ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সীতাকুণ্ডে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি লোকালয়ে

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সীতাকুণ্ডে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি লোকালয়ে
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সীতাকুণ্ডে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি লোকালয়ে

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে সীতাকুণ্ডে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় হাজার হাজার মানুষ।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার বাঁধের বিভিন্ন অংশ দিয়ে লোকালয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকেছে।

জোয়ারের পানিতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি, ঘোড়ামরা, সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর বগাচতর গ্রাম ও কুমিরা ইউনিয়নের কোটপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সীতাকুণ্ড কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পূর্ণিমার জোয়ারে পানির উচ্চতা অনেক বাড়ে। তার ওপর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবের কারণে পানির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত পাঁচ ফুট বেড়ে যায়। উপকূলের সাড়ে সাত মিটার উচু বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে ঢেউয়ের পানি লোকালয়ের দিকে পড়েছে। বৃহস্পতিবারও জোয়ারে পানির উচ্চতা আরও বেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঘোড়ামরা এলাকায় উপকূলে ১০০ মিটারের মতো বেড়িবাঁধ ভেঙে সেই অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে বসত বাড়িতে। জোয়ার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। সাগরের লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সালাউদ্দীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব তো শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তাঁদের দুঃখ শেষ হবে না। মাত্র ১০০ ফুট বাঁধের জন্য তাদের পুরো বর্ষায় কষ্ট করতে হবে। বেড়িবাঁধের এই ছোট অংশ বর্ষার আগে সরকারের মেরামত করে দেওয়া উচিত।

সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমেদ জানান, বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ভাঙা থাকায় জোয়ারের পানি বসত বাড়িতে প্রবেশ করেছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অতি দ্রুত বেড়িবাঁধটি সংস্কার হবে বলে তিনি আশা করেন।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট এলাকায় স্লুইসগেট মেরামতের কাজ চলছে। জোয়ারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা দেখতে সেখানে যান তিনি।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরী জানান, পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ভাঙা বাঁধ দিয়ে কুমিরার কোটপাড়া গ্রামের লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

পাউবোর সীতাকুণ্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আনিছ হায়দার খান বলেন, বদরখালী এলাকার স্লুইসগেট না থাকায় সেখানে পানি ঢুকেছে। স্লুইস গেটটি জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণের চেষ্টা করছেন তারা। এ ছাড়া ঘোড়ামরা এলাকার বেড়িবাঁধ সংস্কারের বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবেন।

লোকালয়ে পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায় বলেন, এ ব্যাপারে তাঁর কাছে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই।