নতুন মাদক 'ফেনইথাইলামিন' ঘিরে রহস্য,ফিরোজ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি

নতুন মাদক 'ফেনইথাইলামিন' ঘিরে রহস্য,ফিরোজ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি
নতুন মাদক 'ফেনইথাইলামিন' ঘিরে রহস্য,ফিরোজ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

র‌্যাবের হাতে নগরীতে সম্প্রতি উদ্ধারকৃত দামি মাদক ফেনইথাইলামিন নিয়ে কৌতুহল যেন বেড়েই চলেছে। দেশে প্রথমবারের মতো জব্দ ব্যয়বহুল এই মাদকের সাথে গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের পরও তার কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই মাদকের ব্যবহারকারী কারা কিংবা চালানটি কিভাবে চট্টগ্রামে এসেছে বা কোথায় যাওয়ার কথা ছিল সেই ব্যাপারে এখনো রহস্য রয়ে গেছে।

গত ১১ আগস্ট নগরীর খুলশী থানাধীন ফয়েজ লেক এলাকা থেকে ফিরোজ খান (৩৭) নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৭৭৭ গ্রাম ফেনইথাইলামিন নামের মাদক উদ্ধার করে র‌্যাবের একটি টিম। ওই ঘটনায় খুলশী থানায় একটি মামলা হয়। র‌্যাব দাবি করেছে, ৭৭৭ গ্রাম ফেনইথাইলামিনের আনুমানিক বাজার মূল্য ১২ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। এতে প্রতি গ্রাম ফেনইথাইলামিন দাম পড়ছে দেড় লক্ষ টাকার উপরে ।

পুলিশ জানায়, ফেনইথাইলামিন উদ্ধারের পর গত ১৩ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফিরোজকে চারদিনের রিমান্ডে নেয় খুলশী থানা পুলিশ। গতকাল ফিরোজের চারদিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে।

এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন বলেন, ফিরোজকে চারদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ফিরোজ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে আজিজ নামে এক ব্যক্তি তার হাতে এই প্যাকেট ( ফেনইথাইলামিন) তুলে দিয়েছিল। সেই এতটুকুই জানত। কিন্তু প্যাকেটটি কোথায় যাওয়ার কথা ছিল সেই ব্যাপারে তাকে কিছু জানানো হয়নি। এমনকি এটা যে একটি মাদকের প্যাকেট সেটাও ফিরোজ জানে না বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে দাবি করেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, মাদকসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ফিরোজ ও পলাতক আজিজ দু’জনই ইউএসটিসি’র কর্মচারী। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুবাদে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে।

তিনি জানান, আমরা ঘটনাটি আরও অধিকতর তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পলাতক আজিজকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি । সে গ্রেপ্তার হলে মাদকের এই চালানটির সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইন শৃংখলা বাহিনীর তথ্যমতে,‘ ফেনইথাইলামিন’ একটি সিনথেটিক ড্রাগ। এ মাদকের কার্যকারিতা অ্যামফিটামিন ও কোকেনের মতোই। এটি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত একটি মাদক। ২০১৮ সালের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে এই মাদক কোনো ব্যক্তির কাছে ২৫ গ্রামের বেশি উদ্ধার হয়েছে বলে আদালতে প্রমাণিত হলে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, ফেনইথাইলামিন খুবই ব্যয়বহুল মাদকের মধ্যে একটি। যা সাধারণ মাদক সেবনকারীদের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। এটা কোকেনের চেয়েও দামি। সাধারণত শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এ মাদক গ্রহণ করা হয়। আইন শৃংখলা বাহিনীর জানা মতে, দেশে প্রথমবারের মতো নগরীর খুলশীতে এই ফেনইথাইলামিন মাদক উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।