকে শুরু করে সবকিছুই জরাজীর্ণ অবস্থা। খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই।

উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। এই দেশটাকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা স্বাধীন দেশ এবং স্বাধীন জাতি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা চলতে চাই।