কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্মম নির্যাতন শেষে মারা গেছে ভেবে জঙ্গলে ফেলে দেন গৃহকর্তা

কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্মম নির্যাতন শেষে মারা গেছে ভেবে জঙ্গলে ফেলে দেন গৃহকর্তা
কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্মম নির্যাতন শেষে মারা গেছে ভেবে জঙ্গলে ফেলে দেন গৃহকর্তা

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

শারীরিক যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন পনের বছরের নিলুফা। নির্যাতনের কারণে ঠিকমতো দাঁড়িয়ে থাকারও শক্তি নেই মেয়েটির।

চট্টগ্রামে কিশোরী গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের কারণে অজ্ঞান হয়ে গেলে, মৃত ভেবে বাড়ির দারোয়ানের সহায়তায় রাঙ্গুনিয়ার নির্জন স্থানে ফেলে দেন গৃহকর্ত্রী জেসমিন। এ ঘটনায় জেসমিন ও তার স্বামীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (৩০ মে) হামজারবাগের মোমিনবাগ আবাসিক এলাকার বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: জেসমিন আকতার সুমি ও তার স্বামী মো. সেলিম এবং দারোয়ান মো. আলী আকবর।

ওসি জাহিদুল কবির পোস্টকার্ডকে জানান, ৩ মাস ধরে মো. সেলিমের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন নিলুফার। পান থেকে চুন খসলেই এই কিশোরীর ওপর নেমে আসত নির্মম নির্যাতন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (২৭ মে) অতিরিক্ত মারধরের পর অজ্ঞান হয়ে গেলে চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে রাঙ্গুনিয়ায় দুর্গম জঙ্গলে ফেলে আসেন বাড়ির মালিক। পরে রাঙ্গুনিয়া থানার সহায়তায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একটু সুস্থ হয়ে উঠলে পুলিশের কাছে তুলে ধরে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্মম নির্যাতনের চিত্র। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় বাড়ির মালিক, ওই দম্পতি ও দারোয়ানকে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নিলুফার মা কহিনূর আকতার বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা নিলুফার পুলিশকে জানান,  কাজ শুরুর পরদিন থেকে আমাকে নির্যাতন করে তারা । খাবার খেতে দিত না। কিছু হলেই চামচ গরম করে গায়ে ছ্যাঁকা দিত। কথায় কথায় গায়ে ঢেলে দিত গরম পানি। তারা খাওয়া দাওয়া করার সময় আমাকে টয়লেটে বন্দি করে রাখত। এই তিন মাসে আমাকে এক টাকাও বেতন দেননি। কয়েকদিন আগে আমাকে বেশি মারধর করে। আমি অজ্ঞান হয়ে গেলে মরে গেছি ভেবে জঙ্গলে ফেলে দেয়। সেখান থেকে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।